
তিয়াসা মিত্র : গত বছরের শেষ থেকে বেড়েছে করোনা। তার নেপথ্যে রয়েছে ডিসেম্বর-এর উৎসব মুখর বাংলা। পার্কস্ট্রিট-এর ঐতিহাসিক ভিড়, পর্যটন কেন্দ্র গুলি, ভিক্টোরিয়া , চিড়িয়াখানা , দিঘা , শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা সাথে পৌরসভা ভোট এবং তার প্রচার, জনসভা কোনটি ছেড়ে কোনটি ধরি? আবার সাথে ঘোষণা হয়ে গঙ্গা সাগর মেলা। মানে এতো সেই “একে রামে হয়ে না সুগ্রীবে দোসর” সমস্ত কিছু মধ্যে দিয়ে কলকাতা তথা গোটা পশ্চিমবাংলাতে করোনা হয়েছে বেলাগাম। সমস্ত ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মূল কান্ডারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তবে তার সাথে তিনি ঘোষণা করেন কোরোনার নতুন বিধি নিষেধ। কিন্তু এই সব কিছুর পর কেন অর্ধেক মানুষ অবমাননা করছে এই বিধিনিষেধ? তবে কি প্রশাসন আরো শক্ত হয়ে উচিত ? এই নিয়ে বিরোধী দলের হেভিওয়েট মন্ত্রীরা জবাব দিয়েছেন বহুবার।
গতকাল ডায়মন্ড এলাকাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার করোনা অবস্থা শোচনীয় দেখে তৃণমূল কংগ্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী গণমাধ্যম সামনে একটি বক্তব্য রাখেন তবে, এই বক্তব্য শুনে সত্যি স্তম্ভিত রাজনৈতিক মহলের সবাই। তিনি বলেন- “আগামি দু মাস সমস্ত ধর্মীয় জমায়েত , সামাজিক জমায়েত , রাজনৈতিক জমায়েত বন্ধ করে দেওয়া উচিত এই। এই অবস্থাতে শুধু একটি লক্ষ্য হয়ে উচিত মানুষের জীবন বাঁচানো। বেঁচে থাকলে অনেক অনুষ্ঠান, জমায়েত করা যাবে।” একই দলের দুই মুখ্য নেতা এবং নেত্রীর ভিন্ন বিপরীত বক্তব্যে স্তম্ভিত রাজনৈনিত সাম্রাজ্য।
এর সাথেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে যা জানাচ্ছে তা হলো – এই পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত মুখ্য নেত্রীর। তিনি হয়তো চান সাধারণ মানুষের কাছে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে নির্ভরশীল দন্ড বানাতে। তবে , অভিষেক ব্যানার্জী বলেছেন এটি তার নিজস্ব মতামত। তাহলে একই দলের হয়ে মমতা ব্যানার্জী এবং অভিষেকের এই ভিন্ন মতামতের মানে কি দাড়ায় সমাজের সামনে ? এই নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বচসা এবং বহু সমালোচনা। এই ভাবনা গভীর ভাবে তলিয়ে বিচার করলে এর পেছনে রয়েছে একটি মাত্র উদ্দেশ- মানুষের কাছে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের একটি আলাদা পরিচয়ে তৈরী করা । তবে এই বিষয়কে নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র শুভেন্দু শেখর রায় বলেন -” এই বক্তব্য দলের বক্তব্য ” তাহলে এর মানে একই পথে দুই ভিন্ন দিক ? যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন খেলা ,মেলা , উৎসব সবই হবে আবার অন্যদিকে অভিষেক ব্যানার্জী বলছেন সব ২ মাসের জন্য বন্ধ করা উচিত ? পরবতী পর্যায়ে শুভেন্দু শেখর রায় বলেন এই উক্তিটি অভিষেক ব্যানার্জীর একান্ত ব্যক্তিগত মতামত।
এই অধরা ঘটনা বা পরিকল্পনা সত্যি ভাববার মতন বিষয়ে মানুষের কাছে। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আমার বক্তব্য অবিলম্বে এই অনুষ্ঠান বিষয়টি বন্ধ হয়ে উচিত আবার একজন সাংবাদিক হিসেবে নিজের বক্তব্য এর পিছনে যে স্বরচিত পরিকল্পনা রয়েছে তা সত্যি অভাবনীয়।