‘মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয় না’, ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না
ডাঃ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন যে, ডায়াবেটিস হল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকার অসুখ

পল্লবী কুন্ডু : রোগ-ভোগ এখন জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এখন তো মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে ডায়াবেটিস। তবে এই ডায়াবেটিস (Diabetes) নিয়েই বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা বিরাজ করে মানুষের মনে। সেই ধারণাকে বদলাতে এবার মত প্রকাশ করলেন CMRI-এর চিকিত্সক কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় (Endocrinologist consultant of CMRI)।
তিনি বলছেন বেশি মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয় না। ডায়াবেটিস নিয়ে অনেকেই মনে করেন যে রোজ মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়াটা ডায়াবেটিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে কোনও ব্যক্তিকে। কিন্তু ডাঃ গঙ্গোপাধ্যায় পরিষ্কার জানাচ্ছেন যে, এই ধারণার কোনও যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। কেন, তা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি এই অসুখের ধরনটি একটু ব্যাখ্যা করেছেন।
ডাঃ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন যে, ডায়াবেটিস হল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকার অসুখ। আমরা যখন মিষ্টি খাই, তখন তা শরীরে যাওয়ার পরে ভেঙে গিয়ে শর্করা বা গ্লুকোজে পরিণত হয় ঠিকই। কিন্তু অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া থেকে ডায়াবেটিস হয় না। কেন না, এই গ্লুকোজকে রক্ত থেকে শরীরের কোষে পাঠিয়ে দেয় ইনসুলিন। এর পর তা শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু আমাদের শরীর যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উত্পন্ন করতে পারে না, তখনই সমস্যা দেখা দেয়। তখন রক্তে গ্লুকোজ, যাকে ব্লাড সুগারও বলা হয়ে থাকে, তার মাত্রা যায় বেড়ে। এই পর্যায়ে যখন কোনও ব্যক্তি পৌঁছে যান, তখনই অসুখটাকে বলা হয় ডায়াবেটিস।
এর সাথেই ডাঃ কল্যাণকুমার গঙ্গোপাধ্যায় এটাও উল্লেখ করেন যে, অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস থেকে ডায়াবেটিস না হলেও শরীরে মেদ জমবে। যা পরবর্তী কালে নানা সমস্যার জন্ম দিতে পারে। এই বিষয়টি সকলেই মানেন যে, ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিয়ে যেতে হয় আজীবন। কিন্তু ডাঃ গঙ্গোপাধ্যায় অঙ্গলিয়াত বিয়াওই নিয়ে বলেন, একমাত্র যখন ডায়াবেটিসের সমস্যা ক্রনিক বা দীর্ঘ দিনের হয়, তখনই ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, তার আগে নয়।
তবে চলতি করোনা পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস রোগীদের কিছুটা বাড়তি সুরক্ষা মেনে চলতেই হয়। ডাঃ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন ডায়াবেটিস থাকলে কারও কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় না, কিন্তু ডায়াবেটিস আছে এমন ব্যক্তি যদি সংক্রামিত হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে নানা জটিল শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এমনকি এটি আপনার মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। তাই সর্বদা সচেতন থাকুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর হ্যাঁ, অযথা আতঙ্কিত হবেন না।