সাহায্য চেয়েও বৃদ্ধা পেলেন না ফল, ঘরের মধ্যেই ৬ ঘন্টা পরে থেকে বিনা চিকিৎসায় ঘটল মৃত্যু
করোনার আতঙ্কে এগিয়ে আসল না কেউই, নাহলে বাঁচানো যেত বৃদ্ধাকে
দেবশ্রী কয়াল : কোথায় মানবিকতা ? একজন বৃদ্ধা ৬ ঘন্টা ধরে নিজের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছেন, কিন্তু সাহায্যের জন্যে কেউ এগিয়ে এলেন না। প্রতিবেশী থেকে শুরু করে আত্মীয় সকলের সাহায্য চাওয়ার পরেও, সবাই থাকেন নির্বিকার। কেউ একজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় না। খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। কিন্তু ততক্ষেণে সব শেষ। পুলিশের দাবি, যখন তাঁরা খবর পান,ততক্ষণে নিথর হয়ে গিয়েছে বৃ্দ্ধার দেহ। আর কিছুই করার ছিল না তাঁদের।
জানা যাচ্ছে, চিকিত্সার অভাবেই ঘরের মেঝেতে পড়ে মৃত্যু হয় ওই ৭০ বছরের বৃদ্ধার। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করেন। কিন্তু পাড়ার কোনো প্রতিবেশীরা কেন তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি তা জিজ্ঞাসা করায়, পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বৃদ্ধা হয়ত করোনাতে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন এই আতঙ্কেই কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে যাননি।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানা এলাকার বৃন্দাবন পাল লেনে। বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকতেন বৃদ্ধা ছায়া চট্টোপাধ্যায়। একাই থাকতেন ওই বৃদ্ধা। স্বামী অনুপ চট্টোপাধ্যায় অনেক বছর আগে মারা গিয়েছেন। ওই একই বাড়িতে থাকেন ছায়া দেবীর দেওর অমিত চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাটি অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দারাই থানাতে জানিয়েছেন বলে খবর।
স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিয়েছে ঠিকই কিন্তু আতঙ্কের বশে কেউ বৃদ্ধাকে সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসেননি। পুলিশের দাবি, যখন তাঁরা খবর পান,ততক্ষণে নিথর হয়ে গিয়েছে বৃ্দ্ধার দেহ। পুলিশ বৃদ্ধাকে নিয়ে যায় আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিত্সকরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, সময় মতো চিকিত্সা করা গেলে হয়তো প্রাণ বাঁচানো যেত বৃদ্ধার। কিন্তু করোনার ভয়ে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে তাঁর আত্মীয়রা সেই চেষ্টা করেননি। কার্যত বিনা চিকিত্সায় মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। যেখানে কিন্তু যাঁরা বিশেষজ্ঞরা আছেন ট্যানরাও বলছেন কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁকে একঘরে না করে দিয়ে, সাহায্য করুন। কিন্তু এক্ষেত্রে করোনা আক্রান্ত না হয়েও চিকিৎসার অভাবে মারা যেতে হল বৃদ্ধাকে।