নিজের ছেলে কে খুন করতে মায়ের নীলনকশা : জেরায় শিকার কাকলি রায় ও তার প্রেমিক রঞ্জিত ভর
মায়ের প্রেমিকের হাতে অষ্টম শ্রেণির ছেলে খুন : নির্মম হত্যার কঠোর শাস্তি চায় পাড়া প্রতিবেশীরা পরিকল্পনা করে খুন করেছে মা ও তার প্রেমিক হাওড়ার কাকলি রায়
মা তার পথের কাঁটা সরাতে ছেলেকে খুনের ব্লুপ্রিন্ট করলেন নিজে । হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শুভম রায়কে কাঁকুড়গাছির স্টেশনের সামনে এনে খুন করল মায়ের প্রেমিক। পুলিসি জেরায় দোষ কবুল করেছেন দুজনেই। জোর করে ধাক্কা মারে চলন্ত ট্রেনের সামনে , ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকিয়ে যায় শুভম এবং তখনি শেষ হয়ে যায়।
ভালো ছেলে শুভম , মিষ্ট ভাসি , খেলা ধুলো করতো ভালো। বাবা মারা যাবার পর মা আর ঠাকুমার ছিল ভরসা। বিগত কয়েক বছর ধরে চলছিল রঞ্জিত ভোরের সাথে ঘনিষ্ঠতা। শুভমের ঘোরতর আপত্তি ছিল রঞ্জিত বাবুর আচরণে , অনেক ক্ষেত্রেই পরিবার করতো শুভম আর প্রচন্ড শারীরিক নির্যাতন করতো মায়ের প্রেমিক ও নিজের মা। একটা প্রবাদ আছে সন্তানের জীবনে কেউ থাকুক আর না থাকুক মা থাকলেই সব থেকে সুরিক্ষিৎ , কিন্তু কাকলি রায় রায় সেই মা নন । প্রেমের পথের কাঁটা সরাতে নৃশংসভাবে খুন করলেন নিজের পেটে ধরা সন্তানকে। হতবাক কাকলিদেবীর পরিবার। শোকে বাকরুদ্ধ ঠাকুমা। অবাক পাড়া-প্রতিবেশিরা।
এমন কাণ্ড যে ঘটবে তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি কেউ হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার মান্নাপাড়ায় ।অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনো করে শুভম রায়। কিন্তু তলে তলে চলছিল ষড়যন্ত্র, গভীর-নৃশংস চক্রান্ত।
শুভমের বাবা মারা গিয়েছেন বছর দুই আগে । ছেলে শুভমকে গড়ে তোলার দায়িত্ব ছিল মায়ের হাতেই। অথচ সেই হাতই কেড়ে নিল ছোট্ট ছেলেটার জীবন। প্রেমে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছিল শুভম। তাই খতম করার নীল নকশা করে কাকলি রায়। ঠাকুমা দাবি করেছেন, ছেলে এতটাই অসহ্য হয়ে উঠেছিলেন, যে দিনের পর দিন ধরে শুভমকে অত্যাচার করতেন মা বললেন ঠাকুমা। শুভমের ঠাকুমা আরো জানান কিছু আপত্তি কর দৃশ্য দেখে ফেলে শুভম ও তার ঠাকুমা , তার পরই শুরু হয় অমানষিক নির্যাতন , ইদানিং গায়ে হাত দিত রঞ্জিত ভর।
পুলিশের জেরার সামনে ভেঙে পড়েন মা ও তার প্রেমিক রণজিৎ ভর। প্রথমে বিষয়টি ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পুলিশ সেটা ধরে ফেলে , প্রাথমিক সূত্র পায় পুলিস। কে ডেকে নিয়ে গেল শুভমকে? তখনই উঠে আসে মায়ের প্রেমিকের যোগসূত্র। শুক্রবার কাঁকুড়গাছি ট্রেন লাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয় শুভমের দেহ। মায়ের কথাবার্তায় সন্দেহ জাগে তদন্তকারীদের। পুলিশ চিরুনি তদন্ত শুরু করে , কাকুলি রায় জেরায় প্রথমে বলে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছে , কিন্তু ওই রাতে কে ডেকে নিয়ে গেছিলো ? এই প্রশ্নে বেরিয়ে আসে রঞ্জিত ভরের কারসাজি। কে এই রঞ্জিত জানত ঠাকুমা বলেন শুভমের মায়ের ঘনিষ্ঠ , তার পর আর কাল বিলম্ব না করে রঞ্জিত ভর কে থানায় আটক করে।
নাটকের শেষ নেই এই কাকুলি রায়ের , গল্প তৌরি করে ছোট্ট ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে খুন করলো। মা হাসপাতালে ভর্তি, স্কুল থেকে ফেরার পর শুভমকে জানায় কাকলির প্রেমিক রঞ্জিত ভর। এরপরই নিখোঁজ হয়ে যায় শুভম। রঞ্জিত শুভমকে নিয়ে রাতেই পৌছয় কাঁকুড়গাছিতে। সেখানেই ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে খুন করা হয় শুভমকে।