২০১১ সালের পর থেকে শিক্ষক হেনস্থার পর এবার উদার মুখ্যমন্ত্রী : শিক্ষক দিবসেই মানবিক মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রীর বদলির নীতিতে মানবিক হতে নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীকে
আজ নেতাজি ইনডোরে শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের অনেক দিনের দাবী বদলির নীতি বদল। ফলে কর্মক্ষেত্রে চূড়ান্ত হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের বারেবার , এক দিকে ডিআই অফিসে অন্য দিকে শিক্ষা দফতরে আবেদন নিয়ে জুতোর সুকতলা ক্ষয়ে যাবার উপলক্ষ্য ডুডলি থেকে কর্মক্ষেতের নানা বিধ-বিষয়ে । সেই অর্থে না মর্যদা পান স্কুলের গভর্নিং কমিটিতে না মর্যাদা পান কাউন্সিলে , ফলে অনেক মূল্য দিয়ে ম্যান বাঁচিয়ে শিক্ষকতা করছেন রাজ্যের শিক্ষকরা।
আগাম অভিমানের কথা জানতেন মুখ্যমন্ত্রী , তাই এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোরে, “পার্থদা, আপনারা শিক্ষকদের বদলির বিষয়টা মানবিক দিক থেকে দেখুন। যে শিক্ষকদের বাড়ি মেদিনীপুরে, অথচ শিক্ষকতা করেন বাঁকুড়ায়, তাঁর অসুবিধে হয়। যদি তাঁকে নিজের জেলায় আনা যায় সেটা দেখতে হবে।”
বিগতদিনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারবারই বলেছেন, শিক্ষকদের বদলি নীতি কঠোর করা হবে। চাইলেন কোনও শিক্ষক বদলি নিতে পারবেন না। যে জেলায় তিনি চাকরি পেয়েছেন সেখানেই শিক্ষকতা করতে হবে।এই বিষয়ের ঠিক উল্টো বললেন মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সেটা একশ আশি ডিগ্রি উল্টো।
সরকারী নিদানে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের কয়েক হাজার শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে শিক্ষক অসন্তোষ সেটা ঠাওর করেই উল্টো পথে কিছুটা হাটতে চেষ্টা করতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা যে স্কুলের টিচার, ধরুন সেখানে দেখলেন অনেকজন আছেন। কিন্তু পাশেই একটা স্কুলে ছাত্র আছে অথচ সেখানে শিক্ষক নেই। আপনারা নিজেরা আলোচনা করে পাশের স্কুলে গিয়ে ক্লাসটা একটু করিয়ে দিন। এই সবটাই অ্যাডজাস্ট করে নিলেই হয়ে যায়।”
এই সভাতে হুগলির বাসিন্দা পুরুলিয়ার আদ্রার এক মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার অভিজ্ঞতার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রীকে , “এই মিউচুয়াল ট্রানসফার বা বোঝাপড়ার বদলিতে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। তিনটি শর্ত মানতে হয় বদলির ক্ষেত্রে। এক, যাঁর সঙ্গে যাঁর বদলাবদলি হবে, দু’জনের বিষয় এক হবে। অর্থাৎ দু’জনে একই বিষয়ের শিক্ষক হতে হবে। দুই, দু’জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এক হতে হবে। একজন পাস গ্র্যাজুয়েট আর অন্যজনের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে হবে না। তিন, দু’জনেরই চাকরি জীবন অন্তত দু’বছর হতে হবে।”
এই শিক্ষকের অভিজ্ঞতা ভালো নয় ডিআই থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরের , বেশ কয়েক মাস হল একাধিক জেলায় এই বদলি বন্ধ। ডিআই অফিস আবেদনপত্র খুলেও দেখছে না।শিক্ষকদের বেতন থেকে শিক্ষক ছাত্র রেশিও নিয়ে অনেক বিত্রিক আছে এছাড়া নতুন পাঠ্যক্রম নিয়েও বিভ্রান্তির শেষ নেয়। সব মিলিয়ে বিতর্কের গুঞ্জন সর্বত্র পাওয়া গেল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে।
এ দিনের অনুষ্ঠান থকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা মানবিক।ডিএ বা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকদের আন্দোলন লেগেই রয়েছে রাজ্যে। আমাদের যতটা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে দিচ্ছি। ভাববেন না, আমাদের আছে অথচ দিচ্ছি না। রাগ করবেন না।” পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যের যে অর্থনৈতিক সঙ্কট রয়েছে এটা সত্যি। তাঁদের মতে, এই ঘোষণার মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আসলে শিক্ষকদের অন্য দিক দিয়ে খুশি করতে চেয়েছেন। ঠিক যে ভাবে আকছার ছুটি ছাটা ঘোষণা করে রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের খুশি রাখার চেষ্টা করা হয়, তেমনই।