এবার কি বদলে যেতে চলেছে ভারতের জাতীয় সংগীত ?
কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কে

চৈতালি বর্মন : কংগ্রেস(Congress) নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী(Adhir Ranjan Chowdhury) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে(Narendra Modi) চিঠি লিখলেন,গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ(Rabindranath Tagore) ঠাকুরকে ভালবাসে ও স্মরণ করে মানুষ। তিনি আমা্দের জাতির গর্ব ও বিশ্বজনীন আইকন। তিনি প্রাথমিকভাবে একজন মানবতাবাদী চিন্তাবিদ ও তাঁর জন গণ মন মানবাদের মূল চিত্রটি তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কে। বিজেপি সাংসদ সুব্রক্ষণ্যম স্বামী জাতীয় সঙ্গীতের কিছু শব্দের বদল নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, বলেছিলেন জন গণ মন-র বদলে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর লেখা ও গাওয়া একটি গানকে জাতীয় সঙ্গীত করা নিয়ে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদের ধারণাকে সংকীর্ণ বলে অভিহিত করলেন অধীর।
অধীর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠিতে লিখলেন, আমি রাজ্যসভার সদস্য সুব্রক্ষণ্যম স্বামীর একটি চিঠির বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। ওই চিঠিতে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত জন গণ মন-র কিছু শব্দের বদল চেয়ে সুভাষ চন্দ্র বসু (Subhas Chandra Bose)ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজের একটি গানকে ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে।স্বামী এই বদল চেয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন গন মণ নিয়ে, যা ২৪শে জানুয়ারি ভারতীয় গণ পরিষদে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। স্বামীর দাবি, এতে স্বাঘীনতা পরবর্তী ভারতের বাস্তবতার কোনও প্রতিফলন ঘটেনি। কারণ এতে সিন্ধ(যা বর্তমানে পাকিস্তানে) শব্দটি রয়েছে। এছাড়াও স্বামী বলেছিলেন, গানটি ১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথ কার উদ্দেশে লিখেছিলেন, তাও স্পষ্ট নয়।
মোদীকে চিঠিতে অধীর লিখেছেন, স্বামীর চিঠি আত্মায় ও বোধগম্যতায় সংকীর্ণ, বিভাজনকারী এবং এই বিষয়ে যে গভীর জাতীয় আবেগ রয়েছে তাকে লঙ্ঘন করছে।তিনি আরও লিখেছেন, এটি জাতীয় সংগীতের রচনার পিছনে থাকা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের নীতির সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করছে। গুরুদেবের ‘আইডিয়া অফ ইন্ডিয়া’ বহুত্ববাদী, মানবতাবাদী, সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।অধীর বলেছেন, স্বামীর জন গন মন-র ধারণা খুবই সংকীর্ণ। তিনি বর্তমান ভারতের অঞ্চলগত ধারণা্টিকে বেছে নিয়েছেন। তাই তিনি ধরে নিয়েছেন, ১৯৪৭ পরবর্তী ভারতের সঙ্গে সিন্ধ শব্দটি যায় না। তবে ভারত নিছক একটি আঞ্চলিক ভূমি নয়, এটি সংস্কৃতি এবং ধারণার সমুদ্র যা অসীম বহুত্ববাদকে একসাথে নিখুঁত সম্প্রীতিতে বুনতে পারে