অবিরাম বৃষ্টিতে, ঘুমের মধ্যে প্রাণ হারালেন ১৭ জন !
ভারত মহাসাগরে তৈরী হয়েছে নিম্নচাপ, আতঙ্কের মধ্যে সাধারণ মানুষ।

@ দেবশ্রী : আবহাওয়া শুরু করেছে তার খেয়ালিপনা। আর সেই খেয়ালিপনার জেরেই বেঘোরে প্রাণ হারায় ১৭ জন। আবহাওয়ার এইরূপ খেয়ালীপনার শিকার হয়েছে তামিলনাড়ু। টানা তিন ধরে চলছে বৃষ্টি। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। বিপর্যস্তের শিকার হয়েছে, চেন্নাই-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল গুলি। এই একই অবস্থা পুডুচেরিরও। অবিরাম বৃষ্টি পড়ার কারনে, তামিলনাড়ুতে আজ সকালে তিনটি বাড়ি ভেঙে মোট ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ১০ জন মহিলা ছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে আজ সারাদিনেও চলবে অবিরাম বৃষ্টি। বৃষ্টির ফলে কোয়েম্বত্তুর জেলায় আজ তিনটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তার জেরেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
কোয়েম্বত্তুর শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে মেট্টুপালয়মের কাছে নাদুর গ্রামে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ সকালেই শুরু করে দেন উদ্ধারকারীরা। এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা মোট ১৫টি দেহ উদ্ধার করতে পেরেছেন। যাঁরা ধ্বংস্তূপের নীচে আটকে পড়েছেন তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে এখন। ভোর পাঁচটা নাগাদ একটি কম্পাইন্ডের ২০ ফুট উঁচু দেওয়াল ওই বাড়িগুলির উপরে ভেঙে পড়ে আর তার প্রিয় ঘটে যায় এমন বড় একটি দুর্ঘটনা। সেই সময় ঘুমের মধ্যে আচ্ছন্ন ছিলেন ওই বাড়ির বাসিন্দারা। আর তার মধ্যেই ঘটে যায় মৃত্যু।
দুর্ঘটনা ঘটায়, বিকট শব্দ পেয়েই প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে। উদ্ধার হওয়া ১৫ জনের নাম, পরিচয় ও বয়স জানা গেছে। টানা বৃষ্টিতে তামিলনাড়ু ও পুডুচেরির জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টির পরে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই দুই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। চেন্নাই, তুতিকোরিন, তিরুভাল্লুর ও কাঞ্চিপুরমে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শহরগুলির রাস্তাঘাট এই মুহূর্তে জলমগ্ন। কন্যাকুমারিকার কাছে ভারত মহাসাগরের উপরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ায় উপকূলবর্তী তামিলনাড়ুতে টানা বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির কারণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতে কাউকে আতঙ্কিত না হতে বলেছে তামিলনাড়ু সরকার। তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে। শুধু চেন্নাইতেই ১৭৬টি ত্রাণশিবির খুলেছে। চেন্নাই পুরনিগম জানিয়েছে, কোনও জায়গায় মানুষের আটকে পড়ার খবর পেলেই যাতে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করা যায়, সে জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌকা। জল সররানোর কাজে ৬৩০টি পাম্প একসঙ্গে কাজ করছে। গাছ সরানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬টি যন্ত্র। ইতিমধ্যে তিনটি হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে চেন্নাই পুরনিগম।
পুডুচেরির উপরাজ্যপাল কিরণ বেদী পরিদর্শন করেছেন রাজ্যের দুর্গত এলাকাগুলি। তিনি ঘুরে দেখেছেন রেনবো নগর, কৃষ্ণনগর, ইন্দিরা গান্ধী স্কোয়্যার ও নাতেসান নগর। তাঁর সঙ্গে ছিল সরকারি আধিকারিকরা। পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে নেওয়া হচ্ছে যথাসম্ভব প্রস্তুতি।