জীবন যুদ্ধ জয় করতে পারলেও যুঝতে পারলোনা করোনার সাথে
করোনা যুদ্ধে পরাজয় গ্রহন করলেন ২৭ বছরের তরুণ চিকিৎসক যোগিন্দর চৌধুরী।
পল্লবী কুন্ডু : যখন যোদ্ধারাই হার মেনে নেন তখন হয়তো সত্যিই যুদ্ধ জেতাটা অনেক কঠিন হয়ে পরে। করোনা যুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধারা হলেন প্রত্যেক চিকিৎসক। এবার আর লক্ষ ভেদ হলোনা। পরাজয় গ্রহন করলেন ২৭ বছরের তরুণ চিকিৎসক যোগিন্দর চৌধুরী। দিল্লির বাবাসাহেব আম্বেদকর হাসপাতালের তরুণ চিকিত্সক যোগিন্দর চৌধুরীর মৃত্যু হয়েছে শনিবার রাতে। গত ২৭ জুন রিপোর্ট পসিটিভ আসে। তারপরেই একমাসের লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করতেই হয় যোগিন্দরকে।
প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল সরকার পরিচালিত লোক নায়ক হাসপাতালে। কিন্তু উন্নতির বদলে দিন বাড়ার বাড়ার সাথে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে এবং তারপর লোক নায়ক হাসপাতাল থেকে যোগিন্দরকে স্থানান্তর করা হয় বেসরকারি স্যর গঙ্গারাম হাসপাতালে। সেখানেই শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে পারিবারিক আর্থিক অবস্থাও খুব একটা স্থিতিশীল নয়। বাবা সাহেব আম্বেদকর হাসপাতালের যোগিন্দরের সহকর্মীরা নিজেরা টাকা তোলেন। তাঁরা সব মিলিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দেন দু’লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা। স্যর গঙ্গারাম হাসপাতালের বিল হয় তিন লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। দিন বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে টাকার অঙ্কের পরিমান। যা তার পরিবারের কাছে এক পর্বত সমান ভার এনে হাজির করে।
অন্যদিকে হাসপাতালের চিকিত্সক অ্যাস্যোসিয়েশনের তরফে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চিঠি লেখা হয়। এবং তারপর কিছুটা বিল মুকুব করে স্যর গঙ্গারাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন যোগিন্দরের পরিবারের হাতে যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।
ছোট থেকেই নানান ঝড়-ঝাপটার মধ্যে থেকে নিজের জীবনের লক্ষের দিকে এগোচ্ছিলেন যোগিন্দর। যখন টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয় ঠিক সেই সময়তে নিজে টিউশানি করে নিজের পড়ার সমস্ত টাকা জোগাড় করেন এবং তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার হন। কিন্তু সুখ সইলো না কপালে। ২৭ টা বছরের মাথাতেই শেষ হয়ে গেলো সব স্বপ্ন।