চিঁড়ে ভাজা আর বোতলের জল কি ২ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে !
এবারে অসহায় শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ালো পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা
পল্লবী : দিনের পর দিন আর কত কষ্টই বা করবেন এই অসহায় মানুষগুলো। এরাই যে দেশের ভবিষ্যৎ তা কি একবারও ভাবছে রাজ্য তথা কেন্দ্র। দিন রাত এক করে এই মানুষ গুলোই দেশের শিল্প, কলকারখানা, সংস্কৃতির ধারা কে বজায় রেখেছে। দেশের অর্থনীতির মূল কান্ডারি যে এই শ্রমিকেরাই তা হয়তো ভুলে গেছে সরকার। দেশের জন্য যারা প্রাণপাত করে তাদের জন্য দেশ সামান্যতম সুবিধা এনে দিতে পারছেনা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বেঘোরে প্রাণ হারাতে হচ্ছে যারা এই মুহূর্তে দেশ জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিক বলে খ্যাত।
পেতে খিদের হাঁড়ি হা হয়ে আছে, সামান্য জল টুকুও নেই যে গলাতা অন্তত ভেজাবে। ক্লান্ত শরীরে আর কত লড়বে তারা। তবুও তাদের পথ চলতেই হবে। ১০ দিন আগে উত্তর প্রদেশ থেকে হাঁটা পথে রওনা দিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক। রেললাইন ধরে তারা উত্তরপ্রদেশ থেকে বিহার হয়ে অবশেষে বাংলায় প্রবেশ করেন। ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মানবিক পুলিশের দেখা পেলেন অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকরা।
খাদ্যসামগ্রী বলতে ব্যাগে ছিল চিঁড়ে ভাজা আর বোতলে জল। তাই নিয়েই রওনা দিয়েছিলেন ২৫ জনের এই দলটি। তিন দিনেই সেই চিঁড়ে শেষ হয়ে যাওয়ায়। পেটে খিদে নিয়ে এই পথ চলতে হয় তাদের। রাস্তায় ভিক্ষার্তীদের মতো বার বার হাত পাতলেও এই নির্বোধ সমাজে মেলেনি সামান্যতম সাহায্য। অবশেষে মালদহের সামসী হয়ে একলাখী বালুরঘাট রূপের লাইন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রবেশ করেন তারা। জেলার দেওতলা নিকট পুলিশ তাদের দেখতে পেয়ে লাইন থেকে নামিয়ে পাশের গাছের ছায়ায় বসায়। পরিযায়ী অসহায় এই শ্রমিকদের হাতে জলের বোতল ও মুড়ি ছিঁড়ে খেতে দেয় কর্তব্যরত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা।
কতদিন আর এইভাবে চলতে পারে গোটা দেশ। রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ব্যাস্ত কিন্তু যারা আসল খুঁটি তাদের দিকেই কোনো লক্ষ্য নেই কি অদ্ভুত গোটা সমাজ। বার বার সাহায্য চেয়েও তারা বার্থ। শেষে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের দেখা মিললে তারা কিছুটা স্বস্তি পায় এবং তাদের নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্র রশিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় সেখানে কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা শেষ হলেই তাদের নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।