দামের দিকে তাকিয়েই সোনা কিনছেন মানুষ, ভিড় দোকানে দোকানে
লক্ষ্মী লাভের আশায় দুদিন ধরে ভিড় দোকানে দোকানে, কেউ কিনছেন সোনা কেউ রুপো, তোয়াক্কা নেই দামের

পৃথা কাঞ্জিলাল : ধনতেরাস (Dhanteras) উত্তর ও পশ্চিম ভারতীয়দের উত্সব হলেও বর্তমানে এই উত্সব পালন করছেন সবাই। এইদিন সকলেই চান সামান্য পরিমাণ হলেও সোনা (Gold), রূপো (Solver) বা যে কোনো ধাতু কিনতে। প্রতিবছর কালী পুজোর আগে এই ধনতেরাস উত্সব পালন করা হয়। ধন’ শব্দের অর্থ সম্পদ এবং ‘তেরস’র অর্থ ত্রয়োদশী তিথি। ধনতেরাসের শুভ সময় শুরু হয়েছে, ১২ই নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৯ টা বেজে ৩০ মিনিটে। এই শুভ সময় থাকছে ১৩ ই নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৫ টা বেজে ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। সকলেই সংসারে সম্পদ-বৃদ্ধি ঘটাতে, এই শুভ সময়ের মধ্যে সোনার দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।
কলকাতায় (Kolkata)আজ ২২ ক্যারেট সোনার ১ গ্রামের দাম ৪৯০৫ টাকা এবং ১০ গ্রামের দাম ৪৯০৫০ টাকা। অন্যদিকে ২৪ ক্যারেট সোনার ১ গ্রামের দাম ৫৩৫৪ টাকা এবং ১০ গ্রামের দাম ৫৩৫৪০ টাকা। সোনার দাম আকাশ ছোঁয়া হলেও ঘরে লক্ষ্মী লাভের আশায় সকলেই গিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন সোনার দোকানে। এই করোনা আবহেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পাশাপাশি রূপোর দাম রয়েছে প্রতি গ্রামে ৬২.৭১ টাকা এবং ১০ গ্রামের দাম ৬২৭.১০ টাকা।
ছবিটা মাত্র দু’দিনেই অন্যরকম হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঝিমিয়ে পরে সোনার বাজার ধনতেরসের দু’দিন আগে থেকেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসেছে ! করোনার (Corona) আবহে এতটা অনেক স্বর্ণব্যবসায়ী প্রত্যাশা করেননি। নদিয়ার প্রায় সব এলাকায় ছোটবড় স্বর্ণব্যবসায়ীরা যারা আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা এখন একবাক্যে বলছেন, এ বছর কেনাকাটা এখনও পর্যন্ত বেশ ভালই হচ্ছে।
বুধবার থেকেই সোনার দোকানে ধনতেরসের কেনাকাটার ভিড় দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভিড়ের বহর দেখে মুখে চওড়া হাসি বেশির ভাগ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। বস্তুত এক সপ্তাহ আগেও সোনার বাজারের বিবর্ণ চেহারা দেখে তাঁরা কেউ কল্পনা করতে পারেননি এমন হয়ে দাঁড়াবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বিপুল গয়না তুলছেন নিজের দোকানের জন্য। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, টাকা দিয়েও পছন্দসই গয়না পর্যাপ্ত পরিমাণে পাননি অনেকে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুজিতবাবুর কথায়, “সে দিনই মনে হয়েছিল, ধনতেরসে বিক্রি খারাপ হবে না। বুধবার থেকেই আমার অনুমান কাঁটায় কাঁটায় মিলে গেল। প্রচুর মানুষ সোনার দোকানে আসছেন এবং কমবেশি কিছু জিনিস কিনছেন। সত্যি কথা বলতে, করোনা-লকডাউন-মন্দা সত্ত্বেও যে এ রকম বিক্রি হবে তা আমরা আশা করিনি।”
জেলার বড় শহরগুলোতে স্থানীয় সোনার দোকানের পাশাপাশি ভিড় উপচে পড়ছে নামি ব্র্যান্ডের শো-রুমেও। এমনই একটি নামি সোনার দোকানের তরফে সাধন দাস বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে এ বারে আদৌ ধনতেরসে ব্যবসা কী হবে এ নিয়ে আমাদের প্রবল সংশয় ছিল। কিন্তু ভালই বিক্রি হচ্ছে।” তাঁর কথায়, তিথির কারণে এ বার ধনতেরসের কেনাবেচা দু’দিন ধরে চলবে। বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশী শুরু হয়ে আজ শুক্রবার দিনভর থাকবে। তাই লোকে কেনাবেচার সময় বেশি পাচ্ছেন। মোটকথা লকডাউন (Lockdown) বা করোনা কাল প্রভাব ফেলতে পারেনি কেনাকাটাতে। মুখে হাসি এবং দোকানে ভিড় নিয়ে আপাতত স্বস্তিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী।