জগৎ জননী মা সারদা ও রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আরাধনায় মহা সমারোহে ভক্ত মহল
জগৎ জননী মা সারদার আশিস নিতে ভক্ত সমাগম জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরে

পল্লবী কুন্ডু : মহা সমারোহে পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব। জগৎ জননী মা সারদার আশিস নিতে ভক্ত সমাগম জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরে। সকাল থেকেই মা সারদার জন্ম ভিটে জয়রামবাটি(Jayrambati)তে ভিড় জমেছে ভক্তদের। বছরের প্রথম দিন, সারা বছর ভাল থাকা ও ভাল রাখার আর্জি নিয়েই আজ মায়ের কাছে ভক্তরা। গর্ভ গৃহের বাইরে থেকেই মায়ের দর্শন এবং প্রনাম-প্রার্থনা সারছেন সকলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাতৃমন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে একাধিক স্বাস্থ্য বিধি মেনে তবেই দর্শনের সুযোগ মিলছে। মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধি করা হয়েছে। মূল প্রবেশ পথের মুখে স্যানিটাইজেশন করে প্রবেশ করানো হচ্ছে ভক্তদের। পুরানো বাড়ি নতুন বাড়িতে কোভিড পরিস্থিতির জন্য ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধু মাত্র গর্ভগৃহের সামনে থেকেই সীমিত সময়ের জন্য দর্শন এবং প্রনাম করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ভক্তদের। বেশিক্ষন থাকা এবং ভীড় করতে দেওয়া হচ্ছে না মাতৃমন্দির চত্বরে।
অন্যদিকে, বছরের প্রথম দিন অর্থ্যাৎ পয়লা জানুয়ারি মানেই রামকৃষ্ণ ভক্তদের কাছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির অথবা কাশীপুর উদ্য়ানবাটী যাওয়ার তিথি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে অনেক কিছুই। এবার ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের দরজা যা অনেক ভক্তকেই হতাশ করেছে ।প্রতিবছর কল্পতরু উৎসবে এখানে কয়েক লক্ষ দর্শনার্থী হাজির হন। সকাল থেকে অধীর অপেক্ষায় বসে থাকেন সকল ভক্ত। অন্যান্য বছর বালিব্রিজ ছাড়িয়ে যায় ভক্তদের লাইন। তবে এ বছর এই ঝুঁকি নিতে চাইছে না মন্দির কর্তৃপক্ষ।পঞ্চবটী কেন্দ্রে যে মেলাটি বসে কল্পতরু উৎসবকে কেন্দ্র করে এবছর বন্ধ তাও থাকছে। যদিও ভবতারিণী মন্দির ও রাকৃষ্ণ কক্ষে বিশেষ পূজা হবে প্রথা মেনে তবে সেক্ষেত্রেও ছাড় নেই ভক্তমহলের।
রামকৃষ্ণ মঠের সন্ন্যাসীবৃন্দ ও রামকৃষ্ণ মিশনের গৃহস্থরা এই উৎসব পালন করেন। বিশ্বব্যাপী বেদান্ত সোসাইটিগুলিতেও এই উৎসব পালিত হয়। এই কল্পতরু উৎসব ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম শুরু হয়েছিল। এই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস তাঁর অনুগামীদের কাছে নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বলে ঘোষণা করেছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হলেও কাশীপুর উদ্যানবাটীতে এই উৎসব পালিত হয় মহাসমারোহে, অবশ্য এ বছর যা ব্যতিক্রমী। এখানেই রামকৃষ্ণ পরমহংস জীবনের শেষদিনগুলি অতিবাহিত করেছিলেন, আর সেই কারণেই রামকৃষ্ণ দেবের অনুগামীরা এই উৎসবকে “ঠাকুরের বিশেষ উৎসব”গুলির অন্যতম উৎসব হিসেবে গণ্য করেন।