Women

‘‘আমার ছেলে দোষী হলে তাকেও পুড়িয়ে মারা উচিত’’- বললেন অভিযুক্তের মা।

দিন যাচ্ছে গড়িয়ে, কিন্তু এখনও নেওয়া হচ্ছে না পদক্ষেপ। সংবিধান এর উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন অনেকেই।

@ দেবশ্রী : হায়দরাবাদের কান্ড আমাদের সবার সবাইকে ভয়ে শিহরিত করেছে। কেউ এতো পিশাচ হতে পারে কিভাবে সেই উত্তর নেই কারোর কাছে। এই মুহূর্তে গোটা দেশ উত্তাল। সবাই চায় চার অভিযুক্তের মৃত্যুদন্ড দেওয়া হোক। এই ঘটনায় এবার মুখ খুলেছে, এক অভিযুক্তের মা, তিনিজানিয়েছে, ছেলে যদি দোষী হয়, তাহে তাকেও পুড়িয়ে মারা উচিত। ঘটনায় এবার মুখ খুলেছেন, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তিনি জানিয়েছেন, ফাস্ট ট্র্যাক আদালতেই ওই মামলার বিচার হবে।

ঘটনায় নিহত তরুণীর মা প্রথমেই বলেছিলেন, ওই হত্যাকারীদের পুড়িয়ে মারা উচিত। তবে আজ একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এক অভিযুক্তের মাকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘আমার ছেলে দোষী হলে তাকেও পুড়িয়ে মারা উচিত। নিহত তরুণীও তো কারও মেয়ে। এখন আমি কষ্ট পাচ্ছি। বুঝতে পারছি, ওই তরুণীর মা কতটা কষ্ট পাচ্ছেন।’’ তবে তিনি কোন অভিযুক্তের মা, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

অন্য এক অভিযুক্ত চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলুর মা-ও বলেছেন, ‘‘ওকে উপযুক্ত শাস্তি দিন। আমারও মেয়ে আছে।’’ আর এক অভিযুক্ত জল্লু শিবার মা বলেছেন, ‘‘যা করা প্রয়োজন বলে মনে হয়, তা-ই করুন। ঈশ্বর জানেন কী হবে।’’ পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চার অভিযুক্তের মধ্যে দু’জন পেশায় ট্রাকচালক। বাকি দু’জন খালাসি। তবে চেন্নাকেশভুলুর মা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে অসুস্থ। তাই ছ’মাস ধরে সে বিশেষ কাজকর্ম করছে না। তার আর এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘ও গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে আমরা মুখ দেখাতে পারছি না।’’

ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভের জেরে গত কাল পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল আন্দোলনকারীদের। ক্ষোভ কমেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের। শামশাবাদের যে কলোনিতে নিহত তরুণী থাকতেন, সেখানকার মূল ফটকে তালা দিয়ে দেন বাসিন্দারা। রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে না-দেওয়ার সমর্থনে অনেক প্ল্যাকার্ডও দেখা যায়। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক জে রঙ্গা রেড্ডি ও তাঁর সমর্থকেরা কলোনিতে ঢুকতে না-পেরে মূল ফটকের বাইরে ধর্নায় বসে পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন। পরে অবশ্য তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সাংসদ এ রেবন্ত রেড্ডি।

ওই কলোনির এক বাসিন্দা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও পর্যন্ত কোন টুইট করলেন না কেন?’’ এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটি এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে দ্রুত বিচার হবে।’’ তরুণীর বোন অভিযোগ করেন, এই ঘটনাটি ঘটার পরে, থানায় তাকে বেশ সময় ধরে ঘোরানো হয়েছিল অভিযোগ নেওয়া নিয়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ তার কর্তব্যে অবহেলা করেছে। প্রতিটি থানা এখন থেকে যাতে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ নেয় তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন এফআইআর করারও আগে ওই তরুণীর পরিবারকে সাহায্য করা উচিত ছিলপুলিশ কর্তৃপক্ষের।’’

ঘটনায় এফআইআর নিতে দেরি করায় ইতিমধ্যে তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এখন জেল হেফাজতে রয়েছে চার অভিযুক্ত। তবে তাদের পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানাতে চায় পুলিশ। এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে জেলেই তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা যেতে পারে। এরই মধ্যে‌ সংবাদমাধ্যমের একাংশে প্রকাশিত হয়েছে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার আরও বিবরণ। পুলিশের ‘রিমান্ড রিপোর্ট’কে উদ্ধৃত করে তারা জানিয়েছে, ধর্ষণের আগে তরুণীর মুখ বন্ধ করে তাঁর গলায় জোর করে হুইস্কি ঢেলে দিয়েছিল অভিযুক্তেরা। ঘটনার আগে অভিযুক্তেরাও হুইস্কি খেয়েছিল।

অভিযুক্তদের পক্ষে তাদের কোনও সদস্য সওয়াল করবেন না বলে জানিয়েছে রঙ্গা রেড্ডি জেলার বার অ্যাসোসিয়েশন। তবে আদালত, জেলার ‘লিগ্যাল এড সার্ভিস’-এর মাধ্যমে কোনও আইনজীবীকে অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করার নির্দেশও দিতে পারে। এবং সেই ক্ষেত্রে ওই নির্দেশ তারা অমান্য করতে পারবে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় বার অ্যাসোসিয়েশন। এখন দেখার বিষয় আদালত কি সির্ধান্ত দেয়।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Back to top button
%d bloggers like this: