আকাশছোঁয়া আলুর দাম, সাধারণের উদ্যেশে হিমঘর খালি করার নির্দেশ
আলুতে হাত দিতে পারছেনা সাধারণ মানুষ, তার তাগিদে ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে হিমঘর খালির নির্দেশ

পৃথা কাঞ্জিলাল : করোনার শুরু থেকে এমনিতেই পকেটে টান মধ্যবিত্তের। সেখানে দাঁড়িয়ে কারও চাকরি নেই তো কারও কমেছে মাসিক আয়ের মাত্রা। সেখানেও দুমুঠো খাওয়ার যোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সকলকে। কপালে ভাঁজ ফেলছে বাজারের দাম। শীতের সময় নানারকমের সবজি পাওয়া গেলেও সেই সবের দামই আকাশছোঁয়া। আলু (Potato) পেঁয়াজ (Onion)যা মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে সেখানেও হাত দিতে গেলে লাগছে ছ্যাঁকা।কয়েকদিন ধরে লাগাতার পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকায় গিয়ে থামলেও, আলুর দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন রকমের আলুর দাম এই মুহূর্তে ৪০ থেকে ৪৫-এর কোটায়। এরকম অবস্থায় এবার, আলু নিয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। আলুর দাম সীমার মধ্যে আনতে ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সব হিমঘর থেকে আলু বার করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, এখনও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে অন্তত ৭ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। তাই, এই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের (State Government)।
কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন , “বার বার অনুরোধের পরেও ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কথা ভাবলেন না। আলু অযথা মজুত রেখে দাম বাড়ানো হচ্ছে। তাই আর রাজ্য সরকার অপেক্ষায় রাজি নয়। রাজ্যের সব হিমঘর ৩০শে নভেম্বরের মধ্যেই খালি করতে হবে।” পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বলেই এ বার মজুতদারেরা সুযোগ পেয়ে গেলেন। এরপর বড় বড় সংস্থা সব আলু কিনে নেবে। সাধারণ ক্রেতাদের কথা কেউ ভাবেন না, বলেও মন্তব্য করেন কৃষি উপদেষ্টা।
প্রতি মাসে এ রাজ্যে ৫ লক্ষ টন আলু লাগে। ভিন রাজ্যে যায় ১ লক্ষ টন। সেই হিসেবেও যে পরিমাণ আলু এখনও রাজ্যের ৪৬২টি হিমঘরে মজুত আছে, তাতে আলুর দাম এতটা চড়ার কথা নয় বলেই মনে করছেন চাষিদের একাংশ। তাঁদের দাবি, জোগানের সঙ্গে চাহিদার সমতা রক্ষা করা হচ্ছে না কৌশলে। তাই আলুর দাম বাড়ছে।
বাজারের সাংঘাতিক এই পরিস্থিতি দেখে হিমঘর খালি করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন, হিমঘরে আলু মজুত করে রেখে সাধারণ খুচরো বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি করা যাবে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শুনতে নারাজ আলু ব্যবসায়ীরা। নবান্নের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের হিমঘরে এখনো সাত লক্ষ টন আলু রাখা হয়েছে।
বিগত কয়েকদিনে আলুর দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনের তরফ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করে কলকাতার বাজারগুলি পরিদর্শন করা হয়। সে সময় বাজার ঘুরে প্রতি কেজি আলুর দাম ৪০ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আলুর দামের এহেন বৃদ্ধিতে স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন রাজ্যবাসী। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশে সাধারণদের কোনো সুরাহা হচ্ছে কিনা তা জানা যাবে কিছুদিন পরেই।