ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে অশালীন ছবি, লজ্জায় আর অপমানে আত্মঘাতী ছাত্রী !
সোশ্যাল সাইট যতটা ভালো ততটাই খারাপ। এর একটি ভুল ব্যবহার আর কারোর থেকে কেড়ে নিতে পারে তার জীবন পর্যন্ত।

@ দেবশ্রী : প্রতিনিয়ত হয়ে চলছে সাইবার ক্রাইম। আর তার শিকার হচ্ছে বহু মানুষ। কেউ সেই সমস্যার সমাধান ঘটায়, কেউ বা চুপ করে মেনে নেয়। কিন্তু একটি অংশ থাকে যারা মেনে নিতে পারে না। তাই বেঁচে নেয় আত্মহত্যার পথ। ঠিক এমনি একটি ঘটনা ঘটে, নদিয়ার ধানতলা থানা এলাকায় পুরাতন চাপড়ায়। ফেসবুকে ভুয়ো একাউন্ট খুলে তাতে অশালীন ছবি পোস্ট করায় লজ্জা ও অপমানে আত্মঘাতী হলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী, তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। তিনি রানাঘাট কলেজের ছাত্রী। অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন, মাস ছয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ফেসবুকে অভিজিত্ রায় ওরফে শুভেন্দু নামে কোনও এক যুবকের সাথে ছাত্রীটির আলাপ হয়। আর তারপরই তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথমে তাঁদের সম্পর্কের কথা কেউই জানত না। প্রতিবেশীরা জানায়, দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হলে, সেই সুযোগে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর কয়েকটি ছবি তুলে রাখে অভিযুক্ত যুবক।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। আর তার জেরেই ক্রোধের বশে ওই ছাত্রীকে জব্দ করার জন্য একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে অশালীন ছবিগুলি পোস্ট করে অভিযুক্ত। সে কথা জানতে পেরেই লজ্জায় ও অপমানে রবিবার সকালে আত্মঘাতী হন ছাত্রী। বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে নিজের ওড়না গলায় দিয়ে আত্মঘাতী হন ছাত্রী।
ছাত্রীর বাবা সকালে বাজার থেকে ফিরে এসে রান্নাঘরে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। আচমকা এই দৃশ্য দেখে চিত্কার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। তাঁরাই তড়িঘড়ি করে নিয়ে যান রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্সকরা ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনায় ধানতলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মৃত ছাত্রীর বাবা। তবে অভিযুক্তের বাড়ি কোথায়, তাঁর পরিচয় কী, বয়স কত – এসব কিছুই জানাতে পারেননি ছাত্রীর বাবা। তিনি শুধুমাত্র অভিযুক্তের নাম জানাতে পেরেছেন। ছাত্রীর বাবা ও পরিবারের অন্যরা মনে করেন, ছবিগুলি মর্ফ করা, অন্যের ছবিতে তাঁদের মেয়ের মুখ বসিয়ে দিয়েছিল অভিযুক্ত যুবক।
অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করেছে ধানতলা থানার পুলিশ। সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, অভিযুক্তের সঙ্গে ওই ছাত্রীর আলাপ ফেসবুকে হয়েছিল বলে আগে সেটিই ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া প্রয়োজন পড়লে ছাত্রীর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হবে।