আন্দোলনের কারনে, পরীক্ষা না দিলে পরে আর দেওয়া যাবে না পরীক্ষা, এমনটাই জানাল জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হোস্টেলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে চলছিল আন্দোলন এরই মধ্যে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে পরীক্ষা বাতিলের দাবি পড়ুয়াদের।

@ দেবশ্রী : গত মাস ধরেই জেএনইউ তে চলছে আন্দোলন। ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ছাত্রদের এই আন্দোলন। তবে এবারে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিল এক নতুন বার্তা। সেখানে বলা হয়, যে সব পড়ুয়ারা হস্টেলের ফি-বৃদ্ধির প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় পরীক্ষা দিতে আসবে না, তাদেরকে আর বসতে দেওয়া হবে না পরীক্ষাতে। যখন এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল প্রথমে কর্তৃপক্ষ তা মেনে নেয়নি, পরে চাপের মুখে পড়ে অবশ্য হস্টেল ফি কিছুটা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা জোরালো করে বিক্ষোভ।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়েছে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু এখনও কোনো রকম সমাধান বেরোয়নি। এই অবস্থায় বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। আন্দোলন করতে গিয়ে পড়াশোনার দিকে কোনও খামতি থাকলে আগামী সেমিস্টারের জন্য পড়ুয়াদের রেজিস্টার করতে দেওয়া হবে না।
কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পড়ুয়াকেই পরীক্ষা দিতে বাধা দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এই অবস্থায় অনন্ত সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁদের। এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের জন্য সুষ্ঠু পরীক্ষার ব্যবস্থা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। পরীক্ষার নির্ঘণ্ট তৈরি করে তা ওয়েবসাইটে দিয়েও দেওয়া হবে। কিন্তু কেউ পরীক্ষা না দিলে তাঁর জন্য বারবার সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।’
এর মধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তোলপাড়ের জেরে সেমিস্টার বয়কট করার ডাক দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্র বিক্ষোভের আঁচ এতটাই বেড়েছে যে বিশ্ব বিদ্যালয়ে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে পঠনপাঠন। এমন পরিস্থিতিতে দিন তিনেক আগে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, পরীক্ষা নেওয়া হবে হোয়াটসঅ্যাপে অথবা ইমেলে। বলা হয়, এমফিল, পিএইচডি এবং এমএ-র ফাইনাল সেমিস্টার যাঁরা দেবেন তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হবে হোয়াটসঅ্যাপে অথবা ইমেলে। প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ছাত্রছাত্রীদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন তাঁদের অধ্যাপক, অধ্যাপিকারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার কথা বলেছেন জেএনইউ শিক্ষক সংগঠন (জেএনইউটিএ) ও ছাত্র সংগঠনের (জেএনইউএসইউ) সদস্যরা। অর্থাৎ এই মুহূর্তে জেএনইউ ছাত্রদের ভবিষ্যৎ দ্বন্দ্বের মুখে।