সময় পরিবর্তনে আজ বদলেছে সমাজ – তাই বাড়ির বদলে মোয়া,নাড়ু তৈরী হচ্ছে দোকানে
রাত পেরলোই কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমা।আর এই পুজোর অন্যতম উপাদান নাড়ু ,মোয়া।
প্রেরনা দত্ত : বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন। তার অন্যতম উপাদান হলো মিষ্টি।আর তার উপর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো বাঙালির কাছে বড় প্রিয়! এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতে নানান পদ থাকে। অনেক বাড়িতেই ভোগে সাথে জোড়া ইলিশও রাখা হয়।লুচি, পায়েস, মিষ্টির সাথে ভোগ হিসাবে খিচুড়ি, লাবড়া থাকা আবশ্যিক, সঙ্গে প্রসাদে ফলমূল তো থাকেই , আর তার সঙ্গে থাকে নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, ভুশের নাড়ু।আর এইসব নাড়ুই এখন বেশিরভাগ বাড়িতে আসে দোকান থেকে কেনা।
এক সময় বাঙালির ঘরে ঘরে নাড়ু ,মোয়া বানানো হত।বাঙালির ঘরে ঘরে পুজো মানেই নাড়ু তৈরী বাধ্যতামূলক ছিল। সেই পরিবেশ এখন আর নেই। বৰ্তমানে চরম ব্যস্ততার জীবনে রাত জেগে বসে বসে নাড়ু,মোয়া তৈরি করার জন্য কারও হাতে সময় নেই। আজ থেকে বছর ২০ আগেও মানুষের হাতে সময় ছিল। কিন্তু এখন সময় পরিবৰ্তন হচ্ছে। সবাই ব্যস্ত। আগে বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোতে নাড়ু হবেই – নারকেল নাড়ু ও তিলের নাড়ু।কিন্তু এখন ডিজিট্যাল যুগ। ফেসবুক , হোয়াটস অ্যাপে সবাই সবাইকে শুভেচ্ছা দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ই মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন। বৰ্তমানে সমস্ত কিছুই ব্যবসায়িক রূপ নিয়েছে। তাই বাড়িতে মিষ্টি ,নাড়ু তৈরি করার সময় নেই কারও হাতে।অন্যদিকে কর্মরতা মহিলারা সময় এর অভাবেও আজ ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। তাই খাদ্য রসিকরা অৰ্থের বিনিময়ে সেগুলি চেখে দেখছেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ব্যবস্থাটি ভাল।কিন্তু বাড়ির বানানো জিনিসের সাথে কিছুরই তুলনা হয় না। ঠাকুরমা, দিদিমাদের আমলে তাদের হাতে বানানো নাড়ু স্বাদ দোকান থেকে পাওয়া যায় না। আজ আর সেই দিনগুলি নেই। তবুও জীবন চলমান। কিন্তু আমাদের কি উন্নতি হচ্ছে ? না, অবক্ষয়? কোথায় যাচ্ছি আমরা? মোবাইল, ইন্টারনেটের জগতে জীবন সহজ হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমরা হারিয়েছি ছেলেবেলার সেই বাড়ির বানানো নাড়ু,মোয়া।