লকডাউনে চাকরি ছাড়া বহু, চলছে না ঠিক করে সংসার, কিন্তু সরকারের খেয়াল কোথায় !
নাজেহাল হয়ে রয়েছে সাধারণ মানুষ, পেট চালানোর জন্যে চাইছে একটা কাজ

দেবশ্রী কয়াল : চাকরি নেই বাজারে, সংসারের দায়িত্ব নেভাতে গিয়ে নাজেহাল মানুষ। হ্যাঁ ঠিক এই পরিস্থিতি এখন মানুষের। করোনার সংক্রমন রুখতে গিয়ে সারা দেশ জুড়ে ২ মাস ধরে চলে লকডাউন। আর তার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় আনলক পর্যায়। কিন্তু এই লকডাউনে বহু মানুষ হারিয়েছে চাকরি। নেই কোনো রোজগার, নেই কোনো আয়। অনেকের মাইনে গেছে কমে। আবার অনেককে বিনা বেতনে পাঠানো হয়েছে ছুটিতে। এই অবস্থায় বাজারের চড়া দাম, অতিরিক্ত পেট্রল ডিজেলের দাম সবকিছু মিলিয়েই যেন নাজেহাল পরিস্থিতি। কোথায় যাবেন মানুষ ?
এমন অনেক মানূষ আছেন যাঁরা এই লকডাউনে হারিয়েছেন নিজের চাকরি। ঘরে ঢুকছে না কোনো টাকা। নিজেদের জমানো পুঁজি দিয়েই চালাতে হচ্ছে সংসার। এদিকে কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারকে বলতে গেলে, তাঁদের মতে কর্মসংস্থানে এগিয়ে রয়েছে তারা। কিন্তু তাহলে এত মানুষ যাঁরা বলছেন চাকরি নেই, তাঁরা কী সবাই মিথ্যে কোথা বলছে ? কত শিক্ষিত, ডিগ্রিধারীরাও কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে বসে আছে বাড়িতে। আর এই যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে তাতে আগামী কয়েক বছর চাকরির হাল যে আরও অবনতি ঘটবে তা বলা বাহুল্য। এখনই নেই চাকরি, আগামী দিনে আরও কী হবে ?
অফিস সংস্থা গুলির দাবি, টাকা নেই তো, কর্মীদের কাজে রাখবো কিভাবে ? আর সকল গণপরিবহন ব্যবস্থা এখনও ঠিকভাবে চালু না হওয়ায়, যে সব কর্মীরা দূরে থাকেন তাঁরা আস্তে পারছেন না। তাই দিনের পর দিন তো বাড়ি বসিয়ে মাইনে দোয়া সম্ভব নয়। তাই কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া নেই কোনো উপায়। সবাই এখন অসহায়। কারোর কাছেই নেই তেমন উপায়।
আজ কোথাও চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না মানুষ, কারণ প্রথমেই সেখানে বলে দেওয়া হচ্ছে যে, চাকরি নেই এখন। কিন্তু এইভাবে কতদিন চলবে ? বরং জিজ্ঞাসা করা ভালো এইভাবে আর কতদিন মানুষকে বেরোজগার বানিয়ে রাখতে চায় সরকার ? এদিকে সরকার বলছে বিনামূল্যে দেবে রেশন, কিন্তু চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁদের। মানুষকে চাকরির জন্যে, রোজগারের যখন হন্যে হয়ে বেড়াচ্ছে তখন সবাই হাত গুটিয়ে। সবার কাছে কেবল একটাই জবাব, চাকরি নেই।
যাঁরা দিন আনি দিন খাই মানুষ, তাঁদের তো কাজ এখন প্রায় বন্ধ বললেই চলে, আলাদা করে জমানো নেই তেমন কোনো টাকা। দুবেলা ঠিক করে জুটছে না খাবার টুকু। একবেলা খেয়ে, জল খেয়েই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু তাদের কথা ভাবছে না কেউই। কোথায় যাবেন তাঁরা ? যাঁদের চাকরি গেছে তাঁদের অনেককেই মাসে মাসে গুনতে হয় অনেক কিছুর ই ইএমআই, কিভাবে চালাবে তাঁরা ? যাঁদের বেতনের পরিমান কমে গেছে অনেকটাই, তাঁদের বহু সমস্যার হতে হচ্ছে সম্মুখীন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের কাজের জোগাড় কেন করতে পারছে না সরকার ? এই কঠিন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কথা কেন ভাবছে না সরকার ? কেনই বা অনাহারে কাটাতে হচ্ছে এত মানুষকে ? হাত গুটিয়ে রেখেছে সরকার নিজের। জনগনের জন্য করতে পারছে না খরচ, কিন্তু ব্যক্তিগত সব খাতে হচ্ছে কোটি কোটির খরচ। সাধারণ মানুষের দিকে কবে মুখ তুলে তাকাবে সরকার ? কবে আবার চাকরি পাবেন মানুষ ?