অনলাইনে সিনেমা মুক্তি নিয়ে মাল্টিপ্লেক্স সংস্থার ক্ষোভ, রুষ্ট প্রোডিউসার্স গিল্ড
৯,৫০০-র মত সিনেমা হল ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ থাকায় বিরাট লোকসানের মুখে পড়েছে বলিউড
প্রেরনা দত্তঃ লকডাউনের প্রভাব পড়েছে বলিউডেও। ৯,৫০০-র মত সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ, ফলে বড় পর্দায় কোনও ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ৭টি ছবির নির্মাতা ঠিক করেছেন, তাঁদের ছবি সরাসরি কোনও ওভার দ্য টপ বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়াবেন তাঁরা। এই ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে অমিতাভ বচ্চন ও বিদ্যা বালানের মত সুপারস্টারের ছবিও।অমিতাভ বচ্চন এবং আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত ‘গুলাবো সিতাবো’ অ্যামাজ়ন প্রাইমে মুক্তি পাবে জুনের প্রথম দিকে। শুক্রবার জানানো হল, বিদ্যা বালন অভিনীত বায়োপিক ‘শকুন্তলা দেবী’ও মুক্তি পাবে ওই একই প্ল্যাটফর্মে।
সিনেমার অনলাইন মুক্তি নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইনক্স, পিভিআর-এর মতো দেশের অন্যতম মাল্টিপ্লেক্স সংস্থাগুলি। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মাল্টিপ্লেক্স সংস্থার তরফে মুখ খোলার পরই পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে প্রডিউসার্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া।
INOX থিয়েটার চেনের তরফে ট্যুইটে বলা হয়েছে, ‘থিয়েট্রিকাল উইন্ডো রানেরপথে না হেঁটে সরাসরি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এই ছবি মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত প্রযোজকরা নিয়েছেন তাতে আমরা খুবই অসন্তুষ্ট। সারা বিশ্বে যে নিয়ম চলে আসছে, তা না মেনে এই পদক্ষেপ খুবই চিন্তার এবং তা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। এমন কঠিন সময়ে এটা দেখে খুবই খারাপ লাগছে যে পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক থেকে এভাবে একপক্ষ বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংকটের মোকাবিলা করা উচিত ছিল, সেই সময়ে এমন পদক্ষেপ সম্পর্কের সব সমীকরণই বদলে দিল।’
একই সঙ্গে আইনক্সের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে প্রত্যেক স্টেকহোল্ডারকে যাতে থিয়েটারে ছবি মুক্তির রীতি পালটে ফেলে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দিকে তাঁরা না ঝোঁকেন।অন্যদিকে প্রডিউসার্স গিল্ডের তরফে জানানো হয়, ”আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিক দিক থেকে চরম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই সময় প্রডিউসার্স, ডিস্ট্রিবিউটার্স, এক্সিবিটর্স এবং দৈনিক রোজগেরে কলাকুশলী সকলের পাশেই দাঁড়াতে হবে। আর এই পরিস্থিতিতে প্রযোজকরা ভয়ঙ্কর আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের অনেক টাকা আটকে রয়েছে। এদিকে সিনেমার ব্যায়বহুল সেট করা হয়েছে। যাতে সুদের ব্যায়ও বেড়েই চলছে। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতিতে সিনেমার ভবিষ্যৎ-ই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রেক্ষাগৃহগুলি ফের কবে খুলবে সেটাও অনিশ্চিত। তাই যে টাকা সিনেমার জন্য ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ করা হয়েছে তার কিছুটা পুনরুদ্ধার করতেই অনলাইনে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্তত এতে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যায়।”
আইনক্সের কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে পোস্ট করছেন। আইনক্স এবং পিভিআরের মতো চেনগুলিতে টিকিটের দাম চড়া হলেও, তাদের বড় অঙ্কের ভাড়া দিতে হয় শপিং মলগুলিকে। তাই পরিস্থিতি জটিল হয়েছে বলে মত ইন্ডাস্ট্রির একাংশের।অ্যামাজ়ন প্রাইমে দু’টি হিন্দি ছবি ছাড়াও তামিল, তেলুগু, কন্নড় ও মালয়ালম ভাষায় আরও চারটি ছবি মুক্তি পাবে। আগামী দিনে এই ট্রেন্ড জোরালো হবে না কি প্রতিবাদের কণ্ঠ শক্তিশালী হবে, তার দিকে নজর সিনেপ্রেমীদের।