বাগবিতণ্ডায় রাজ্য এবং রাজ্যপাল , রাজ্যপালকে উপেক্ষা রাজ্যের ?

তিয়াসা মিত্র : এই কথা নতুন নয় রাজ্য রাজ্যপালের মতবিরোধ এবং মতো পার্থক্য। এই শব্দ এবং ভাষা আমরা প্রায় শুনতে পাই। তেমনি আজকে আবারো সেই নজির গঠিত হলো বিধান সভার সামনে রাজ্যপালের সাংবিধানিক বৈঠকে। আজ অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র দিবসের একদিন আগে বিধান সভাতে ড. বি আর আম্বেদকরের পাদদেশে প্রত্যেক নেতা মন্ত্রী সঙ্গে রাজনৈতিক বিশিষ্টজনেরিরা মাল্যদান করেন এবং শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। ঠিক সেই নিয়ম পাল করতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধরকারকে।

এই পর্যন্ত ঠিক ছিল সমস্ত পরিস্থিতি, উত্তপ্ত হলো তখন, যখন সাংবিধানিক বৈঠকে তিনি পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা সম্পর্কে বলা শুরু করলেন। ওনার কথা শুনে বোঝাই যায় তিনি সত্যি কতটা হতাশাগ্রস্থ পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কে। ধনকর বলেন,” বাংলার গণ তন্ত্র বিপদের মুখে, এখানে আইনের শাসন নয়, শাসকের শাসন চলছে, বাংলার সরকারি অফিসারেরা আইন মেনে কাজ করছেন না , রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা সংবিধানের মর্যাদা দিতে জানেন না” এই বিষয়ে কে নিয়েই তিনি আরো বলেন যে , কি ভাবে রাজ্যপালের সাথে কথা না বলে ২৫ জন উপাচার্যকে নিয়োগ করা হয় ? এই ধরণের কর্মকান্ড অন্যকোনো রাজ্যে হয়না। এছাড়া শোনা যায় ওনাকে না জানিয়েই নাকি উপাচার্যকে অধীনস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অনেক অনুপস্থিতিতে শিক্ষার উন্নয়নে VC কে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যপাল কটাক্ষ কাপড়ে বলেন,” রাজ্যে শাসকের শাসন চলছে” অর্থাৎ তিনি স্পষ্টত এই কোথাই জানাচ্ছেন যে পশ্চিমবঙ্গের ভেতরে চলছে সৈরাচারিতা। এছাড়াও তিনি সমস্ত মিডিয়ার সামনে বলেন ” রাজভবনে কোনো ফাইল আটকে নেই, উপরন্তু মা ক্যান্টিনের হিসাবের নথি এবং বিএসএফ -এর সম্পর্কে জানতে চাইলেও কোনো উত্তর আসে না রাজ্য সরকারের কাছ থেকে।” তিনি জানা তাকে এমনি ভাষাতে চিঠি লেখা হয়ে যা সত্যি লজ্জার। ধনকরের কাছ থেকে শোনা যায়, ” বাংলার গণতন্ত্র চরম সংকটে যেখানে গণতন্ত্রের প্রধার বিষয়ে ভোটাররা সেই লংঘিত হচ্ছে।যার ফল স্বরূপ আমরা দেখতে পাই ভোট পরবর্তী হিংসা। “

সর্বোপরি কোন কথা ঠিক এবং কোন কথা বেঠিক তা নিয়ে গবেষণা সত্যি অসম্ভব বিষয়। সর্বোপরি মানুষ এবং তার মৌলিক অধিকার গুলি প্রতিটি পদক্ষেপে সুরক্ষিত হওয়া। নতুবা নির্বাচনের ফলাফলে তা সুস্পষ্ট হবে। সব শেষে একটি প্রশ্নই করতে ইচ্ছে করলো, তাহলে কি রাজ্য এবার রাষ্ট্রপতির অধীনে যেতে চলেছে? সেই বিষয়ে যে খুব একটা সুখকর হবেনা তা বলাই বাহুল্য। রাজ্যপালের এবং রাজ্যের এই দ্বন্দ্ব যে একটি পরম্পরার মতন তা আমরা সবাই জানি। এরই মাঝে আমরা এটিও স্পষ্টত বুঝতে পেরেছি কোন কোন বিষয়ে অভিযোগ বার বার আমাদের সামনে তুলে ধরেছে যথা- প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে রাজ্যপালের ভূমিকা থেকে তাকে বঞ্চিত করা, আর্থিক স্বচ্ছতা সন্মন্ধে তাকে ওয়াকিবহাল না রাখা, অস্বচ্ছ নিয়োগের কৈফিয়ত রাখা রাজভবনে, যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের নিয়োগ না মানা এবং সব থেকে বেশি গুরুত্ব তিনি যে বিষয়ে দেন তাহলো- সরকারি আমলাদের অঙ্গুলি হেলনে কাজ হওয়া। তিনি আজ জন সমক্ষে ও জানানা যে, বিষয়ে গুলি চলতে থাকলে এর ফল কোনো ভাবেই ভালো হবে না। এই বিষয়ে রাজ্যের স্পিকার ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক বেক্তিত্তের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
