রাজভবন গেটে ভরদুপুরে ধুন্ধুমার… কংগ্রেসের বিক্ষোভে হতভম্ভ পুলিশ
কালা কৃষি আইন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসীদের মিছিল রূপ নেয় বৃহৎ, মিছিলের নেতৃত্বে অধীর রঞ্জন চৌধুরী

দেবশ্রী কয়াল : ভোটের আগে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। আর এবারে একসাথে জোট বেঁধেছে বাম ও কংগ্রেস। এখনও পর্যন্ত তাদের সেভাবে রণকৌশল প্রকাশ্যে দেখা যায়নি সেভাবে। হয়ত লক্ষ ব্রিগেডের সমাবেশের দিকে। তবে তার আগেই আজ শুক্রবার দুপুরে মহানগরীর বুকে কলেজস্ট্রিট মোড় থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত হয় অসংখ্য কংগ্রেস (Conggress) কর্মীদের মিছিল। তবে সেই মিছিল পরিণত হয় এক বিক্ষোভ মিছিলে। এদিন রাজভবন গেটের সামনে মাননীয় রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এদিন জনবিরোধী কৃষক আইনের (Agriculture Bill) বিরুদ্ধে ও কৃষকের অধিকারের দাবিতে এবং জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও তৎসহ অন্যান্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রদেশ কংগ্রেসের এই পদযাত্রা আয়োজিত হয়েছিল। কিন্তু সেই মিছিল চলাকালীনই দেখা যায় বিক্ষোভ পরিস্থিতি।
আজকের এই বিক্ষোভ মিছিল ও ডেপুটেশন পশ্চিম বঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury)নেতৃত্বে পালিত হয়। এদিন সমগ্র কংগ্রেস কর্মী জমায়েত হয় কলেজ স্ট্রিটে দুপুর ২.৩০ টায়। তারপর ৪.৩০ টায় এ নিয়ে রাজ্যপালের সাথেও দেখা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিরোধী দল নেতা আব্দুল মান্নান, মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, বিধায়ক অসিত মিত্র, পৌর প্রতিনিধি সন্তোষ পাঠক ও অন্যান্য প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব। এদিন হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মীর উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল আয়োজিত হয়। আজকের মিছিল শেষে পশ্চিম বঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নেতৃত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের (Jagdeep Dhankhar)সাথে দেখা করেন এবং দাবিদাওয়া সম্মন্ধে অবহিত করে, স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এই স্মারকলিপিতে যে সকল দাবি করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো-
১) গ্রেন মার্কেট – সব্জি মার্কেট সিস্টেম
২) APMC সিস্টেম আমাদের ভারতবর্ষের চাষীদের সামগ্রিক ক্ষতি করছে এবং একে এক্ষুনি বন্ধ করা দরকার
৩) চাষীদের MSP দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে
৪) মান্ডি সিস্টেম উঠিয়ে দিলে চাষীদের, মুনিমদের, এবং অন্যান্য কারিগরদের যে ক্ষতি হবে তা আমরা পূরণ করতে পারবো না তাই এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে
৫) এই বিলগুলির দ্বারা চাষীদেরকে নিজেদের জমিতেই কর্পোরেট কোম্পানির দাস হয়ে যাবে
৬) এই বিলগুলিতে চাষীদের এবং চাষ জমিতে কাজ করা কোনো মানুষেরই কোনো অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়নি, যা নিন্দনীয়
৭) উল্লিখিত ৩টি বিল আমাদের দেশের কৃষকদের জন্য মৃত্যুর সমান এবং এদের বাতিল করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
৮) পেট্রোল, ডিসেল ও গ্যাসকে অবশ্যই GST-র আওতায় আনতে হবে যাতে এদের সাংঘাতিক মূল্যবৃদ্ধি থেকে মানুষ রক্ষা পায়, এবং এদের উপরে লাগু ট্যাক্স-এর হার কমাতে হবে ৬৭% থেকে, যা এশিয়া মহাদেশে সর্বাধি
তবে আজকের এই মিছিলে যাওয়ার সময় রাজভবন পর্যন্ত কংগ্রেসের যাত্রা হতবাক করে সকলকে। তাদের এই মিছিল যে বৃহৎ আকার রূপ ধারণ করবে তা হয়ত খানিক ধারণার বাইরে ছিল পুলিশের। এদিন সমর্থকরা রাজভবন যাওয়ার সময় একটা করে ব্যারিকেড রাস্তায় ফেলে যায় এবং তার জেরে সৃষ্টি হয় জ্যাম কিন্তু তার সাথেই জড় হয় অনেক কংগ্রেস সমর্থক। তারপরেই তা এক বিক্ষোভ মিছিলের রূপ নেয়।