মহিলাদের সুরক্ষার কথা ভেবে, পাঞ্জাব সরকারের নয়া পদক্ষেপ।
সারা দেশের মেয়েরা এখন ভয়ে আতঙ্কিত, তাই সব মেয়েদের নিশ্চিন্তে বাড়ি ফেরার দায়িত্ব নিচ্ছেন পাঞ্জাব পুলিশ।
@ দেবশ্রী : দিন হোক কি রাত, শহরে ক্রমশ বাড়ছে আতঙ্ক। বিশেষ করে রাতের শহরে বেশি আতঙ্ক। মেয়েদের জন্য ক্রমশই ভয়ঙ্কর হয়ে যাচ্ছে, রাতের পথ। সারা দেশ জুড়ে যে নরকীয় ঘটনা ঘটে চলেছে, তা বারবার প্রশ্ন তুলছে প্রশাসনের দিকে। সে রাজ্য হোক কিংবা জেল। তবে এবারে, মেয়েদের সুরক্ষার জন্য একটি নয়া উদ্যোগ নিল পাঞ্জাব সরকার। রাতের বেলা পথ সুরক্ষিত মনে না হলে অথবা বাড়ি ফেরার প্রয়োজন হলে মাত্র একটা ফোন কল, আর তাতেই পৌঁছে যাবে পুলিশ।
রাতের বেলা নিরাপদে মেয়েদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেবে এবার থেকে পুলিশ। আর সেই জন্য রয়েছে দু’টি হেল্পলাইন নম্বরও। ‘হোম ড্রপ হেল্পলাইন’ নামে এই পরিষেবা চালুর পরেই প্রায় ৩০০০ কল পেয়েছে লুধিয়ানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার থেকে এই ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছেন লুধিয়ানা পুলিশ। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দার সিং এই পরিষেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করার পরেই দু’টি হেল্পলাইন নম্বর ১০৯১ ও ৭৮৩২০১৮৫৫৫ ফেসবুক, টুইটারে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। পুলিশ জানান, তারপর থেকেই লাগাতার ফোনকল এসে যাচ্ছে এই দুই নম্বরে। পাঞ্জাব থেকে তো বটেই, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র এবং কেরল থেকেও অনেক মহিলাই এই নম্বরে ফোন করছেন।
পুলিশ কমিশনার রাকেশ আগরওয়াল এই বিষয়ে বলেন, পরিষেবা চালুর পরে এক মহিলাকে রাত ১০টার পরে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। ভিন রাজ্য থেকে আসা ফোনগুলিতে জানিয়ে দেওয়া হয় এই পরিষেবা শুধুমাত্র লুধিয়ানার ভিতরেই চালু হয়েছে। পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পরিষেবা দেবে পুলিশ। তার আগেও যদি কোনো ফোন আসে অথবা কোনও মহিলা নিরাপদ বোধ না করলে তত্ক্ষণাত্ পুলিশের গাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে, তাদের সুরক্ষার জন্য।’ পাঞ্জাব সরকারের কোথায়, লুধিয়ানায় এমন নৃশংস ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না।
লুধিয়ানা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর হাজার তিনেক ফোন কল এসেছে ওই দুই হেল্পলাইন নম্বরে। বেশিরভাগই কৌতুহলবশত ফোন করেছেন। অনেক অভিভাবকদের ফোন এসেছে যাঁরা নিশ্চিত হতে চেয়েছেন এই পরিষেবার আদৌ কোনও অস্তিত্ব আছে কিনা আর থাকলে সেখানেও তাঁদের মেয়েরা কতটা নিরাপদ থাকবে সেই জন্য। অনেক মহিলাই আবার ওই নম্বরে ফোন করে তাঁদের স্বামীদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পাঞ্জাব সরকার চাইছেন, তাদের রাজ্যে যেন কোনোরকম অপরাধ না ঘটে এবং প্রত্যেক মেয়েরা যাতে সুরক্ষিত থাকে। তারা যাতে সুরক্ষিতভাবে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারে, সেই জন্যেই এমন পদক্ষেপ।