ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সংঘাত জিইয়ে রাখতে চায় পিপলস লিবারেশন আর্মি, বলছে কার্যকলাপ
এলাকায় আরও পরিকাঠামো তৈরি করছে চিন, বলছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা

পল্লবী কুন্ডু : আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতো মাঝেই মাঝেই জেগে উঠছে ইন্দো-চিন(India-China) সংঘাত। বারংবার আলোচনার মাধ্যমে অশান্তি প্রশমনের চেষ্টা করলেও কাজে আসেনি কোনো পন্থা। বেশ কয়েকদফা সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনার পর লাদেখে শান্তি ফেরাতে সহমত হয়েছিল দুই দেশ। মৌখিকভাবে লাদাখের ভারত-চিন আন্তর্জাতিক সীমান্ত (LAC) থেকে সেনা সরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছিল চিন। তবে তা সম্পূর্ণই ছিল শুধুমাত্র কথার কথা। সেনা সরানো তো দূরঅস্ত, উল্টে নিজেদের এলাকায় আরও পরিকাঠামো তৈরি করছে বলেই জানতে পেরেছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।
সূত্র মারফতে জানা যাচ্ছে, কারাকোরাম পাস এবং আকসাই চিনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা তৈরি করছে বেজিং। এছাড়াও আরও কিছু নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিনা প্রশাসন। বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্র ও সামরিক গোয়েন্দা জানাচ্ছে একথা। সংশ্লিষ্ট খবরের পর খানিক চিন্তার ভাঁজ নয়া দিল্লির কপালে। সূত্রের খবর, ভারতের সীমান্ত বরাবর চিনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির স্পষ্ট নির্দশন পাওয়া গিয়েছে এবার। কারাকোরাম পাস পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ মিটার চওড়া একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করেছে চিন। এই রাস্তা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে সামরিক বিশেষজ্ঞরা। এই রাস্তার জন্য লাদেখে ভারতের বিমানঘাঁটি দৌলত বেগ ওল্ডি সেক্টরের প্রবেশপথ পর্যন্ত যাতায়াতের সময় দু’ঘণ্টা কমে যাবে চিনা বাহিনীর।
সেনা শীর্ষ সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, আকসাই চিনের প্রায় সব কাঁচা রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। যাতে ভারী সরঞ্জাম নিয়ে বড় গাড়ি চলাচল সহজ হয়। ভারী গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তার প্রস্থও বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি চিনের গোলমাডের কাছে মাটির নীচে একটি পেট্রল এবং তেল সঞ্চয়ের কেন্দ্র গড়ে তুলছে চিন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেই তেল সঞ্চয়ের কেন্দ্র প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূরে হলেও তিব্বত রেলওয়ের মাধ্যমে যেটি লাসার সঙ্গে যুক্ত। ফলে দ্রুত সেখানে জ্বালানি পৌঁছে দিতে সক্ষম চিনা প্রশাসন। সবমিলিয়ে সামরিক দিক থেকে বেশ উন্নত পরিকাঠামো গঠন করেছে চিন, ধারণা সামরিক বিশেষজ্ঞদের।
লাদাখে ৫৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে চিনের সঙ্গে ভারতের। তবে শুধু লাদাখ নয়, সিকিম ও অরুণাচল সীমান্ত এলাকাতেও চিনা গতিবিধি বেড়েছে কয়েকগুণ। পুরো বিষয়ের দিকে ভারত নজর রাখলেও এখনও কোনও মন্তব্য করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সাজোয়াঁ গাড়ি এবং সৈন্য আনাগোনা বৃদ্ধি থেকেই ইঙ্গিত মিলেছে যে ভারতীয় সেনার সঙ্গে দীর্ঘ সংঘাত জিইয়ে রাখতে চায় পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)। তবে তৈরী আছে ভারতও। সময় মতো উত্তর তারাও দেবে।