ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে অব্যর্থ ওষুধ আমলকি
আমলকি দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, তাই শীতে আমলকি অতি আবশ্যক

পল্লবী কুন্ডু : গরম থেকে শীতের, ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা লাগার একটা ভয় থেকেই যায়। তারমধ্যে এখন বৃষ্টির আবহাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের। তাই এই সব কিছুর মাঝে নিজের শরীরকে সুস্থ রাখা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।তবে শীতের শুরুতেই নিয়মিত আমলকি (Amaloki) খাওয়া শুরু করলে শরীরে প্রচুর মাত্রায় প্রবেশ ঘটবে ভিটামিন সি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং সোডিয়াম।যা আপনাকে ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে তো রাখবেই পাশাপাশি যে কোনো বড়ো অসুখ থেকেও রক্ষা করবে।
তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক সুস্থ থাকতে আমাদের কিভাবে সাহায্য করে এই আমলকি – প্রথমত, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমলিকতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরে প্রবেশ করার পর দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে সহজে কোনো রোগ আপনার শরীরকে কাত করতে পারবেনা। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানও বের করে দেয়। পাশাপাশি, আপনার দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে আমলকি। সারাক্ষণ কম্পিউটার-মোবাইল ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু সেই ক্ষতি এড়াতে রোজকার ডায়েটে আমলকি থাকা অবশ্যই জরুরি। আসলে এই ফলে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন খেল দেখায় যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে চোখ থেকে জল পরা, চুলকানি এবং চোখ ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত এক গ্লাস আমলা রসে পরিমাণ মতো আদা এবং মধু মিশিয়ে খেলে গলার ব্যথা তো কমেই, সেইসঙ্গে কফ এবং সর্দি-কাশির প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। তাই এমন ঠান্ডা-গরম পরিস্থিতিতে গলা ব্যথা শুরু হলে আমলকির রসকে কাজে লাগাতে দেরি করবেন না। নিয়মিত ভাবে যদি আমলকি খেতে পারেন, তাহলে বদহজম নিয়েও আর কোনো চিন্তা থাকবে না। কারণ এই ফলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার। এটি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এই আমলকি কিন্তু আপনার ত্বকের জৌলুস ধরে রাখতেও সাহায্য করে। আমলকিতে এমন কিছু খনিজ এবং উপাকারি ভিটামিন আছে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ত্বকের ভেতরে জলের ঘাটতি দূর করে। সেই সঙ্গে পুষ্টির চাহিদাও মেটায়। ফলে ধীরে ধীরে ত্বক উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। পাশাপাশি আমলকিতে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-এজিং প্রপার্টিজ শরীরের উপর বয়সের চাপ পড়তেই দেয় না। তাই শরীরকে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যদি চনমনে রাখতে চান, তাহলে আমলকি দিনে একবার অবশ্যই খেতে হবে। অন্যদিকে, আমলকিতে ক্রোমিয়াম নামে একটি উপাদান থাকে, যা ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার সুযোগই পায় না।
আপনি হয়তো শুনলে অবাক হবেন, ক্যানসারের মতো দূরারোগ্য রোগ প্রতিরোধেও সক্ষম আমলকি। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের বের করে দিয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে এতটাই বাড়িতে তোলে যে কোনো জীবাণুই শরীরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ওয়েদার চেঞ্জের সময় সর্দি-কাশির ভয়ও দূর হয়।তাই এবার খাদ্য তালিকায় আমলকি অবশ্যই যোগ করুন।