চাপের মুখে যোগী প্রাশাসন, হাথরস ঘটনায় সিট গঠনের ঘোষণা যোগীর
দোষীদের কড়া শাস্তির জন্যে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী, ফার্স্ট ট্রাক আদালতে এই মামলার বিচার
দেবশ্রী কয়াল : আজ সারা দেশ জানাচ্ছে প্রতিবাদ উত্তরপ্রদেশের হাথরস ঘটনার। হাথরসে দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ ও মৃত্যুকাণ্ডে প্রবল চাপের মুখে এখন উত্তরপ্রদেশের যোগী প্রশাসন। তার মধ্যেই গতকাল রাতের ঘটনা এই ঘটনায় তুলেছে আরও অনেক গুলি প্রশ্ন। এরপরই দ্রুততার সাথে এই ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্তকারীদের রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। ফার্স্ট ট্রাক আদালতে এই মামলার বিচার হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে টুইটে বলা হয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব ভগবান স্বরূপের নেতৃত্বে সিট কাজ করবে। তিন সদস্যের সিটে বাকি দুই সদস্য হলেন ডিজি চন্দ্রপ্রকাশ ও কম্যাডেন্ট পিএসি আগ্রা পুণম।
এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘দোষীদের কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। ওই পাশবিককাণ্ডের জন্যে তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার জন্যে বলা হয়েছে। এই মামলার দ্রুত বিচারের জন্য ফার্স্ট ট্রাক আদালতে সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’ এছাড়া যোগী আদিত্যনাথ জানান, তাঁর সাথে প্রধানমন্ত্রীর ফোনে কথা হয়েছে। এই ঘটনায় অপরাধীরা যাতে কড়া থেকে অতি কড়া শাস্তি পায় তাঁর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত ১৪ই সেপ্টেম্বর গ্রামের খেতের দুই প্রান্তে কাজ করছিল তরুণী ও তাঁর মা। এমন সময় ৪ জন এসে তরুণীর মুখ ওড়না দিয়ে বেঁধে ওই গ্রামেই একটি পরিত্যক্ত জায়গায় তুলে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায় ওই হাসরতের দলিত তরুণীর উপর। তার হাত পা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, এমনকি তার জিহ্বা হাফ কেটে নেয়। নির্মমভাবে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে দেয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে জানানো হয় তাঁর কোমরের নিচের পুরো অংশ প্যারালাইসড হয়ে গেছে। এরপর টানা ১৫ দিন জীবন যুদ্ধের লড়াই চালিয়ে যায় নির্যাতিতা। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার মৃত্যু ঘটে নির্যাতিতা তরুণীর। এদিকে ঘটনার তিন দিনের মধ্যে মোট চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে তারা সমাজের উচ্চ বর্ণভুক্ত। আপাতত জেলেই রয়েছে তারা।
এদিকে তরুণীর দেহ সত্কারকে ঘিরে পুলিশের বিরুদ্ধে জোর খাটানোর অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। তরুণীর বাবা ও দাদার অভিযোগ, জোর করে রাত আড়াইটের সময় দেহ সত্কার করা হয়। মৃতার পরিবারের লোকেরা একবারের জন্যে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলেও পুলিশ তা শোনেনি। উল্টে মারধর করা হয়েছে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের। এমনকি তাঁদের এটিও বলা হয়েছে এতে নাকি তাদেরই ভুল ছিল। আর এরপরেই প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনের উপর। তারপরেই দ্রুত সিট গঠনের নির্দেশ দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।