১০৮ পুরো ভোট-এ বহাল এক তন্ত্র নীতি, পরিবার তন্ত্রে রাশ টানাতে জোর তৃণমূল কংগ্রেস-এর
"প্ররোচনায় পা দেবেন না। এমনকিছু করবেন না, যাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।’’-তৃণমূ মহাসচিব

তিয়াসা মিত্র: রাজ্যের ১০৮ ভোট লড়বে না কোনো বিধায়ক। পাশাপাশি, একই পরিবারের একাধিক নেতা কাউন্সিলর হওয়ার ভোটে লড়তে পারবেন না। শুক্রবার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে এমনই জানিয়ে দিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, নবীন ও প্রবীণের ভারসাম্য রেখে প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছে। তবে কোনও বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। পার্থ আরও বলেছেন, ‘‘পুরভোটে নতুনদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। যাঁকে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে, তাঁকেই সমর্থন করতে হবে।’’ দলের মহাসচিব যে বক্তব্য রেখেছে সেখান থেকে বোচা যাচ্ছে অভিষেক ব্যানার্জী-র “এক তন্ত্র ” নিয়মটি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছে এই বাড়ে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের পর তৃণমূল ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির কথা ঘোষণা করলেও কলকাতা পুরভোটে দেখা যায় একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ক কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। যদিও প্রথমে ঠিক হয়েছিল, ফিরহাদ হাকিম-সহ মোট পাঁচ বিধায়ককে পুরভোটে টিকিট দেওয়া হবে না। কিন্তু শেষমুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হস্তক্ষেপে’ সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায়নি।বস্তুত, পুরভোটে জিতে দ্বিতীয় বার মেয়র হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। আবার একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি কলকাতার পুরভোটে লড়েছেন। একই পরিবার থেকে টিকিট পেয়েছিলেন তিনজন নেতা— তারক সিংহ, অমিত সিংহ ও কৃষ্ণা সিংহ। তাঁরা যথাক্রমে ১১৫, ১১৬ এবং ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হন। তাঁরা আগেও কাউন্সিলর ছিলেন। আবার, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী চৈতালিও ভোটে জিতে কাউন্সিলর হন। তা ছাড়া মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজার ছেলে-মেয়েরাও প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বাকি পুরভোটে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি জারি রাখছে শাসকদল।
কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী নিয়ে একাধিক জায়গায় অশান্তি তৈরি হয়েছিল। টিকিট না পেয়ে অনেকে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়ান। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলর রতন মালাকার টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। যদিও পরে তিনি পিছিয়ে যান। তবে প্রবীণ নেতা সচ্চিদানন্দ মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের টিকিট না-পেয়ে ‘নির্দল’ হিসেবে লড়েছিলেন। যদিও তিনি হেরে যান। ১০৮টি পুরসভা ভোটের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করতে গিয়ে সম্ভবত সেই বিষয়গুলির কথা মাথায় রেখেই পার্থ জানান, দল যাকে প্রার্থী করছে তাঁকেই মেনে নিতে হবে। এর অন্যথা হবে না। উল্লেখ্য, শুক্রবার দার্জিলিঙের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হয়নি। তৃণমূল মহাসচিব জানান, দু’এক দিনের মধ্যে ওই তালিকা ঘোষণা করা হবে।