প্রতিবাদের নামে চলছে তান্ডব আর সেই তান্ডবে ধ্বংস হচ্ছে রেল সম্পদ।
দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন, তবে সেই বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েই বিক্ষোভকারীরা নষ্ট করছে দেশেরই সম্পদ।
@ দেবশ্রী : বিগত কয়েকদিন ধরেই চলছে, রেল অবরোধ, পথ অবরোধ। নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেল। ট্রেনে পাথর ছোড়া, আগুন ধরিয়ে দেওয়া এসবের জেরে একদিকে যেমন চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা, ঠিক তেমনই রেলের সম্পত্তি হচ্ছে ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি। ইতিমধ্যেই রেলের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এই প্রকার পরিস্থিতিতে এবার রাজ্যের স্টেশনগুলিতে অতিরিক্ত পরিমানে বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত ৮টি কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। গত কয়েকদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্টেশনে সেই বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, মালদার হরিশচন্দ্রপুর ও ভালুকা রোড স্টেশন দুটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উত্তরবঙ্গগামী কোনও ট্রেনই যেতে পারছে না। গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের নামে তাণ্ডবের জেরে আজিমগঞ্জ -নিউ ফারাক্কা সেকশনে ক্ষতিগ্রস্ত নিমতিতা, সুজনিপুর, ধুলিয়ান গঙ্গা, নোয়াপাড়া হল্ট, বাসুদেবপুর হল্ট, মনিগ্রাম প্রভৃতি স্টেশনগুলি। ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি লেভেল ক্রসিং গেট। কৃষ্ণনগর- লালগোলা সেকশনে ক্ষতিগ্রস্ত লালগোলা, কৃষ্ণপুর, সরগাছি, বেলডাঙা, রেজিনগর স্টেশন। শিয়ালদহ বজবজ সেকশনে ক্ষতিগ্রস্ত আকরা স্টেশন। শিয়ালদহ-ডায়মন্ডহারবার সেকশনে ক্ষতিগ্রস্ত দেউলা স্টেশন। নলহাটি-আজিমগঞ্জ সেকশনে ক্ষতিগ্রস্ত বারালা স্টেশন। তাণ্ডবের জেরে প্রায় ১৫টি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেলের তরফ থেকে এক বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। বেশকিছু ট্রেনের যাত্রাপথ মালদাতেই স্থগিত করা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শনিবার দিন লালগোলা স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। শুধু কৃষ্ণপুর স্টেশনেই জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৬২টি কোচ। গত কয়েকদিনের এই ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, তাণ্ডবের জেরে পূর্ব রেলের ৪টি সেকশনে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। যারমধ্যে রয়েছে ১)আজিমগঞ্জ- নিউ ফারাক্কা, ২)কৃষ্ণনগর – লালগোলা, ৩)শিয়ালদহ-বজবজ, ৪)নলহাটি-আজিমগঞ্জ। আর এত ক্ষয়ক্ষতির জেরেই অনেক টাকার ক্ষতি হচ্ছে রেলের। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, আগামী দিনে ঘটতে পারে আরও ক্ষতি, সেই জন্যই মোতায়েন করা হচ্ছে অতিরিক্ত বাহিনী।