OT MARKET

লকডাউনের সময়ে যখন রুটি-রুজি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে,,তখন এক ধাক্কায় ট্রেনের ভাড়া বাড়ল 720 টাকা

ঘরে ফিরতে মরিয়া যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ায় প্রশ্নের মুখে রেলের ভূমিকা। এই ট্রেনে কোনও ক্যাটারিং ব্যবস্থা থাকছে না

প্রেরনা দত্তঃ হাওড়া থেকে নয়া দিল্লির স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছিল মাত্র তিন মিনিটে। দীর্ঘ লক ডাউনের কারণে যারা বিভিন্ন জায়গায় আটকে ছিলেন তাদের ফেরানোর জন্য টিকিটের এত চাহিদা। রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে প্রথম থেকেই ডায়ানমিক ফেয়ার নেওয়া হচ্ছে স্পেশাল ট্রেনে।

হাওড়া থেকে নয়া দিল্লির এসি প্রথম শ্রেণীর ভাড়া নেওয়া হয়েছে 4595 টাকা। দ্বিতীয় শ্রেণীতে নেওয়া হয়েছিল 2700 টাকা।তৃতীয় শ্রেণীতে নেওয়া হয়েছিল 1900 টাকা।
আজ তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া বেড়ে হলো 2600 টাকা। অর্থাত্‍ এক ধাক্কায় টিকিটের দাম 700 টাকা বাড়ল। পাটনা এসে স্পেশাল তৃতীয় শ্রেণীতে ভাড়া ছিল 1520 টাকা। তা বেড়ে হয়েছে 2090 টাকা। ফলে ভাড়া বাড়ল 570 টাকা।

যেহেতু এই ট্রেনে কোনও ক্যাটারিং ব্যবস্থা থাকছে না তাই তার মূল্য ছেড়ে রাখা আছে টিকিটের দামের সাথে। তবে রবিবার থেকে যে টিকিট বিক্রির হার অনেকটাই বেশি। ফলে যাত্রীদের প্রশ্ন, এই লকডাউন পরিস্থিতিতে এত টাকা নেওয়া কি আদৌ যুক্তিযুক্ত?

পাল্টা যুক্তিতে রেলের দাবি, শুরু থেকেই বলা হয়েছে ওই ট্রেনগুলিতে রাজধানী ধাঁচের ভাড়া লাগবে। রাজধানী ধাঁচের ভাড়ার মধ্যে ডায়নামিক ফেয়ার-ও অন্তর্ভুক্ত থাকে। সেই কারণে ওই বাড়তি অর্থ নেওয়া হচ্ছে। যদিও শুরুর দিন থেকে কেন ডায়নামিক ফেয়ার নেওয়া হল না, তা নিয়ে মুখ খোলেনি রেল। তবে রেলের একটি সূত্রের দাবি, করোনা-সঙ্কটে বিশেষ পরিষেবা দিচ্ছে রেল। চালানো হচ্ছে বিশেষ ট্রেন। যাঁদের জরুরি প্রয়োজন রয়েছে, একেবারে না গেলেই নয়, তাঁদের কথা ভেবেই ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আমজনতার কথা ভেবে ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আমজনতা যাতে প্রয়োজন ছাড়া ট্রেনে না চড়েন, তাই তাঁদের নিরুৎসাহিত করতেই রাজধানীর ধাঁচে ভাড়া ধার্য করা হয়েছে।

হাওড়া থেকে নয়াদিল্লি স্পেশাল ট্রেনের প্রথম দিনের টিকিট সব বিকিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৩ মিনিটে। যে ১৫ টি রুটে স্পেশাল ট্রেন চলছে সেগুলির প্রথম সাত দিনের টিকিট মাত্র ১ ঘন্টাতে বিকিয়ে গিয়েছিল। ফলে দীর্ঘ লকডাউনের জেরে যারা আটকে ছিলেন তাদের ফেরার কারণে টিকিটের চাহিদা হল প্রবল। আর এই ১৫টি রুটেই দৌড়ে বেড়ানো স্পেশাল ট্রেন এবার ডায়ানামিক ফেয়ারেই চলছে। ফলে প্রথম দিনে যে টিকিটের দাম ছিল, ছয় দিন পরে সেই টিকিটের দাম অনেকটাই বাড়ল।

এর মধ্যেই সম্প্রতি রাজ্যের কোয়ারেন্টাইন বিধি না মানায় এক ব্যক্তিকে দিল্লি-বেঙ্গেলুরু স্পেশাল ট্রেনে নেওয়া হয়নি। তখন থেকেই চলছে নতুন নিয়ম কার্যকর করার চিন্তাভাবনা। বলা হয়েছে টিকিট কাটার সময়েই একটি পপ আপ আসবে স্ক্রিনে। সেখানেই জানতে চাওয়া হবে সাম্ভব্য যাত্রী সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি এবং কোয়ারেন্টাইন প্রোটোকল মেনেছেন কি না। টিকিট কাটতে গেলে সেই প্রশ্নের উত্তরে ‘ওকে’ বোতাম টিপতে হবে যাত্রীকে।

সরাসরি রেলের ভাড়া বাড়াতে রাজি নয় কেন্দ্র। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুরপাল্লার ট্রেনে সাময়িক ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও তার প্রভাব খুব একটা নেই। যদিও এই মুহূর্তে রেলের যা অপারেটিং রেশিও তাতে আয় ও ব্যায়ের মধ্যে সমতা রাখতে ভাড়া বাড়ানো জরুরি বলেই মনে করেন মন্ত্রকের আধিকারিকরা। সরাসরি ভাড়া বহুগুণ না বাড়ালেও ২০১৫ সালে রেল ডায়ানমিক ফেয়ার চালু করে দেয়। এর ফলে ট্রেনে প্রথম ১০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হওয়ার পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিটের দাম বাড়তে থাকে, যার জেরে এসি ট্রেনের তৃতীয় শ্রেণির টিকিটের দাম বিমানের দামের সাথে তুল্যমুল্য হয়ে যায় অনেক সময়। অনেক সময় এই কারণে ট্রেনে কমেছে যাত্রী সংখ্যাও।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Back to top button

Discover more from Opinion Times - Bengali News

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading