ফ্রিজে কতদিন বেঁচে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস,জানেন?
ডক্টর গ্রিনের দাবি, "করোনাভাইরাসের প্রকৃতি কিছুটা স্যাঁতস্যাতে ধরনের। নানা তলে বেশ কিছু সময়ের জন্য বেঁচে থাকতে পারে এই ভাইরাস।"
প্রেরনা দত্তঃ করোনাভাইরাস দিন দিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস বিশ্বে ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।ভারতের মতোই বিশ্বের বেশ কিছু প্রান্তে এই মুহূর্তে চলছে লকডাউন। আর সেই লকডাউনের কারণেই আর্থিক ভরাডুবিও নানান দেশে প্রকট হচ্ছে। সুতরাং সেই আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে ধাপে ধাপে লকডাউন উঠেও যাবে অনেক দেশেই। কিন্তু এই মারণ ভাইরাস কি আমাদের ছেড়ে যাবে? একদমই না!
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থামছেই না। সংক্রমিত ব্যক্তির মাধ্যমে মানুষ থেকে বস্তু সবখানেই ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। এমনকি ঘরের ফ্রিজটিও নাকি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এমনই তথ্য দিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্ববিখ্যাত ভাইরোলজিস্ট ডক্টর ওয়ার্নার গ্রিন।
জামা, জুতো থেকে শুরু করে খবরের কাগজ, টেবিল-চেয়ার, দরজা-আলমারির হাতল- এসব রকমারি জিনিস থেকে কী করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা কতটা? আর আপনার ফ্রিজ? আপনার ফ্রিজের অন্দরে করোনাভাইরাস জীবন্ত অবস্থায় কতক্ষণ লুকিয়ে থাকতে পারে জানেন?চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি WHO (World Health Organization)-এর তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, -২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে অন্যান্য করোনাভাইরাসগুলি কমপক্ষে দুই বছরের জন্য বেঁচে থাকতে পারে।
কিছু দিন আগেই সংবাদমাধ্যম NBC Bay Area-র তরফে একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, অপেক্ষাকৃত কম তাপমাত্রায় অর্থাৎ ফ্রিজের অন্দরের যে তাপমাত্রা সেখানে কমপক্ষে ২৮ দিনের জন্য টিকে থাকতে পারে SARS-CoV ভাইরাস। আর এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, ২০১০ সালের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবাইলজি-র (American Society For Microbiology) একটি গবেষণার ভিত্তিতে। তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার হেরফেরে SARS করোনাভাইরাস যা COVID-19 ভাইরাসের (SARS-CoV-2) সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত, তার উপর রিসার্চ চালিয়ে দেখা হয়েছে আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবাইলোজির তরফে।
বিশ্ববিখ্যাত ভাইরোলজিস্ট এবং গবেষণা বিজ্ঞানী ডক্টর ওয়ার্নার গ্রিনে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। ডক্টর গ্রিনের দাবি, “করোনাভাইরাসের প্রকৃতি কিছুটা স্যাঁতস্যাতে ধরনের। নানা তলে বেশ কিছু সময়ের জন্য বেঁচে থাকতে পারে এই ভাইরাস।” ২০১০ সালের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবাইলজি-র করা ওই গবেষণার অঙ্গ ছিলেন না ডক্টর গ্রিনে। তবে তিনিও ওই গবেষণায় উঠে আসা তথ্যের সঙ্গেই কিছুটা একমত। ডক্টর গ্রিনের কথায়, “আসল বিষয়টা হচ্ছে কখনও বাজার বা দোকান থেকে কিনে আনা যে কোনও বস্তু ফ্রিজে ভরতে হলে আগে সেটাকে খুব ভালো করে জীবাণুমুক্ত করা উচিত।
তাই তিনি বলেন বাজার বা মাসকাবারি জিনিসপত্র ভালো করে জীবাণুমুক্ত করেই ফ্রিজে ঢোকাতে হবে। একটি বালতিতে অ্যালকোহল যুক্ত কোনও স্যানিটাইজারের সাহায্যে জীবাণুমুক্ত করার তরল তৈরি করতে হবে।৪ লিটার জলের সঙ্গে ১/৩ কাপ ব্লিচ মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করে নিন। এই উপায় না পেলে গরম জলে কিছুটা সাবান ফেলে দেওয়ার কথাও বলছেন গ্রিনে।এই মিশ্রণে একটি শুকনো তোয়ালে ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে।এবার ফ্রিজে যে খাবারের বাক্স বা প্যাকেটগুলি রাখবেন খুব ভালো করে সেগুলিকে ওই তোয়ালে দিয়ে বেশ ভালো করে কয়েকবার পরিষ্কার করতে হবে।যে ভাবে টেবল বা অন্য কোনও তল জীবাণুমুক্ত করা হয়, সেই ভাবেই জীবাণুমুক্ত করতে হবে খাবারের প্যাকেটগুলির তল।
প্রতিনিয়ত নিয়ম করে ফ্রিজের কন্টেনারগুলিকে জীবাণুমুক্ত করে যেতে হবে এই পদ্ধতিতেই।
প্রতিবার জীবাণুমুক্ত করার পর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে হাত। ধুয়ে ফেলতে হবে বাজারের থলিও।