Industry & Tread

আজ চাকরি আছে, কাল নেই। কোনো কিছুই আর স্থায়ী নয়।

নতুন শ্রম বিধি আইন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার, বিপ্লবের ডাক দিচ্ছে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি।

@ দেবশ্রী : একেই চাকরির অভাব, আর তার মধ্যে যদি স্থায়ী চাকরির সংখ্যাও খুব কম। কিন্তু আগামী দিন গুলো থেকে, স্থায়ী চাকরি বলে, আর কিছুই থাকবে না। এমনই শ্রম বিধি আইন পাশ করতে চলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, সম্প্রতি হওয়া কেন্দীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘লেবার কোড অন ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিলেশনস ২০১৯’ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই নতুন শ্রম বিধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে, চুক্তিভিত্তিক চাকরির উপর। যে কোন সংস্থা যাতে, কোনও সময়সীমার জন্য চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করতে পারেন, তারই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাকাপাকিভাবে তুলে দেওয়া হচ্ছে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা। এর ফলে এবারে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি চাকরি দেবে।

কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ৪৪টি পুরনো শ্রম বিধির বদলে চারটি নতুন নীতি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্ট ১৯২৬, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অ্যাক্ট ১৯৪৬ ও ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ডিসপুট অ্যাক্ট পরিবর্তন করার বিষয়েও কথা চলছে। কেন্দ্রের তরফে নতুন শ্রম বিধির বিষয়ে একটি খসড়াও তৈরি করা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।

গত বছর শিল্প সম্পর্কিত একটি শ্রম বিধি বিলের খসড়া প্রকাশ করে কেন্দ্র। তারপরে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি এর বিরোধিতা করে। তার পরেও এই অধিবেশনে এই বিল সংসদে পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিলের মূল বিষয়টি হল, সারা দেশে স্থায়ী চাকরি পরিবর্তে চুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেয়াদের নিয়োগের ব্যবস্থা চালু করা। যার মেয়াদ মাত্র তিন থেকে ছমাসও হতে পারে। অর্থাৎ নিশ্চিতি নেই কারোর চাকরিতেই।

এতদিন সরকারি ও বেসরকারি সবক্ষেত্রেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হত ঠিকাদারের মাধ্যমে। কিন্তু, নতুন শ্রম বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারের পরিবর্তে সংস্থা সরাসরি নির্দিষ্ট মেয়াদের চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ করতে পারবে এমনি নিয়ম করা হচ্ছে। তবে তিনমাস বা ছমাসের জন্য নিয়োগ হলেও ওই সময়ে প্রাপ্য অনুযায়ী সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হবে কর্মীদের। তবে তাঁদের সহজে ছাঁটাই করার সুবিধাও দেওয়া হয়েছে এই বিলে। যে কোন মুহূর্তেই যেতে পারে চাকরি।

বর্তমান আইনে ১০০ কর্মী থাকলেই যেকোনও শিল্পে ছাঁটাই করার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু নতুন বিধিতে সেই শর্তের বিষয়টি শিথিল করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রায় সমস্ত শ্রমিক সংগঠনই। এর ফলে দেশের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রভাব খুব একটা ভালো পড়বে না বলে মনে করছে তারা। এর ফলে সরকারি চাকরিতে যদি স্থায়িত্ব না থাকে তাহলে দেশে চূড়ান্ত অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তাঁরা। তাই এই বিধি সংসদে পাশ হলে তারা দেশব্যাপী আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি জানিয়ে দিয়েছে।

ইতিমধ্যেই মানুষের মাথায় হাত পড়েছে, এই স্থায়ী ও অস্থায়ী চাকরির দ্বন্ধে।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Back to top button
%d bloggers like this: