স্কুলে দেরিতে ঢোকার অপরাধে, শিক্ষককে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে শাস্তি দিল গ্রামবাসী।
দীর্ঘদিন ধরে, শিক্ষকের উপর অভিযোগ ছিল দুর্নীতির তবে, এবারে একটা দোষ পাওয়াতে আইন হাতে তুলে নিল মানুষ।
@ দেবশ্রী : আমাদের ভারতীয় সমাজে, শিক্ষকদের গুরুর স্থানে বসানো হয়। কিন্তু সেই শিক্ষককে পুরুলিয়াতে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বাঁধা হয়। তার কারন স্কুলে দেরি করে প্রবেশ। ঘটে একটি নিন্দাজনক ঘটনা। অভিযোগ ওঠে যে, স্কুল শুরু হয় সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটে, কিন্তু প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসেন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। আর সেই অপরাধেই দুজন গ্রামবাসী তাকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বাঁধে। সেই অন্যায়ে ওই দুজন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাটি ঘটে, পুরুলিয়ার ঝালদা ১ নং বলকে। পরে শিক্ষককে বেঁধে রাখার ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। কেবলমাত্র এই কারনে, এমন কাজ করা ও আইন হাতে তুলে নেওয়া কখনোই মানানসই নয়। শিক্ষক মহল এই নিয়ে সরগরম হয়ে আছে এই মুহূর্তেই। এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন তাঁরা। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বলে, যে বা যারা এই কাজটি করেছেন তারা মোটেও সেটি ঠিক কাজ করেননি।
ঝালদার ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যা ৮১ জন। প্রধান শিক্ষক ছাড়া ও একজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা রয়েছেন ওই স্কুলে। গত এপ্রিল মাসে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ টেনে াণ হয়। তারপর গ্রামবাসীরা ওই স্কুলে তালা দেন। তারপর আবার এমন কান্ড হয় সোমবার স্কুলে মধ্যে। দেরি করে প্রধান শিক্ষক স্কুলে দুজন গ্রামবাসী তাঁকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে দেন।ঘটনাটি স্কুলের পড়ুয়াদের সামনেই ঘটে।
ঘটনা জানতে পেরে ওই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন রাজকুমার বিশ্বাস। তারপর পুলিশ এসে শিক্ষককে উদ্ধার করে, ঝালদা থানায় নিয়ে যায়। তারপর থানায় ওই দুই গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর শিক্ষকের বয়ান অনুসারে, চন্দ্র কুমার ও গুরুদাস প্রামাণিককে গ্রেফতার করেন পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য জেলে পুলিশের হেফাজতে পাঠায় পুরুলিয়া আদালত।
নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি নিলয় মুখোপাধ্যায় ও পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদকঃসুধন্য মাহাতো বলেন, এই রকম নিন্দাজনীয় কাজে যারা অভিযুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। শিক্ষক মহল থেকে বলা হয়, যদি কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তাহলে অন্যভাবেও প্রতিবাদ করা যেত। এই ভাবে আইনকে হাতে তুলে নেওয়া কখনোই উচিত হয়নি।
কিন্তু যখন এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বা অন্য শিক্ষকদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তখন তাঁরা মুখে কুলুপ আন্তে। এবং কিছু বলতে চায় না। গ্রামবাসীরাও চুপ রয়েছেন। অনেকে বলছেন সেই সময় গ্রামে উপস্থিত ছিলেন না। সেদিনের ঘটনা নিয়ে এই মুহূর্তে কেউই প্রকাশ্যে তাদের মুখ খুলতে চাইছে না।