এটিএম থেকে গায়েব হচ্ছে টাকা, নজরদারিতে তদন্ত টিম।
কোনো কিছু না করেই, উধাও হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার টাকা। চিন্তায় এবার মাথায় হাত !

@ দেবশ্রী : শহরের মানুষ রয়েছেন আতঙ্কের মধ্যে। এটিএম থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে টাকা। গত দু’দিনেই উঠে এসেছে বহু অভিযোগ। এমন ঘটনা ঘটার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছিল তদন্ত। এবারে কলকাতায় এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কীভাবে জালিয়াতি হচ্ছে? কারা করছে? এটিএম জালিয়াতির কৌশল নিয়ে গোয়েন্দাদের অনুমান, এবার অত্যাধুনিক স্কিমিং মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। যা দিয়ে একদিকে কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের ট্র্যাক ১ ও ট্র্যাক ২-এর তথ্য কপি হয়ে যাচ্ছে। আর তার সাথেই কপি হয়ে যাচ্ছে তাদের চিপের তথ্যও। আর সেই ভাবেই হয়ত হচ্ছে এই ভয়ঙ্কর রকমের চুরি।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন তাদের মতে, এই স্কিমিং ডিভাইসটি-ই সম্ভবত যুক্ত থাকছে একটি ক্যামেরার সঙ্গে। আর সেই ক্যামেরা রাখা থাকছে এটিএম মেশিনের কিপ্যাডের উপরেই। এরফলে কেউ ওই মেশিন থেকে টাকা তোলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কার্ডের পিন ও তথ্য তত্ক্ষণাত্ চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। সেই তথ্য দিয়েই তৈরি হচ্ছে নকল কার্ড। আর সেই নকল কার্ড ব্যবহার করেই পরক্ষণেই টাকা তুলে নিচ্ছে হ্যাকারদের দল। এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছেন এখন তদন্তকারী অফিসারেরা।
এই এটিএম কাণ্ডের তদন্ত প্রথমে করছিলেন যাদবপুর থানার পুলিশ তবে এখন সেই তদন্তভার যাদবপুর থানা থেকে হাতে নিয়েছে লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগ। এটিএম কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। ব্যাঙ্ক ফ্রড ও সাইবার শাখার অফিসারদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই গোয়েন্দা টিম। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদেরও।
লালবাজার সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিসের একটি দল দিল্লি গিয়েছে। দিল্লি পুলিশের সাহায্যে বেশ কয়েকটি এটিএম-এ হানা দিয়েছে তারা। একইসঙ্গে রোমানিয়ান গ্যাং-দের সম্ভাব্য ডেরাতেও হানা দিয়েছেন এই তদন্তকারী অফিসাররা। এটিএম জালিয়াতির পিছনে রোমানিয়ান গ্যাংয়ের হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, নতুন কোনও চক্রের হাত থাকার সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। এই মুহূর্তে তাঁদের এটাই ভাবনা যত দ্রুত সম্ভব এই জালিয়াতি বন্ধ করা। আতঙ্কিত রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এই এটিএম জালিয়াতি নিয়ে শনিবার থেকে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে যাদবপুর থানায়। রবিবার মোট ১৪টি এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ জমা পড়ে। সোমবার অন্তত ১০ থানায় এসেছেন অভিযোগ জানাতে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, দিল্লির এটিএম থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে তাদের অ্যাকাউন্টের হাজার হাজার টাকা। যাদবপুর থানা ছাড়াও কড়েয়া থানা এলাকাতেও এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ আসে। জালিয়ারতির খবর সামনে আসতেই তৎক্ষণাৎ নড়চড়ে বসে কলকাতা পুলিশ।
বাইক পেট্রোলিং মাধ্যমে শহরের এটিএম কাউন্টারগুলিতে নিয়মিত বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই প্রত্যেক থানাকে নির্দেশ পাঠিয়েছে লালবাজার। যতটা সম্ভব এই মুহূর্তে, নজরদারি চালাচ্ছেন তদন্ত বিভাগ। তবে এটিএম থেকে টাকা তোলার কথা উঠলে ভয়ে আঁতকে উঠছেন মানুষ।