কলকাতার রাস্তায় সাত সকালে নিঃস্বাস নেওয়া দুরহ : দুর্গন্ধে বমি হবার জোগাড় !
টালিগঞ্জ থেকে আনোয়ার শাহ রোড হয়ে যাদপুর হয়ে সায়েন্স সিটি পর্যন্ত সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত শহর কে জঞ্জাল মুক্ত করার নামে দুর্গন্ধ ময় রাস্তা উপহার পাচ্ছেন কলকাতা কর্পোরেশনের কাছ থেকে। জীবন বিভিশিখা ময়।
নগর কীর্তন : এক দিকে স্বচ্ছ ভারত অন্য দিকে অন্য্ দিকে ক্লিন কলকাতা , এই দুইয়ের যাঁতাকলে মানুষ বড় নাজেহাল। বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ করে করে সময় সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১১ টা। এর পর সেই আবর্জনা চলে যায় ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট জায়গায়। সমস্যা টা হল শুরু এখান থেকে, আগের দিনের পাহাড় প্রমান জমা আবর্জনা সংগ্রহ করে পরের দিন সকাল ঠিক ৭ টা থেকে বেলা ১০ টা পর্যন্ত পেল্লাই বড় লরি, সেগুলোকে নিয়ে যায় রাস্তার একটা দিক আটকে। শোনা যায় বেশ কিছু কোটের নির্দেশের পর এই লরি গুলো প্লাস্টিক ঢাকা দেওয়া হয় । ফলে সব রাস্তাতো আর ৬০ ফুট চওড়া নয় , অধিকাংশই রাস্তা ২০ থেকে ৩০ ফুটের মধ্যে। এর ফলে আন্দাজ করা যায় কি ভয়ানক অবস্থার সম্মুখীন কলকাতা বাসী ।
সাত সকালে স্নান খাওয়া সেরে ৩ থেকে ৮০ সবাই নাভিশ্বাস তুলে নিত্যদিনের জীবন যুদ্ধে। আর এমন সময় আপনি বাসে কিংবা অটোতে অথবা নিজের গাড়িতে আর নিদেন পক্ষে পায়ে হেটে গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছেন , আর সেই সময় পাশেই রাস্তা জুড়ে ক্লিন কলকাতার স্বপথে ময়লার গাড়ি দাঁড় করিয়ে ময়লা তুলছে কলকাতা কর্পোরেশন। সেই আবর্জনার গুণগত মানও বেশ , বাড়ির আবর্জনা ২৪ ঘন্টা পর বাড়ি থেকে বিদায় হয়ে জমা পড়লো আবর্জনা খানায় , আবার সেখানেও ২৪ ঘন্টা পর সেটা রওয়না দেবে ধাপের উদ্দেশ্যে। এর ফলে সেই আবর্জনা ২৪+২৪ =৪৮ ঘন্টায় একদম স্বমহিমায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে। আপনার বাড়ির দামি সুগন্ধিও হার মানবেই মানবে।
এতো গেল একপ্রকার, আসল ঘটনা হল এই আবর্জনা তো আপনার পাড়া বা অঞ্চল থেকে স্বমহিমায় বেরিয়ে পড়লো। কিন্তু তারপর , আর এই জঞ্জাল ময় বড় লরি সবক্ষত্রেই অতিরিক্ত ময়লা তুলে নিয়ে যায় কারণ কলকাতা পুলিশ সেগুলোর ধরে কাছে যায় না। কেমন যেন সু সম্পৰ্ক আছে পুলিশ আর কেএমসির মধ্যে নিন্দুকেরা বলে। আর অতিরিক্ত ময়লার চাপে ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে ৫৫ ঘন্টা ছুঁই ছুঁই সেই ময়লার গাড়ি আরো যেন মানগত স্বমহিমা ধারণ করেছে। জঞ্জালের গাড়িথেকে অঝোর ধারায় বেরিয়ে আসছে নোংরা জল অর্থাৎ পচন দায়ী জিনিস গুলির পচনের শেষ পর্যায়ে , যা রাস্তা ময় সমান্তরাল রেখার সৃষ্টি করছে। আর কয়েক লক্ষ নিত্য যাত্রী গন্তব্যে যাবার আগে দুর্গন্ধের শিকার হচ্ছে।
টালিগঞ্জ থেকে যখন গাড়ি গুলি যায় তখন অপরদিকে হাসপালে অসংখ্য রুগীরদের উপচিয়ে পড়া ভিড়। আর সেই সাথে জীবন সংশয়নিয়ে শুয়ে আছে কয়েক শো মানুষ। একটু এগিয়ে আনোয়ার শাহ রোড একদিকে যোগেশ চন্দ্র কলেজ , তারথেকে এগিয়ে গেলে রামমোহন স্কুল , যেখানে আছে কয়েকশো আগামীর ভবিষৎ। ওপর দিকে পাঁচ তারা মার্কা সাউথ সিটি মল আর সব মিলিয়ে রাস্তার দুই ধরে অগুনতি অফিস বাড়ি থেকে খাবারের দোকান। এভাবেই এগিযে যায় গাড়ি , যাদবপুর থানা পার হয়ে অভিষিক্তার মোড়ের বা দিকে ঘুরে বাইপাস দিয়ে রুবির মোর পার হয়ে সায়েন্স সিটি দিয়ে ধাপার দিকে গাড়ি ঢুকে যায়। এখানেও শহরের নামকরা হোটেল হাসপাতাল , আবাসন , রেস্তোরা আর সঙ্গে রয়েছে ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার, আর উপহারের শরিক সকলেই আমরা ।
ওপিনিয়ন টাইমস এর এক বর্ণ নিজেরা রচনা করেনি , বিতর্ক করুন আমাদের সাথে। চলুন এক সাথে দেখি গিয়ে । আর এই দুর্ভোগের শিকার সকলেই যারা এই রাস্তা পেরিয়ে গন্তব্যের দিকে যান।শুধু যে তারই ভুক্তভুগি নন , এখান থেকে যে সকল গাড়ি বা মানুষ যান না কেন তারাই এই দুর্গন্ধের মধ্যে থাকা অসুখ বিসুখ সমগ্র কলকাতা ও তার পার্শ বর্তী অঞ্চলে বহন করছেন। পরিবর্তন হউক এই অবস্থার , কর্তৃপক্ষ নজর দিন।