
তিয়াসা মিত্র : নারীপাচার চক্র-এর ফাঁদে পরে অজান্তেই যৌন পল্লীতে ঢুকে পড়েছিল অনাথ নাবালিকা ঝুমা। বেশ কয়েক বছর সেই স্থানে জীবন কাটায় সে, তবে সমাজের মূল স্রোতের ফেরার ইচ্ছা ছিল অদম্য। আর সেই অদম্য ইচ্ছার ধিকি ধিকি আগুনে ঘি ঢালে সেই স্থানে খাবার সরবরাহ করতে আসা ছোটু। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ক্লাব-এর লোকেরা।
এই অসামান্য ঘটনার সাক্ষী, পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের এক যৌনপল্লি। বেশ কয়েক বছর আগে মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা বাবা-মা হারা নাবালিকা ঝুমা ঘোষকে যৌনপল্লিতে এনে ফেলেছিল নারী পাচার চক্র। গায়ের জোরে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। অনেক পথ ঘুরে শেষমেশ তাঁর ঠাঁই হয় মহিষাদলের যৌনপল্লিতে। এই যৌনপল্লিতেই খাবার সরবরাহ করতেন বাসুলিয়ার বাসিন্দা পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী ছোট্টু দাস। সেই সূত্রেই ঝুমা-ছোট্টুর আলাপ। মাস পাঁচেক আগে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দু’জন। প্রথম দিকে এই বিষয়ে চতুর বাড়িতে জানাজানি হতে ইতস্তত করে পরিবার এবং ঝুমকেও জনপল্লীতে বের করে আনাটাও সহজ ছিল না। তবে সমস্ত সমস্যা সমাধানের পর ক্লাবের ঘরেই এই প্রেমিক যুগলের বিয়ে হয়। ক্লাবের সম্পাদক মানসকুমার বেরা জানান, ‘‘যৌনপল্লির মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়ে ছোট্টু ক্লাবের কাছে দরবার করে। এমন মহৎ কাজে এগিয়ে আসতে একটুও দেরি করিনি। ছেলের বাড়ির পাশাপাশি যৌনপল্লিতে মেয়েটির বিয়ের ব্যাপারে সবাইকে রাজি করিয়েছি। এর পরেই যুগলের চার হাত এক হল।’’
ঝুমা বলেন, ” যৌনপল্লির অন্ধকার জীবন ছেড়ে কোনও দিন যে শ্বশুরবাড়ি যাব, ভাবতেই পারিনি। ছোট্টুর জেদ আর ক্লাবের সদস্যরা এগিয়ে না এলে সম্ভব হত না। সেই সঙ্গে সবাই আমাকে যে ভাবে আপন করে নিয়েছেন, আমি অভিভূত।’’ সত্যি এজন বোরো পর্দার ঘটনা সত্যি হয়ে সামনে এলো। এই বছরের ভালোবাসার এই মাসে এর থেকে বোরো উপহার কারোর কাছে আর কি বা হতে পারে।