দুর্গাপুজোর অন্যতম রীতি কুমারী পুজো, জেনে নিন সেই পুজোর মহিমা
আজ মহাষ্টমীর পূর্ণ তিথিতে কুমারী পুজো হয়ে থাকে।

তানিয়া চক্রবর্তী : দুর্গাপুজোর অন্যতম রীতি কুমারী পুজো। অষ্টমী তিথিতে এই পুজো হয়ে থাকে। ঋতুমতী না হওয়া মেয়েকে এই দিন দেবী রূপে পুজো করা হয়। মহাষ্টমী ছাড়াও অনেক জায়গায় মহানবমীর দিনও কুমারী পুজো হয়ে থাকে। এছাড়া কালী পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, অন্নপূর্ণা পুজো এমনকী শক্তি পুজোতেও করা হয় কুমারী পুজো৷
যোগিনীতন্ত্র, কুলরনবতন্ত্র, দেবীপূরাণ, স্তোত্র, কবচ, সহশ্রমণ, তন্ত্রসর, প্রান্তসিনী ও পুরোহিতদর্পণে কুমারী পজোর উল্লেখ থাকলেও এই পুজোর মহিমা সম্পর্কে দ্বিমত রয়েছে। তবুও স্বাচ্ছন্দে চলছে এই পুজো। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, মা কালীর হাতে কলাসুর বধের প্রতীকী হল কুমারী পুজো৷ কথিত আছে, কলাসুর স্বর্গ এবং মর্ত অধিকার করে নিয়েছিল। সেই মুহূর্তে দেবতারা উদ্ধারের জন্য মা কালীর শরণাপণ্য হন। তাঁদের ডাকে মা সারা দেন এবং শিশুকন্যা রূপে জন্ম নিয়ে কলাসুরকে বধ করেন।
এই পুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল কুমারীকে দেবীরূপে পুজো করার আগে তার ধর্ম বিচার করা হয় না। ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী যেকোনো ধর্মের মেয়েই হতে পারে কুমারী। এমনকি, বারবণিতার সন্তানও কুমারী রূপে পূজিতা হতে পারে। মেয়ের বয়স অনুযায়ী তার নামকরণ করা হয়। এক বছরের মেয়ে ‘সন্ধ্যা’, সাত বছরের মেয়ে ‘মালিনী’, বারো বছরের কন্যা ‘ভৈরবী’ এবং ষোলে বছরের মেয়েক ‘অম্বিকা’ নামে অভিহিত করা হয়।
মানুষ বিশ্বাস করে কুমারী পুজো করলে সব বিপদ কেটে যায়। দার্শনিক মতে, কুমারী পুজো সমাজে মেয়েদের উচ্চতর স্থান প্রতিষ্ঠা করে। কুমারীত্বকে মনে করা হয় শক্তির বীজ, সৃষ্টি, স্থিতি, লয়ের প্রতীক৷ কুমারীত্ব হল নারীত্ব ও প্রকৃতির প্রতীক। বিশ্বাস করা হয় কুমারীর মধ্যেই মা বিরাজমান।