Entertainment

আচমকাই চার ধারাবাহিক বন্ধের সিদ্ধান্ত, ভয়ংকর ভবিষ্যতের দিকে স্টুডিয়োপাড়া ?

এই খবর চাউর হওয়ার পর দেখে নিন বাংলার টেলিপাড়ার অন্দরেরছবি।

প্রেরনা দত্তঃ করোনা আবহেই টেলিপাড়ার আকাশে দুর্যোগের ছাঁয়া। বন্ধের পথে একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিক। কালার্স বাংলা চ্যানেলের চারটি ধারাবাহিক বন্ধ করে দেওয়ার আচমকা সিদ্ধান্তের খবর মঙ্গলবার দুপুর থেকে চাউর হতে শুরু করে। টেলিপাড়ার খবর বলছে, চ্যানেলে চলতি চারটি ধারাবাহিক ‘নিশির ডাক’, ‘মঙ্গলচণ্ডী’, ‘কনককাঁকন’ এবং ‘চিরদিনই আমি যে তোমার’— এই চারটি ধারাবাহিক বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।

ফলে কেউ ফুঁসছেন রাগে। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। রাতারাতি অনিশ্চিত হয়ে পড়া ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় কারও রাতের ঘুম উড়েছে। বিশ্বাসঘাতকতার যন্ত্রণায় ছটফট করে কেউ বা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেও সরাসরি মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন। চ্যানেল সংস্থার অন্য ধারাবাহিক ডাব করে বাংলায় দেখানোর কথা হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেএই সংক্রান্ত খবর এবং ইমেল পৌঁছে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রযোজনা সংস্থাগুলির কাছে।

করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক ধাক্কাই যে এর মূল কারণ তা স্পষ্ট। বর্তমানে বিজ্ঞাপন কমে গিয়েছে সংবাদপত্রের। এরপর বিজ্ঞাপন কমার সমূহ সম্ভাবনা টেলিভিশনেও। ফলে বিজ্ঞাপন বাবদ যা আয় হতো সেই কোপ এসে পড়বে প্রযোজক, স্টুডিয়ো মালিক থেকে শুরু করে সব কলাকুশলীদের উপর।

১৮ মার্চ থেকে বন্ধ শ্যুটিং। যদিও ১২ মে এডিটিং এর অনুমতি এলেও শ্যুটিং কবে শুরু হবে তা স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। এছাড়াও শ্যুটিং ঘিরে জারি হয়েছে একাধিক সতর্কবার্তা। এই সব কিছু মেনে ফ্লোরে শ্যুটিং করা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়েছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। বাড়িতে থেকে মোবাইল ফোনে শ্যুটিং করে কিংবা জনপ্রিয় পুরনো সিরিয়ালের এপিসোড দেখিয়ে কতদিনই বা চলবে।

কাজ বন্ধের দু’মাস পরে রাতারাতি এমন সিদ্ধান্তে আকাশ ভেঙে পড়েছে ওই ধারাবাহিকগুলির সঙ্গে যুক্ত শিল্পী-কলাকুশলীদের অন্তত ছ’শোটি পরিবারের মাথায়। পরিচালক, গল্পলেখক, সংলাপ লেখকদের ঘিরে ধরেছে একরাশ হতাশা। ফেসবুকের দেওয়ালে মঙ্গলবার রাত থেকেই থেকে একের পর এক পোস্টে উঠে আসছে সেই ছবি। তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রতিবাদী হ্যাশট্যাগ #saynotodubbedserial। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ঘিরে ভয়ের ছবিটা উঠে এসেছে বাংলা টেলিভিশনের এক পরিচিত মুখের ফেসবুক পোস্টে,‘দু’দিন পর যখন আমরা খেতে পাব না, লজ্জায় তো কারও কাছে ধারও চাইতে পারব না। কারণ আমাদের লোকে চেনে।’

অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ” একটা সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে তো শুধু অভিনেতা-অভিনেত্রী বা টেকনিশিয়ান নয়, যারা তার পোস্ট প্রোডাকশন দেখে, যারা ফ্লোরে খাবার বা আসবাবপত্র জোগান দেয়- এমন সবকটা মানুষেরই ক্ষতি। সেখানে চার-চারটে সিরিয়াল বন্ধ হওয়া মানে কতগুলো মানুষের রুজির প্রশ্ন! এই লকডাউনে যেমন কারওরই কাজ নেই, তেমনি লকডাউন উঠলে কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে প্রত্যেকেরই পরিকল্পনা ছিল। সেখানে চ্যানেলের এমন একটা সিদ্ধান্ত এতগুলো মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে দিল।”

এটাও জানা গিয়েছে, ওই চ্যানেলের সঙ্গে এই সব ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সরাসরি কোনও চুক্তি নেই। বরং তাঁরা প্রযোজনা সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে ভয় বাড়ছে টেলিপাড়ায়। কালার্স বাংলার দেখানো পথে অন্য বাংলা বিনোদন চ্যানেলগুলিও হাঁটবে কি না, আশঙ্কা দানা বাঁধছে তা নিয়েও।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Back to top button

Discover more from Opinion Times - Bengali News

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading