দীর্ঘ পথ, মাঝ রাস্তাতেই চোট পায় সন্তান ! বাঁশের স্ট্রেচার বানিয়েই পাঞ্জাব থেকে মধ্যপ্রদেশের পথে হেঁটে যায় অসহায় পরিবার
না আছে টাকা, না মিলছে খাবার, না সামান্য পায়ের চটি, কিন্তু তাতেই হেঁটে যেতে হল দীর্ঘ পথ
@ দেবশ্রী : পেটের জ্বালা এক বড় জ্বালা। .মানুষের খিদেই মানুষকে মেরে ফেলে। এই লকডাউনে বন্ধ সকল কাজ। হচ্ছে না রোজগার। তবু বাড়ি তো ফিরতেই হবে। তাই কোনও দিক না ভেবে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে শুরু হয়েছিল পথচলা। অতিক্রম করতে হবে ১৩০০ কিলোমিটার। কোনও দিন খাওয়া জুটেছে, কোনও দিন বা জোটেনি। তার মধ্যেই পরিবারের এক সদস্য মাঝরাস্তায় পড়ে গিয়ে ঘাড়ে গুরুতর আঘাত পান।
১৭ জনের একটি পরিবার পঞ্জাবের লুধিয়ানা মধ্যপ্রদেশের সিংগ্রাউলি যাওয়ার জন্য পথ চলতে শুরু করেন দিন ১৫ আগে। কিন্তু মাঝপথে পড়ে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হয় পরিবারের এক সন্তান। না আছে তাঁদের কাছে চিকিত্সা করানোর টাকা, আর না আছে সেই পরিস্থিতি। ফলে সাতপাঁচ ভেবে সকলে মিলে বাঁশ ও খাটিয়া দিয়ে একটি স্ট্রেচার বানিয়ে সেখানে তাকে শুইয়ে ফের হাঁটতে শুরু করেন। তবে কানপুরে পৌঁছনোর পরে অবশ্য পুলিশ তাঁদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
জানা গিয়েছে, লুধিয়ানাতে দিনমজুরের কাজ করতেন ওই পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু লকডাউন, তাই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। খাবারও বেশি মজুত ছিল না। সাথে কোনো টাকা ছিল না। ফলে হেঁটেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সেইমতো ১৫ দিন আগে হাঁটা শুরু করেন। কিন্তু পথেই গুরুতর চোট পায় ওই কিশোর। তাঁকে নিয়ে ফিরতে হবে, তাই নিজেরাই স্ট্রেচার বানিয়ে তার উপর ওই কিশোরকে শুইয়ে হাঁটতে শুরু করেন। টানা ১৫ দিন হেঁটে কানপুর পৌঁছন তাঁরা।
পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, ১৫ দিন ভাল করে খেতে পাননি তাঁরা। অনেকের পায়ে চটিও নেই । ফলে তাঁরা খালি পায়েই পেরিয়েছেন এই দীর্ঘ পথ। এরপর অবশ্য কানপুর পুলিশের তরফে তাঁদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়। পরিবারের সদস্যদের চটিও কিনে দেয় পুলিশ। এরপর বাড়ি ফেরার জন্য ট্রাকের ব্যবস্থা করা হয়। তাতেই বাকি পথ পাড়ি দেবেন তাঁরা।