ইস্কনে এবার নিয়ম মাত্র অনুষ্ঠান, সম্পূর্ণ রোধ ভক্ত সমাগম
নিষেধাজ্ঞা ভক্ত প্রবেশের তবে থাকছে অনলাইন ইউটিউব সম্প্রচার
পল্লবী কুন্ডু : প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটা বড়ো ধাক্কার সম্মুখীন হতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের মানুষ গুলিকে। বিভিন্ন ধর্মীয়স্থান গুলিও যার থেকে বাদ পড়েনি। একের পর এক বড় বড় অনুষ্ঠান বাতিলের খাতায় নাম লিখিয়ে শুধু নিয়ম সেরেছে। আর এবার তো প্রশ্ন উঠছে অন্যতম উৎসব রথযাত্রা নিয়ে। সেখানেই বিধি-নিষেধ বিপুল পরিমান। মায়াপুরে ইস্কনে জগন্নাথ দেবের রথ এবার আর রাজপথে নয়। তার বদলে ইসকনে চন্দ্রোদয় মন্দিরের উঁচু পাঁচিল ঘেরা চত্বরের ভিতরেই রথ টানা হবে। ইসকন মায়াপুরের রথযাত্রা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অলয়গোবিন্দ দাস বলেন, ‘আমাদের রথযাত্রা সাধারণত যে ভাবে হয়, এ বারে তার কিছুই হবে না। প্রতি বার যে তিনটি রথে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রা দেবী রাজাপুর থেকে মায়াপুর আসেন এ বারও তাতেই চড়বেন। তবে লকডাউনের শুরু থেকেই বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ। মন্দিরের ভিতরে যে সেবায়েত বা পুরোহিতেরা আছেন, কেবল তাঁরাই থাকবেন। প্রতি রথে থাকবেন পঁচিশ জন করে। তাঁদের মধ্যেই পুজো, কীর্তন, রথটানার দায়িত্ব ভাগ করা থাকবে।’
যেখানে প্রতি বছর সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রথযাত্রা হয় সেখানে এবছর সামান্যতম। তার সাথে বহু প্রতীক্ষিত দর্শকেরাও দেখতে পাবেন না জগন্নাথ দেবের এই যাত্রা। তবে ইস্কন তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, ইউটিউব চ্যানেল মারফত গোটা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে। মায়াপুর ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাসের মতে, ‘সাধারণের প্রবেশের জন্য অবস্থা এখনও অনুকূল নয়। সংক্রমণ প্রতি দিন বাড়ছে। তা ছাড়া গণ পরিবহণও অধিকাংশ বন্ধ, মানুষ আসতেও পারবে না।’ তবে অলয়গোবিন্দের দাবি, ‘অন্য বারের থেকে এ বার কিন্তু ঢের বেশি মানুষ ইসকনের রথযাত্রা দেখবেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল মায়াপুর টিভির মাধ্যমে। ওতে স্নানযাত্রা দেখেছেন সাড়ে চার লক্ষ মানুষ। রথে সংখ্যাটা আরও বহু গুণ বেড়ে যাবে বলেই আমাদের ধারণা।’
প্রতি বছর ইসকনের জগন্নাথের আপন বাড়ি রাজাপুর মন্দির থেকে মায়াপুরে মাসির বাড়ি পর্যন্ত রথ টানার রীতি। প্রতি বছরই সেখানে চন্দ্রোদয় মন্দির লাগোয়া গঙ্গার পাড়ে শ্রীকুঞ্জে তৈরি হয় চোখ ধাঁধানো অস্থায়ী গুণ্ডিচা মন্দির। হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয় সেখানে। সাত দিন ধরে বসে রথের মেলা। কিন্তু সেই রথযাত্রা ঘিরে দেশ-বিদেশের মানুষের উন্মাদনা এ বছর কার্যত বন্ধই থাকছে। চন্দ্রোদয় মন্দির চত্বরে ভক্ত সাধারণের প্রবেশের সুযোগ এ বার থাকছে না। এর পাশাপাশি পুরী মন্দিরেও নানান বিষয় নিয়ে চলছে টানা-পোড়েন।