রীতি মেনে কালীপুজো কিন্তু ভোগ থাকছে চাইনিজ খাবার
বাঙালি মতে কালিপুজো হলেও ভোগ প্রদানে থাকে বিশুদ্ধ চীনা খাবার, মাকে দেওয়া হয়ে চাউমিন চিলি চিকেন

পৃথা কাঞ্জিলাল : কলকাতার (Kolkata)এই মন্দিরে সারা বছরই মায়ের পুজো লেগে থাকে। তবে আজ দীপান্বিতা কালীপুজোর বিশেষ তিথিতে মাতৃ আরাধনা হয়ে আরো বেশি আড়ম্বর করে। দীপাবলির দিনে প্রায় ২০০০ মানুষ সমবেত হন এই মন্দির চত্বরে। কিন্তু অবাক হবেন শুনে যে ভোগ হিসেবে মা কে দেওয়া হয়ে থাকে একেবারে অন্যরকম খাবার। দেওয়া হয়ে চাউমিন, চপসি, চিলি চিকেনের মতো বিশুদ্ধ চীনা খাবার।
ট্যাঙরা (Tangra)অঞ্চলের এই এলাকা সু-পরিচিত চায়না টাউন (China Town) অঞ্চলটি শহরবাসীদের কাছে প্রিয় সস্তার পানশালা আর মন ভরানো লোভনীয় চাইনিজ রেস্তোঁরার সমাহার। অনেকেই হয়তো গিয়ে থাকবেন এই অঞ্চলে কিন্তু তাঁরা অনেকেই হয়তো জানেন না যে, এই চত্বরেই রয়েছে এক প্রাচীন কালী মন্দির! চাইনিজ সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটার সুযোগ পেয়েছে এই অঞ্চলকে ঘিরে। তারই পরিণামে এখানে গড়ে উঠেছে একটি কালী মন্দির। সেই মন্দির গড়ে ওঠার পেছনে রয়েছে বড়ো এক ইতিহাস।
প্রায় ৬০ বছর আগে এখানে একটি সিঁদুর মাখা কালো পাথরকে পুজো করা শুরু হয়। কিংবদন্তি অনুসারে, একবার একটি বছর দশেকের গুরুতর অসুস্থ শিশুকে এই পাথরটির কাছে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। চিকিত্সকরা নাকি চূড়ান্ত জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন বলে উপায়ান্তর না দেখে শিশুটির বাবা-মা পাথরটির সামনে শিশুটিকে রেখে বিরামহীন পূজার্চনা শুরু করেন। তারপরেই ঘটে মির্যাকল। ছেলেটি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে আর তারপর থেকেই এই ঠাকুরের খ্যাতি ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। পাথরটিকে কেন্দ্র করে গ্রানাইটের মন্দিরটি গড়ে ওঠে বছর ১২ আগে।
এখানে পুজো হয়ে বিশুদ্ধ হিন্দু মতে সাথে থাকে পুষ্পাঞ্জলি ও। কিন্তু ভোগ দেওয়ায় থাকে চাইনিজ সংস্কৃতির ছোঁয়া। কারণ ঠাকুরকে ভোগ দেওয়া হয় চাউমিন (Chowmin), চপসি (Chopsuey), চিলি চিকেনের (Chili Chicken) মতো চিনা খাবার। চাইনিজ ধুপকাঠির সুগন্ধে আমোদিত হয়ে ওঠে চতুর্দিক। সিটি অফ জয় সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র। সেই সাংস্কৃতিক মিলনেরই আর এক অনুপম দৃষ্টান্ত চাইনিজ কালীবাড়ি। আর এই দীপাবলি তে এমন এক পুজোর সাক্ষী থাকতে পেরে আশা করি আপনিও নিজেকে ভাগ্যবান মনে করবেন।