কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুরে রাস্তায় বাম-কংগ্রেস ও তৃণমূল সরকার
কৃষক সংগঠন গুলি দিয়েছে ধর্মঘটের ডাক, মানছে না তারা এই বিল
দেবশ্রী কয়াল : কৃষি বিল পাসের ক্ষেত্রে বহু বিরোধিতা করেছে বিরোধী দল গুলি। আর এবার কৃষি বিলের বিরোধিতায় পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে বাম এবং কংগ্রেস। এই দুই দলের নানা সংগঠন ইতিমধ্যেই কৃষি বিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমে পড়েছে। এবং এবার তারা বৃহত্তর আন্দোলের পরিকল্পনা নিয়েছে। গত রবিবার সংসদে পাশ হয়ে যাওয়া কৃষি বিলকে ‘কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা’ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। আর এখন ওই বিলের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আন্দোলন করার পরিকল্পনা করেছে কংগ্রেস ও ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন। এবং হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এরাজ্যেও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছে কংগ্রেস। জেলা পর্যায় থেকে শুরু হচ্ছে কৃষি বিল এর বিরুদ্ধে আন্দোলন।
সূত্রের খবর, আগামী ২রা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধী এবং লালবাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মদিনে কংগ্রেসের তরফ থেকে কৃষক ও কৃষি শ্রমিক বাঁচাও দিবস পালন করা হবে। প্রত্যেক রাজ্যের জেলা সদরগুলিকে এই আন্দোলনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানও চালানো হবে। জানা যাচ্ছে প্রায় ২ কোটি কৃষকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে জনহরলাল নেহরুর জন্মদিন ১৪ই নভেম্বর তুলে দেওয়া হবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাতে।
গতকাল সোমবার কৃষি বিলের প্রতিবাদে রাজভবনের সামনে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে যুব কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল এবং কৃষি বিলের প্রতিলিপি পোড়ানোও হয়েছে ওই বিক্ষোভে। এদিকে, কৃষিকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার নীতির প্রতিবাদে বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধ এবং দেশ জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আর তাঁদের এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানাচ্ছে সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-সহ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।
সূত্রের খবর, কৃষিদের এই বৈঠকে তাঁরা থাকবেন এমনটাই ঠিক হয়েছে বামফ্রন্টের বৈঠকে। বিভিন্ন অংশের মানুষ ও সংগঠনকে নিয়ে ২৫ তারিখ ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত যে মিছিলের ডাক দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি, সেই মিছিলে পা মেলাবেন তাঁরাও। একথা স্বয়ং জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। এছাড়াও তাঁরা নিজেরাও এই কৃষি বিল এর বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলের পরিকল্পনা করছে, বলেই মিলছে খবর।
শুধুমাত্র কংগ্রেস এবং বাম দল না, এই ইস্যুতে পথে নামার ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূলও। গতকাল সোমবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কৃষি বিল এবং ‘গণতন্ত্র-হত্যা’র সর্বাত্মক প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন।তৃণমূলের মহিলা সংগঠন আজ মঙ্গলবার মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না-অবস্থানে বসবে। বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ শহরে মিছিল করে মেয়ো রোডেই প্রতিবাদ সভা করবে। অর্থাৎ তিনটি বড় বিরোধী দলই নামছে রাস্তায় কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। এখন দেখার বিষয় এই বিল, আইনে পরিণত হয় কী না।