আইআইটি-তে আত্মহত্যার সংখ্যা ২৭ জন পড়ুয়া, নেই কোনো সদুত্তর।
বাড়ছে আত্মহত্যার সংখ্যা, কিন্তু তাও পদক্ষেপ নিচ্ছে না আইআইটি কর্তৃপক্ষ।
@ দেবশ্রী : আত্মঘাতী হচ্ছে পড়ুয়ারা। দেশের ১০টি ইন্ডিয়ান ইনস্টিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি)-এর ২৭ জন পড়ুয়া গত পাঁচ বছরে আত্মঘাতী হয়েছে। এমনই একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তথ্য জানার অধিকারে। মানব সম্পদ ও বিকাশ মন্ত্রকের অন্তর্ভুক্ত উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে স্পষ্টতই দেখা গেছে, ওই সময়ে আইআইটি মাদ্রাসে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আত্মহত্যার সংখ্যা সাত।
গত ২ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন তথ্য জানার অধিকার কর্মী চন্দ্রশেখর গৌর। মানব সম্পদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে আইআইটি মাদ্রাসের সাতজন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার এই তালিকায় আইআইটি মাদ্রাসাই শীর্ষে রয়েছে। এরপর আইআইটি খড়গপুর, যেখানে পাঁচজন ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছেন। আইআইটি দিল্লি ও হায়দরাবাদে তিনজন করে পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা গেছে রিপোর্টের মাধ্যমে।
এছাড়াও ২ জন করে পড়ুয়া আইআইটি বম্বে, গুয়াহাটি ও রুরকিতে এই সময়ের মধ্যে আত্মহত্যা করেছেন। আইআইটি বারাণসী, ধানবাদ (ইন্ডিয়ান স্কুল অফ মাইনস) ও কানপুরে একজন করে পড়ুয়া এ ধরনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তবে এই ২৭ জন পড়ুয়া কেন আত্মঘাতী হয়েছেন সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো সদুত্তর কিছু পাওয়া যায়নি। আর না হয়েছে তেমন কোনো রকম তদন্ত।
দেশের প্রধান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রোধ করতে কি কোনো রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তরে মানব সম্পদ মন্ত্রক বলেন, ‘আইআইটির পদ্ধতিগত বিষয়গুলিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং ছাত্রদের নালিশ জানানোর সেল, শৃঙ্খলা অ্যাকশন কমিটি, কাউন্সেলিং সেন্টার সহ আইআইটি ক্যাম্পাস থেকে পাওয়া অভিযোগগুলির সম্পূর্ণ তদন্ত করা হবে।’
‘সুপার ৩০’-এর প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ কুমার, যিনি পাটনার একটি কোচিংয়ে দরিদ্র পরিবার থেকে আসা পড়ুয়াদের আইআইটি প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করার তিনি এই আত্মহত্যাগুলি নিয়ে উদ্বেগ নিজের প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে আইআইটির যে বাছাই পদ্ধতি রয়েছে তা পরিবর্তন করা দরকার। এই পদ্ধতিতে উদ্ভাবনী দক্ষতা যাদের মধ্যে রয়েছে এবং যে সব পড়ুয়া জীবনের সব ধরনের চাপ নিতে পারে তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি মনে করেন যে আইআইটিতে শিক্ষকের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে দেওয়া দরকার, যাতে প্রতিটা পড়ুয়া সমান মনোযোগ পেতে পারে। এমন অনেক পড়ুয়ারা রয়েছে যারা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে আসেনি, তাদের জন্য বিশেষ ইংলিশ ক্লাস চালু করা দরকার আইআইটিতে। তাতে পড়ুয়াদেরই পড়াশোনা করতে সুবিধা হবে বেল জানান আনন্দ কুমার। বর্তমানে দেশে ২৩টি আইআইটি রয়েছে। তথ্য জানার অধিকারে জানানো হয়েছে, গত পাঁচ বছরে ইন্দোর, পাটনা, যোধপুর, ভুবনেশ্বর, গান্ধীনগর, রোপার, মাণ্ডি, তিরুপতি, পল্লাকাদ, ভিলাই, জম্মু, গোয়া এবম ধারোয়াদ আইআইটিতে কোনও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি। তবে আর যাতে এই রকম কোনো দুর্ঘটনা ঘটে সেই বিষয়ের দিকেই দেওয়া হচ্ছে নজর।