গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন,টি-ব্যাগের মাধ্যমে শরীরে ঢুকছে কোটি কোটি বিষাক্ত প্লাস্টিক কণা

একটি টি-ব্যাগের থেকেই চায়ের সঙ্গে মেশে ১,১০০ কোটি (১১ বিলিয়ন) মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ৩০০ কোটি ন্যানোপ্লাস্টিক কণা,দাবি সমীক্ষায়।

সায়ন্তনী রায় : চায়ের নেশা সবারই থাকে। কেউ শুধু সকালে খায় আবার কেউ সন্ধে বেলাতেও খায়। সকালবেলায় মোটামুটি সবারই ঘুম থেকে উঠে এক কাপ গরম চায়ে চুমুক দিতে লাগে।অফিস চত্বরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চায়ের তেষ্টা মেটাতে টি-ব্যাগের উপরেই ভরসা করতে হয় বেশির ভাগ চাকুরিজীবী মানুষকে।এ ছাড়াও যাঁরা বাড়িতে চটপট চায়ের তেষ্টা মেটাতে চায় তারা অনেকেই টি-ব্যাগের উপরেই ভরসা রাখেন। তবে এই টি-ব্যাগগুলি চায়ের কাপে ডোবানোর আগে একটু খেয়াল করে দেখুন, টি-ব্যাগগুলি প্লাস্টিকের তৈরি নয় তো।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নাথালি টুফেঙ্কজি পরীক্ষা করে দেখেন, প্লাস্টিক উপাদান মিশ্রিত টি-ব্যাগগুলি গরম জলে ডোবালে সেগুলি থেকে গরম চায়ের মধ্যে অসংখ্য প্লাস্টিকের কণা মিশে যায়। তিনি ও তাঁর সহকারী গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন, একটি টি-ব্যাগের থেকেই চায়ের সঙ্গে মেশে ১,১০০ কোটি (১১ বিলিয়ন) মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ৩০০ কোটি ন্যানোপ্লাস্টিক কণা। চলতি মাসেই ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’  নামের মার্কিন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এসেছে। অধ্যাপক টুফেঙ্কজি জানান, বেশ কয়েকটি সংস্থা কাগজের পরিবর্তে প্লাস্টিক উপাদান মিশ্রিত টি-ব্যাগ বানাচ্ছে। আর এই সব টি-ব্যাগ থেকেই আমাদের শরীরে ঢুকছে প্লাস্টিকের বিষ। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে কার্সিনোজেনের উপস্থিতিও লক্ষ্য করেছেন তাঁরা।

অধ্যাপক টুফেঙ্কজির মতে, টি-ব্যাগে যে পিনের সাহায্যে সুতো আটকানো থাকে, সেই পিনও আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।ফুড সেফটি অ্যান্ড স্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এফএসএসআই-ও এ বিষয়ে অধ্যাপক টুফেঙ্কজির সঙ্গে একমত হয়ে টি-ব্যাগের পিনের বিকল্প খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে চা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকও টি-ব্যাগ ব্যবহারে বিপদের আশঙ্কা করছেন। নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এক সপ্তাহে একজন ব্যক্তির শরীরে প্রায় ৫ গ্রাম প্লাস্টিক প্রবেশ করে টি-ব্যাগের সাহায্যে। তাই টি-ব্যাগে ব্যবহৃত উপদান সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

Exit mobile version