একুশে নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাক্যবানে বিঁধলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী
বাঁকুড়ার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমত এক হাত নিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে

পল্লবী কুন্ডু : একুশে নির্বাচনের আগে ফের গরম রাজনৈতিক মহল। বিধানসভার আগে আজ বাঁকুড়া খাতড়া সিধু কানু ময়দানে প্রশাসনিক জনসভা থেকে কেন্দ্রকে লক্ষ করে বাক্যবাণ নিক্ষিপ্ত করলো রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রীতিমত এক হাত নিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah)। এর আগেই বাঁকুড়ার মাটিতে পা রেখেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার এই সফরকেই সম্পূর্ণ লোক দেখানো ছিল বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে অমিত শাহ দক্ষিণবঙ্গের সফরের শুরুতেই মাল্যদান করেছিলেন। কিন্তু আদিবাসী সমাজের একাংশের দাবি ছিল ওই মূর্তি নাকি বিরসা মুন্ডার নয়। আজ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন বিরসা মুন্ডা বলে অন্য মূর্তির গলায় মালা দিয়েছেন অমিত শাহ। আগামী দিনে বিরসা মুন্ডার জন্ম দিনে ছুটি থাকবে। পাশাপাশি আজ মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির পাশাপাশি সিপিএম-এর দিকেও কটাক্ষের আঙ্গুল তোলেন। তিনি বলেন, মামলা হামলা করা ছাড়া বিজেপি ও সিপিএমের আর কোনো কাজ নেই। এছাড়াও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আদিবাসী পরিবারের মধ্যাহ্নভোজন-এর সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্টার হোটেল থেকে ভাত এনে দলিতের বাড়িতে খায় বিজেপির ভাওতা মানুষ বুঝে গেছে।
এসবের বাইরে বেরিয়ে এবার জঙ্গলমহলে কী কী উন্নয়ন করেছে রাজ্য সরকার সেই বিষয়ও এদিন তুলে ধরেন তিনি। অন্যদিকে এই করোনা পরবর্তী অগ্নিমূল্যের বাজারে আলু পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেছেন আজ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দেরিতে পাঠায়। পাশাপাশি আজ জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরেন। তিনি জানান বাংলায় বেকারত্বের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪০%, পাশাপাশি বাংলায় চাকরির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে, কোভিড পরিস্থিতিতে কারোর পেনশন আটকাইনি রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে, ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই সজাগ হচ্ছে রাজ্য। এদিনের সভায় একাধিক নতুন সরকারি প্রকল্পের ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি ব্লক থেকে সকাল ১১ টা থেকে ক্যাম্প করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া খড়ের বাড়ি এবং মাটির বাড়ি যাদের রয়েছে তাদের বাড়ি করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিষ্ণুপুর ঘরানার সব শিল্প দিয়ে আর্কাইভ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে রাজ্যবাসী অবশ্যই নজর রাখবে ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির দিকেই। কারণ প্রতিটি বিধানসভার আগেই রাজ্যবাসী সরকারি মহল থেকে পেয়ে থাকেন একাধিক আশ্বাস কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই আশ্বাস, আশ্বাস-ই রয়ে যায়।