পুজোর রুটম্যাপ : সেরা পুজো দেখার তালিকা এক নজরে !
নজর কাড়বে ভবানীপুর , গড়িয়াহাট , রাসবিহারী , রবীন্দ্র সরোবর লেক
অবসর সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি : ৬৯ তম বর্ষে শিল্পী সুব্রত ব্যানার্জীর পরিকল্পনায় ” চরকা রানীর দেশে ” প্রাণের শুরু হতে শেষ , এমনকি তার পরেও ! ভাবনা ও বিন্যাসে প্রতিবারই অনন্য উপস্থাপনা, প্রতিবারেই পুজো দেখার তালিকায় ওপরের দিকে নজর কারা পুজো। এবারের উপস্থাপনায় ‘এক অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তা তিনি নিজের আপন গতিতে বুনে চলেছেন এ বিশ্বব্রহ্মান্ডের জাগতিক অবস্থান।আর এই অদৃশ্য চড়কা ধরে চলেছে জাগতিক কাল। এই অনন্ত নিয়মে বিনি সুতোয় বোনা জাগতিক নিয়ম , আর এই নিয়ে সেজে উঠবে এবারের পূজা প্রাঙ্গন। আকর্ষণ এক জায়গাতেই ভাবনার বিন্যাস কিভাবে ঘটবে , দেখতে হলে বেশ কয়েক দিনের অপেক্ষা। পুজোর সম্পাদক শ্যামল নাগ দাস বললেন শেষ ৬ মাস রাতদিন কাজ করছে শিল্পী সুব্রত ব্যানার্জীর নেতৃত্বে।শুরুথেকে শেষ সবটাই হাতের কাজ , আর সব মিলিয়ে বেশ সাজ সাজ রব এবারের কাজ নিয়ে।
হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব : শিল্পী অনির্বান দাসের পরিকল্পনা ও রূপায়ণে সেজে উঠছে এবারের উপস্থাপনা ” রসেবসে” . ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্রে নটি রসের উল্লেখ আছে তার মধ্যে শান্ত রসটি কে বিবেচিত করেন নবরস হিসেবে। আর এই ন’ রকমের রসের ভাবেই সম্পৃক্ততার বিন্যাসে ফুটে উঠবে এবারের ভাবনা।মণ্ডপ ও প্রতিমা করছেন অনির্বান দাস , আলোর পরিকল্পনায় প্রেমেন্দু বিকাশ চাকি এই আবহ করছেন শতদল চ্যাটার্জী। বলাবাহুল্য এবারের উপস্থাপনা অন্য বারের থেকে একদম আলাদা। পরিকল্পনা বাস্তবে কিভাবে রূপায়ণ হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। অপেক্ষার মাত্র ১৫ দিন বাকি।
চক্রবেড়িয়ে সার্বজনীন দুর্গোৎসব : সুশান্ত পাল দূর্গা পুজোর বাজারে বেশ নামী শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম। এবারের ভাবনা ” পরত ” . বেশ অনেকটাই সহজ যদি মন দিয়ে চিন্তা করা যায়। নিরাকারের সাধনা বা ঈশ্বরের ঐশরিক রূপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার মধ্যে দিয়ে এবারের মণ্ডপের ভাবনা সর্বশেষ । চিন্তার ক্ষেত্রে বেশ নতুনত্ব আছে এবারের উদ্যোগে। কাজের পরিমাপ অনেকটাই, তাই চলছে রাতদিন। এগিয়ে আসছে সময় আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন পেরোলেই মহালয়া , শুরু হবে যুব কল্যাণ শারদ সম্মান ২০১৯ এর প্রতিযোগিতা।
