মেয়ের বিয়ে মানতে না পেরে, বাবার কোপ মেয়ের উপরেই।
পালিয়ে বিয়ে করা মানে না অনেক পরিবারেই কিন্তু তার জেরেই মেয়েকে কুপিয়ে মারতে ছুটে যায় বাবা।
@ দেবশ্রী : এখনও এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যারা পুরানো খেয়ালে বাঁচে। কিছুটা গোঁড়ামিতে ভরা। এমন অনেক পরিবার আছে যারা প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারে না। কিন্তু প্রণয় এর সম্পর্ক মেনে না নিয়ে নিজের মেয়েকে রকাক্ত অবস্থায় পৌঁছানোর কথা কেউ হয়তো ভাবতে পারেন না। কিন্তু এমনটাই ঘটল উত্তর ২৪ পরগণাতে। বাবার অমতে মেয়ে বিয়ে করায় মেয়ের শশুর বাড়িতে গিয়ে দা ও কুড়োল দিয়ে মেয়েকে এলোপাথারিভাবে কোপালো বাবা। এই ঘটনা ঘটার পর থেকে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর এলাকাতে। অভিযুক্ত বাবা দুলাল মজুমদার রবিবার থেকে পলাতক। আক্রান্ত মেয়ে এই মুহূর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মাস তিনেক আগে কল্যাণগড় পুরসভার এগারো নম্বর ওয়ার্ডের গোলবাজার এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর হালদারকে ভালেবেসে বাবার অমতে বিয়ে করে অশোকনগর পুরসভা এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের জনকল্যাণ পল্লীর বাসিন্দা বর্নালী মজুমদার। সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে সেই বিয়েতে ছেলের বাড়ির মত থাকলেও বিয়েতে মত ছিল না মেয়ের বাবার।
অভিযোগ ওঠে, রবিবার বেলা ১০টা নাগাদ মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ডাকাডাকি শুরু করে বর্ণালীর বাবা দুলাল মজুমদার । ঘরের ভেতর থেকে মেয়ের আওয়াজ পেয়ে, আচমকাই ঘরের মধ্যে ঢুকে অভিযুক্ত বাবা দুলাল সঙ্গে নিয়ে আসা ধারালো কুরুল ও দা দিয়ে মেয়েকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। বর্ণালীর শাশুড়ি তাঁকে বাঁধা দিতে এলে তাকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয়। মেয়ে বর্নালিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় বাবা দুলাল মজুমদার। এরপর চিত্কার শুনে এলাকার লোকজন ছুটে আসে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় যুবতীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। আক্রান্ত বছর একুশের বর্ণালীকে গুরতর আহত অবস্থায় প্রথমে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, পরে তার অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়।
আক্রান্ত বর্ণালী দেবীর মা সোমা মজুমদার মেয়ের এই রকম অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, তিনি বলেন ‘আমার স্বামী দুলাল মজুমদারের মেয়ের পালিয়ে বিয়ে করা তে খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন মাঝে মাঝেই মেয়ে কে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে বলতেন। মেয়ে না ফিরলে আমাকে কোপানোর হুমকি দিতেন। আর আজ সেটাই সত্যি সত্যি করে ফেললো।’ ঘটনাটা ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে এলাকায়। এই গোটা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। পরে পলাতক বাবাকে গ্রেফতারও করা হয়।