West Bengal

প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও, পায়ের সাহায্যে কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের দায়িত্ব

হাত নেই তো কি হইছে ? মনের জোর থাকলে সব সম্ভব, প্রমান করলো পুরুলিয়ার এক যুবক

চৈতালি বর্মন : একটি মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মনের জোরে কিভাবে সংসার চালায়। তারই কথা।পুরুলিয়ার(Purulia) চেলিয়ামা গ্ৰামের সরকারপাড়ার বাসিন্দা ভোলানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়(Bholanath Banerjee)। দু’টি হাতই রয়েছে। কিন্তু সে হাতে কোনও কাজ করতে পারেন না। অদম্য জেদে দু’পায়ের ভরসাতেই জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। খুব ছোট থেকেই সাড় নেই দু হাতে। তাই শৈশব থেকে কৈশোরে পৌঁছনোর সময় যে ভাবে দুটো হাতকে সবাই ব্যবহার করতে শেখে তা করা হয়নি তাঁর। অদম্য জেদকে সঙ্গী করে পায়ের আঙুলের ফাঁকে তুলে নিয়েছিলেন কলম। ক্লাসের পর ক্লাস ডিঙিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছেন। নিজের হাতে কোনও কাজ করতে না পারলেও গোটা পরিবারের মুখে অন্ন জোগাড়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী ভোলানাথ। এলাকার ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে যেটুকু রোজকার হয় তা দিয়ে মা দাদা আর তার সংসার চলে। আর হাজার টাকার প্রতিবন্ধী ভাতার ভরসা।

এলাকার ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে যেটুকু রোজকার হয় তা দিয়ে মা দাদা আর তার সংসার চলে। আর হাজার টাকার প্রতিবন্ধী ভাতার ভরসা। বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে তার একটাই প্রার্থনা, সরকার যদি কোনও কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের চেলিয়ামা গ্রামের সরকারপাড়া। সেখানেই একচিলতে ঘরে মা এবং দুই ছেলের বসবাস। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে অনেকদিন আগে। ভোলানাথের মা বকুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, জন্ম থেকে ভোলানাথ প্রতিবন্ধী নন। তার যখন তিন বছর বয়স তখন হঠাত্‍ই তাঁর দু’হাতের সমস্ত শক্তি চলে যায়। বাবার ছোট্ট একটা দোকান ছিল। যতটুকু পুঁজি ছিল তা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছেলের চিকিত্‍সা করিয়েছেন।হার না মেনে পায়ের আঙুলের ফাঁকে পেন দিয়ে লেখা অভ্যেস করে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজেও ভর্তি হয়েছিলেন। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময় বাবা আচমকাই মারা যান। গোটা পরিবারের সামনে অন্ধকার নেমে আসে। অভাবের তাড়নায় বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা। কিন্তু থেমে থাকেননি ভোলানাথ।

এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট টিউশন পড়ানো শুরু করেন। তাতে সামান্য যা কিছু রোজগার তা দিয়ে সংসার চলে। ভোলানাথের দাদা লটারির টিকিট বিক্রি করেন। লকডাউন এর সময় সেটাও বন্ধ হয়ে গেছিল। ভরসা বলতে ছিল শুধু মাত্র হাজার টাকার প্রতিবন্ধী ভাতা। সরকারের কাছে আমার একটাই আর্জি। একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিক।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button
%d bloggers like this: