অতিমারীতে “আবদ্ধ” জীবনের মুক্তির পথ দেখালো বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব কমিটির
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভুক্তভুগি মানুষের বেহাল ছবি তুলে ধরলো বেলগাছিয়া দুর্গোৎসব

শর্মিষ্টা বিশ্বাস : বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।এই পুজোর আনন্দের ভাগ দিতে নারাজ বাঙালি। ঢাকি কাঠিও পড়লো বলে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত মানুষের হাহাকার যেন ঢাকের বোলকেও ক্ষীণ করে দিয়েছে। এই প্যান্ডেমিক অবস্থায়ে সমাজের বিভিন্ন দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের থমকে যাওয়া নৃশংস জীবনের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরতে চলেছেন বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব কমিটি। হ্যাঁ, এদের চলতি ৭৩ তম বর্ষের থিম “আবদ্ধ”। দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ কর্মসংকট, অর্থনৈতিক মন্দা, অনাহার, হতাশার মতো দুর্দশায়ে ভুক্তভুগী মানুষের জীবন হঠাৎ করেই যেন স্থীর হয়ে গেছে। সমস্ত প্যান্ডেলে একটু অসম্পূর্ণতার ছোঁয়া থাকছে, ঠিক যেভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের ছন্নছাড়া জীবনটা অসম্পূর্ণ। তবে মাই মুক্তির পথের দিশারী হবেন মানুষের এই আবদ্ধ জীবনের। একমাত্র প্রতিমাতেই সম্পূর্ণতার প্রতীকী মিলবে। মায়ের কাছেই এই প্যান্ডেমিক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার সাহস, লড়াই করার মনের জোর পাবেন মানুষ। শিল্পী সোমনাথ দলুই এর হাত ধরেই রূপায়িত হয়েছে এবারের ভাবনা।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বাজেট অনেকটাই কম, আনুমানিক ১৫ লাখ, এমনটাই জানিয়েছেন বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব কমিটির কর্মকর্তা জয়দীপ সাহা। আম্ফান রিলিফ ফান্ডে ত্রাণ দেন এর মতোই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সমাজকল্যাণ এবং সমাজের সুরক্ষা বিধি নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক কমিটির সদস্য। প্যান্ডেলের সুরক্ষা ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখেই প্যান্ডেলে ৮-১০ জনের বেশি প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। যারা মণ্ডপে ঢুকতে চাইবে না তাদের জন্য মণ্ডপের বাইরে থেকেই থাকবে প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জা দেখার ব্যবস্থা। যারা মাস্ক পরে আসবেন না তাদের বিনামূল্যে মাস্ক প্রদান করা হবে. এছাড়াও অঞ্জলির সময়ে যে চাইবেন নিজের অঞ্জলীর ফুল নিজেই নিয়ে আসতে পারবেন, অথবা যারা বাড়িতে বসে পুষ্পাঞ্জলি দিতে চান তাদের জন্য মাইকে মন্ত্রোচ্চারণ করা হবে এবং প্রতিমা বরণের সময়েও একত্রিত হয়ে মাকে বরণ করা যাবেনা, কেবলমাত্র রীতি রেওয়াজের কারণে কিছু মানুষকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। ফলে অসুবিধে একটিই যে পূজা প্রক্রিয়াটি অনেকটা সময়ঘটিত বেপার হবে।
এতরকম অসুবিধে, সতর্কতা সব মেনে পুজোর পরেও বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব কমিটি দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী। তবে কমিটির কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের সুরক্ষা কমিটির প্রচেষ্টা ছাড়াও নিজেদেরও তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।