পুত্রসম ছাত্ররা লুম্পেনদের মত আচরণ করছে, কারকাছে থেকে শিখছে, এটা কি বর্তমান রাজনীতির অবদান :ক্ষুব্ধ প্রাত্তন বিচারপতি সমরেশ ব্যানার্জী , প্রথম লোকায়ুক্ত পশ্চিমবঙ্গ
"এরা ছাত্র না লুম্পেন , শিক্ষককে আঘাত করে" গর্জে উঠলো কলকাতা। মেনে নিচ্ছেন না সহজে কেও। ২০১১ পরিবর্তনের পর বার বার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক নিগ্রহের ,সরকারকে সেভাবে দেখা যায়নি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আর এই প্রশয়েই তান্ডপ চলছে রাজ্যে।
রাজ্যের প্রথম লোকায়ুক্ত অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি সমরেশ ব্যানার্জি গত কাল কলকাতায় ফিরে টিভি তে খবর দেখে ক্ষোভ উগলিয়ে দিলেন , বললেন ” কেন এমন হবে। কারা উৎসাহ দিচ্ছে এই সব করার। যা শুনলাম আর যা ভিডিও দেখলাম তাতে তো ওরা আর ছাত্র নেই লুম্পেনে পরিণত হচ্ছে।এর ফল খুব খারাপ হবে কারণ আজ ওরা শিক্ষক পেটাচ্ছে কাল সাধারণ মানুষ পেটাবে আর সরকার দুঃখ্য প্রকাশ করেই থেমে থাকবে। এটা একজন অভিভাবকের কাজ না , স্বাসন করতে হবে সোহাগের সাথে নাতো আগামী প্রজন্ম উন্মাদ হবে জ্বলবে সারা রাজ্য। অনেক সময় সন্তানদের সঠিক ভাবে মানুষ করতে কঠিন হতে হয় এটা সরকারের মনে রাখা দরকার।দরকারে রাজনৈতিক ছত্রছায়া সরিয়ে নিতে হবে , কঠোর হতে হবে সিদ্ধান্তে। শুধু ভোটার কথা মাথায় রেখে সরকার চালালে ক্ষমতা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধরে রাখবেন কিন্তু সমাজ টা নীতি হীন আদর্শ হীন খোগলা হয়ে যাবে। ”
গতকাল বুধবার অশান্তি ছড়ায় হুগলির কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজে এমএ ছাত্রীদের সঙ্গে ডিগ্রী কোর্সের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে।অভিযোগ ‘তৃণমূল জিন্দাবাদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’ জিন্দাবাদ স্লোগান না দেওয়ায় ছাত্রীদের মারধর ও আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে কলেজের ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে।অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি কলেজের অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কেও বেধড়ক মারধর করে , তিনিও ছাড় পাননি ।টিএমসিপি যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে ।
গতকাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এমএ ফাইনাল বর্ষের ছাত্রীরা বেঞ্চে উঠে সেলফি তুলছিলেন।টিএমসিপি সমর্থকরা তাঁদেরকে বেঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেন । আর এই নিয়েই দু-পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়।এই বিবাদ অধ্যাপকদের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো বিবাদ মিটমাট হলেও , স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় আবার। অভিযোগ এক ছাত্রীকে মারধর করা হয় বলে।ওই ছাত্ররা কলেজ গেটে তালা লাগিয়ে আটকে রাখা হয় এমএ ছাত্রীদের।
ঘটনার খবর সংবাদ মাধ্যমে জানা জানি হবার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার গুরুত্ব বুঝে আক্রান্ত অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ফোন করেন , ফোনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,” আমি আপনার পাশে আছি। আপনি কোনও চিন্তা করবেন না। দোষী দুই ছাত্রকে বের করে দেওয়া হয়েছে।” অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি খানিকটা আশ্বস্ত বলে জানিয়েছেন । সুব্রত বাবু বলেন, “আমি কলেজ যাব। ভয় পাই না। আমি বিচার চাই। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তিনি পাশে আছেন। প্রয়োজন পরলে ফোন করতে।” এদিকে কলেজে আজ কালকের ঘটনার প্রতিবাদে অধ্যাপকদের বয়কটেও সামিল হয়েছেন ।সুব্রত বাবু জানান প্রশ্ন ধৃতরা জামিন পেয়ে গেল কিনা ?
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র সংঘঠনের আক্রোশ গিয়ে পরে অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের উপর।তাকে নির্মম ভাবে মারধর করে ছাত্র সংসদের নেতারা ওই কলেজে। এই ভিডিও ছড়িয়ে পরে সংবাদ মাধ্যমে। রাজ্যের সাধারণ মানুষ এর আগেও মাজদিয়া কলেজের শিক্ষক নিগ্রহ দেখেছে , সাথে দেখেছে স্কুলে যোগ ছুড়ে মেরেছে তৃণমূলের নেতা আরাবুল এক শিক্ষিকাকে। সব মিলিয়ে এমন কোন বছর গেলনা যেখানে শিক্ষক নিগ্রহ হয় নি। সুব্রত বাবু জানিয়েছেন “২০১১ সালের পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অনেকবারই ভেবেছি চাকরি ছেড়ে দেব। রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে ভাবতে বাধ্য হয়েছি ” অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন,তাঁর অভিযোগ,কলেজে বেআইনিভাবে ছাত্র সংসদ চলছে তিন বছর ধরে “। ঘটনার পর স্ত্রী-মেয়ে আরও সন্ত্রস্ত, ভীত, আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও তিনি ‘লড়াইয়ের ময়দান’ ছেড়ে যাবেন না বলে সাফ জানান কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃখপ্রকাশ করলেন কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের নিগৃহীত অধ্যাপককে ফোন করে ঘটনার জন্য। নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ সুব্রতবাবুর “২০১১ সালের পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অনেকবারই ভেবেছি চাকরি ছেড়ে দেব।