পরীক্ষায় বসতে হলে লাগবে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট ! স্কুলের এরূপ সিদ্ধান্তে তুমুল সমালোচনার ঝড়
কলকাতার একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তরফ থেকে জানানো হয়, নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া পরীক্ষা অসম্ভব
পল্লবী কুন্ডু : করোনা সংক্রমণের এক বিপুল প্রভাব যে শিক্ষাক্ষেত্রে পড়েছে তা সকলের কাছেই স্পষ্ট। বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক পরীক্ষা। বন্ধ ছিল আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষাও। সম্প্রতি বাকি থাকা সেই পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে বোর্ড । আর তারপরেই এই পরীক্ষায় বসতে গেলে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতার একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। আর তার পরেই এই বিষয় ঘিরে শুরু হয় নানান জল্পনা-কোল্পনা। কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশনস জানিয়েছে, ছাত্র – ছাত্রীরা চাইলে বর্তমানে যে শহরে রয়েছেন, সেখানে বসেই আইসিএসই ও আইএসসি – র বাকি পরীক্ষা দিতে পারে। আর নইলে পরে কম্পার্টমেন্টাল টেস্টের সময়েও এই পরীক্ষা দেওয়া যাবে।
কলকাতার সেন্ট অগাস্টিন’স ডে স্কুলের তরফে বুধবার স্কুলের ওয়েবসাইটে একটি নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা আছে, ‘যদি আপনাদের ছেলে – মেয়েরা বাকি পরীক্ষার দিতে চায়, তাহলে তাদের নিয়ে প্রথমে কোভিড টেস্ট করাতে যান। তারপর তাদের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এনে স্কুলে জমা দিন। তবেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে। এতে পরীক্ষায় বসা অন্য ছাত্র – ছাত্রীদের সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।’ এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রিন্সিপাল আর এস গ্যাসপার জানিয়েছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই জরুরি ছিল। কারণ এতে অন্য ছাত্র – ছাত্রী ও শিক্ষক – শিক্ষিকাদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। কারণ স্কুলটি কন্টেইনমেন্ট জোনে অবস্থিত।’ স্কুলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৫ জুনের মধ্যে এই করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট স্কুলে জমা দিতে হবে।
নোটিসে এও বলা হয়েছে, কোনও পড়ুয়া পরীক্ষায় বসতে না চাইলে তার প্রি- বোর্ডের নম্বর বাকি পরীক্ষাগুলির নম্বর হিসেবে যোগ করে দেওয়া হবে। ছাত্র – ছাত্রীরা পরীক্ষায় বসবে কিনা সেটা ১৯ জুনের মধ্যে স্কুলে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই স্কুলের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে শিক্ষা মহলে। দক্ষিণ কলকাতার আর এক নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের সিদ্ধান্ত কোনও স্কুল নিতে পারে না। ছাত্র – ছাত্রীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে। তার থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ গেটে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত করতে পারতেন। সেইসঙ্গে একটি মেডিক্যাল টিম তৈরি রাখতে পারতেন।’ অন্য একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, ‘২৫ জুনের মধ্যে জমা নেওয়া রিপোর্ট ১ জুলাই পর্যন্ত কী ভাবে কার্যকর থাকবে। কারণ, রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরেও কারও মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্ত অবিবেচকের মতো নেওয়া হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের আর কোনও স্কুল বাকি থাকা আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষার জন্য এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। এই বিষয় নিয়ে অভিভাবক মহল চরম অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এই মুহূর্তে কি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ছেলে খেলা করা হচ্ছে ? যখন যেমন ইচ্ছে নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে। এধরণের কোনো নিৰ্দেশ তারা মানবেন না বলেই জানিয়েছেন।