দীর্ঘবছর ধরে ১৮২জন মহিলার সাথে চলতে থাকে প্রেমের অভিনয়, গোপনে বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও তুলে করত ব্ল্যাকমেল।
এক ভয়ঙ্কর ব্যবসার ফাঁদ পেতেছিল দুই যুবক, তবে অবশেষে আটক পুলিশের জালে।
@ দেবশ্রী : খানিক যেন সিনেমার গল্প। প্রথমে প্রেমিকার সাথে প্রেমের অভিনয়, তারপর শারীরিক সম্পর্ক, আর তারপর তাঁদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও তুলে ব্ল্যাকমেলিং। অবশ্য এই ঘটনা আজকের দিনে আর সিনেমাতেই সীমাবদ্ধ নেই। বাস্তবে এ যেন, নিত্যদিনের অভ্যেস থেকে ব্যবসায় পরিণত হয়েছিল আদিত্য আগরওয়াল এবং অনীশ লোহারকারের। গোটা ঘটনা সামনে আসার পর উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জন্য যায় কমপক্ষে ১৮২ জন মহিলার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ,এমন ভিডিও জমিয়ে ফেলেছে তাঁরা।
জানা গিয়েছে, ওইসব মহিলাদের কাছ থেকে রীতমতো ব্ল্যাকমেলিং করে টাকা আদায় করত তাঁরা। কলকাতার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান বলেই পরিচয় পাওয়া গিয়েছে ওই দুই যুবকের। পেশায় তারা ব্যবসা করত বলেও জানা গিয়েছে। আর তাদের ফাঁদে পড়েছেন অন্তত ১৮২জন মহিলা। স্কুল জীবন থেকেই তারা হাত পাকিয়েছিল পর্ন তৈরির কাজে। গত ৬ বছর ধরে নিখুঁতভাবে এই চক্র চালানোর পর চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পুলিশের জালে ধরা পড়ে দুই অভিযুক্ত।
ঘটনার তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ওরা বন্ধুদের মধ্যেও ভিডিও আদানপ্রদান করত। আর এই কার্যে ওদের সঙ্গে যুক্ত ছিল কৈশাস যাদব বলে আরও একজন যুবক। এই কৈশাস যাদব লোহারকার বাড়িতে রান্নার কাজ করত। গ্রেফতার করা হয়েছে তাকেও। তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশ ১০টি ধারায় মামলা দায়ের করেছে। ওই ১৮২ জন মহিলাকেই নিয়মিত ব্ল্যাকমেল করে টাকা তোলা হত। তাঁদের প্রত্যেকের নামে একটি করে ফোল্ডার পর্যন্ত বানিয়ে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। আর প্রতিটা ফোল্ডারেই বিভিন্ন মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্করত অবস্থায় রয়েছে ভিডিও।
অবশ্য নিজেদের বাড়ির ছেলেদের বাঁচাতে একসাথে ২২জন আইনজীবীকে নিযুক্ত করেছে আদিত্য ও অনীশের পরিবার। জানা গিয়েছে, আদিত্যের পরিবার একটি জনপ্রিয় পোশাকের ব্র্যান্ডের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে, লোহারকা পরিবারের কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় হোটেল ব্যবসা রয়েছে।
আদিত্যদের শিকার হওয়া মহিলারা জানিয়েছেন তাঁদের কেউ কেউ ভিডিও করার সময় ‘মজা’ করে সম্মতি দিতেন। আবার কখনও বা লুকিয়ে করা হত ভিডিও রেকর্ড। গত বছর নভেম্বর মাসে একজন বিবাহিত মহিলা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই দুজনের বিরুদ্ধে। এফআইআরও দায়ের করা হয়। তবে অভিযোগ জানানোর পরেই, অপরিচিত একজন ফোন করে ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাঁর কাছে। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, ওই টাকা না দিলে ভিডিওটি অনলাইনে আপলোড করে দেওয়া হবে। মহিলা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে ওই দুজনের নামে এফআইআর (FIR) করেন। তারপরই এই ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নামে। অবশেষে জালে পড়ে ওই দুই অভিযুক্ত যুবক।