বকুল বাগান সার্বজনীন দুর্গোৎসব : ৯২ তম বর্ষে শিল্পী বিমল সামন্তের পরিকল্পনায় ” চাল চিত্র ” মূলত পটচিত্রে আঁকা লোককথা নিয়ে এবারে ভাবনা। বাংলার পটচিত্র নিয়ে বহুকথা সকলেই জানেন কিন্তু আকর্ষণের বিষয় যে , এই মণ্ডপে শিল্পীর নিপুন হাতে তৈরি হচ্ছে বর্তমান সমাজের দৈনন্দিন জীবন যাত্রা। ভালো ও মন্দ সবমিলিয়ে ভাবনার পরিধিতে গড়ে উঠছে এবারের পূজা প্রাঙ্গন। অভিনবত্ব এখানেই যে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ভালো মন্দের মধ্যে উভয় দিক উঠে আসবে যা প্রতিদিনের জীবনে আমরা জানতে পারি। আপনারা এই মণ্ডপে এলে দেখতে পাবেন ছোট বড় চালচিত্রের মধ্যে জীবন কথা, যা কালীঘাটের পটচিত্রের আদলে।এই জীবন কথায় থাকছে সুখের খোঁজে মূল্য বোধ হারিয়ে যাচ্ছে , তেমনি থাকবে লোভলালসায় জীবন বোধ প্রতিনিয়ত খুন হয়ে যাচ্ছে বাজারি সভ্যতায়। সব মিলিয়ে গতানুগতিকতার বাইরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন , বলা যায় মানুষের না বলা ক্ষোভ প্রকাশ পেতে পারে আর ভালোলাগা স্মৃতি খুঁজে পেতে পারেন। এই সব নিয়ে নজরে থাকবে বকুল বাগান এবছরে।
৬৬ পল্লী ক্লাব : শিল্পী অনিমেষ দাসের এবারের ভাবনা অনেকের থেকেই আলাদা। সবটাই জানি কিন্তু উৎসবের রোশনাইয়ে যারা ঢাকা পড়ে যায় , যারা উৎসবের কান্ডারি তারাই এবারের থিমের ভাবনা। যাদের নিরালস প্রয়াস এই উৎসবকে আলোকিত করেন তারাই এবার থিমের মূল কথা , অর্থাৎ ডেকোরেটর্স থেকে প্রতিমা শিল্পী , পুরোহিত থেকে ঢাকি , লাইট ম্যান থেকে ভোগ রান্নার রাঁধুনি সবমিলিয়ে বলা যায় এই অনন্য ভাবনা যা কাগজ কলমে আছে তা যদি বাস্তবে উপস্থাপনা হয় তাহলে আমজনতার নজর পড়বে এবার ৬৬ পল্লী ক্লাব। অপেক্ষাতর ১৫ দিন। নজরে থাকবে ৬৬ পল্লী এবার।
২১ পল্লী সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি :৭৩ তম বর্ষে শিল্পী বৈশাখী ঘোষের পরিকল্পনায় এবারের থিমের ট্যাগলাইন ” মজাটাই যেখানে থিম ” ক্লাবের অন্যতম উদ্যোগতা পূর্বিতা ঘোষ জানালেন , থিমের প্রতিযোগিতায় উৎসবের মজাটাই হারিয়ে যাচ্ছে আর এই মজাটা পুরোটাই কব্জা করে ফেলছে কর্পোরেট। পুজো দেখতে এসে কেও মজা করতে পারে না , খাবার জায়গা নেই , ছোটদের ছুটোছুটি করবার সুযোগ থাকে না , না এবার তা হবে না শক্ত হাতের বাঁধন ছেড়ে ওরা একটু হাফ ছেড়ে বাঁচবে। খেতে ইচ্ছে করলে ষ্টল থাকবে , ভিড়ের ঠেলাতে প্রিয়জনের সাথে নিজস্বী তুলতে পারে না কেও না মন খারাপ করার কিছু নেই এবার থাকবে । সব মিলিয়ে কেমন যেন সব কিছুতেই যান্ত্রিকতা। আর এই সব কিছু কাটিয়ে উঠবে ২১ পল্লী ক্লাব।প্রাথমিক ভাবে এই ভাবনাটাও যে থিম হতে পারে তার জন্য তারিফ করতেই হবে সংঘঠক ও শিল্পী কে।তবে বলা বাহুল্য এবারের প্রস্তুতি কলকাতায় নজর কারার মতই। তার কারণ কলকাতা জুড়ে প্রচার অন্যবারের থেকে অনেক বেশি।ভাবনার উৎকর্ষতা বাস্তবে রূপ পেলে এবার পুজো অন্য রকম হবে ২১ পল্লী ক্লাবের (চলবে )।