Education Opinion

মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়ন কোন পথে : ব্রাত্য বসু কে চিঠি দিলেন সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি

করোনা/ কোভিড অতিমারি পরিস্থিতিতে ২০২১ এর বাতিল হওয়া মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পর্কিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাব

নিজস্ব সংবাদদাতা : মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা (Ref. Date : 7 June 2021, Time : around 3:00 pm) অনুযায়ী ২০২১ সালের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। কোন পদ্ধতির মাধ্যমে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তাঁদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে। বিশেষ উল্লেখ্য যে শিক্ষক-শিক্ষিকা, যাঁরা প্রতিমুহূর্তে প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিখন-শিক্ষণ পদ্ধতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকেন, এক্ষেত্রে তাঁদের মতামত জানতে চাওয়া হয়নি। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন, যারা শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারকে নানান সময়ে তাদের সুপরামর্শ দিয়ে রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রের উজ্জ্বল চলমানতা বজায় রাখতে সবসময় সচেষ্ট, তাদেরও কোনো মতামত জানতে চাওয়া হয়নি।

শিক্ষক সংঘঠনের পক্ষে দাবি জানানো হয় যে , করোনা অতিমারির প্রথম পর্যায়ের শেষ ধাপে যখন রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশঃ নিম্নমুখী হচ্ছিল এবং নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস চালু ছিল, এমনকি ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখ থেকে যখন নবম-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বিদ্যালয় গুলি খুলে দেওয়া হলো, তখনও যদি পর্ষদ এবং সংসদের কর্তাব্যক্তিরা কোনরকম অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতেন তাহলে আজকে কিভাবে মূল্যায়ন হবে সেই প্রশ্ন ওঠার অবকাশই থাকতো না। এমনকি যখন দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল, তখন যারা সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, পর্ষদ এবং সংসদের আধিকারিকদের একাংশ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই সমস্ত ব্যক্তি তথা সংগঠনের বিরুদ্ধে এমনভাবে বিষোদগার করেছিলেন যে সরকারকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই যেন এই মন্তব্য গুলো করা হয়েছিল।তবে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বোঝা যাচ্ছে কতটা প্রাসঙ্গিক ছিল সেই দিনের সেই সময়ের ভাবনাগুলি।

কি প্রস্তাব দিলেন সরকারি বিদ্যালয়ের মাস্টারমশাইরা ?

মাধ্যমিক পরীক্ষা :
যে তথ্যগুলি স্মরণ রাখতে হবে :
১। বর্তমানে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষের সামগ্রিক ফলাফল CCE (Continuous Comprehensive Evaluation) তথা নিরবিচ্ছিন্ন সার্বিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
২। দীর্ঘদিন ধরে কেবল দশম শ্রেণির সমগ্র পাঠক্রমের ওপর নির্ভর করেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়।
৩। তাই নবম শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের সম্পূর্ণ বা আংশিক ফলাফলের ভিত্তিতে কখনোই একজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ফলাফল নির্ধারণ করা শিক্ষাবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়মেই সম্ভব নয়।
৪। এতদসত্ত্বেও যদি বলপূর্বক নবম শ্রেণির ফলাফলের একটি অংশকে মান্যতা দেওয়া হয় তা কেবল নিরবিচ্ছিন্ন সার্বিক মূল্যায়নের এবং শিক্ষাবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়মের যে পরিপন্থী হবে তাই নয়, পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফলও এর ফলে নিদারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে পরীক্ষার্থীর মানসিক স্থিরতা, সুস্থতা, এবং বিকাশের ওপর চরম আঘাত নেমে আসবে।এমনকি ফলাফল প্রকাশ-পরবর্তী সময়ে বিচারব্যবস্থার হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ বিরাট আশঙ্কাজনক অবস্থার মধ্যে পড়তে পারে।
৫। তাই নবম শ্রেণির ফলাফলের মান্যতা সংক্রান্ত সমস্ত ভাবনা বিসর্জন দিয়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের বিগত প্রায় ১৮ মাস ধরে একই পাঠক্রম অনুসরণ করে লেখাপড়া করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।এর জন্য এই কঠিন সময়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের জন্য তাদের বাড়িতে বসেই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।বিগত দিনগুলিতে যে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা আমরা আদৌ আয়োজন করতে পারিনি, এই অত্যন্ত কঠিন সময় পরীক্ষার্থীরা যখন শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিপন্নতার মধ্যে রয়েছে তখন সমস্ত দিক রক্ষা করেই সেই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের কাজ করতে হবে।

কিভাবে এই কাজ হবে তার একটি সংক্ষিপ্ত রূপরেখা ?

ক) মাধ্যমিকের সাতটি বিষয়ের প্রতিটি বিষয়ে ৪০ নম্বরের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন করা হোক।
খ) এই ৪০ নম্বরের অর্ধেক অর্থাৎ ২০ নম্বর, এক নম্বর পূর্ণমানের এমসিকিউ ও ভিএসএকিউ [Total 20 MCQ & VSAQ of 1 mark, 1×20 = 20] এবং বাকি ২০ নম্বর, তিন/ চার/ পাঁচ পূর্ণমানের এলএকিউ [LAQ/EAQ of 3/ 4 /5 marks, for example, {(3×2=6) + (4×1=4) + (5×2=10) = 20} or {4×5 = 20} or {5×4 = 20}] -এর মাধ্যমে করা করা হোক। বিশেষজ্ঞ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই প্রতিটি বিষয়ের এই ৪০ নম্বরের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের প্রশ্ন চূড়ান্ত করা হোক।
গ) পূর্বে ঘোষিত সূচি অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ, শিক্ষা দপ্তর, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল, স্কুলের ওয়েবসাইট ইত্যাদি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন পাঠানো হোক। যদি কোনো পরীক্ষার্থীর কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারের সুযোগ না থাকে তাহলে সে তার নিজের বিদ্যালয় থেকেও অভিভাবকের মাধ্যমে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন সংগ্রহের সুযোগ পাবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে ঐ নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রস্তুত পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন পত্র অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসে জমা দেবেন।

এর বিকল্প আরো সহজ ব্যবস্থায় পূর্বে ঘোষিত একটি নির্দিষ্ট দিনে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত সকল বিষয়ের প্রশ্ন দেওয়া হোক। অভিভাবকরা নির্দিষ্ট দিনে সাতটি বিষয়ের সমস্ত প্রশ্ন একইসঙ্গে সংগ্রহ করবেন এবং নির্দিষ্ট সময়/দিন পর (এক্ষেত্রে সময় সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন) বিষয় অনুযায়ী সমস্ত মূল্যায়ন পত্র গুলি (ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রস্তুত) বিদ্যালয়ে জমা দেবেন।
ঘ) বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ এই মূল্যায়ন পত্র গুলি মূল্যায়ন করবেন এবং প্রতিটি পরীক্ষার্থীর সাতটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ফলে প্রাপ্ত নম্বর পর্ষদ প্রেরিত একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকা পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদে প্রেরণ করবেন।এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পত্র গুলি অন্তত আগামী ছয় মাস বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
ঙ) এই ৪০ নম্বরের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে একজন পরীক্ষার্থী যত নম্বর পাবে, তার সঙ্গে সেই পরীক্ষার্থীর তৃতীয় প্রস্তুতিকালিন মূল্যায়নের ১০ নম্বর (যা ইতিমধ্যেই মধ্য শিক্ষা পর্ষদে সংরক্ষিত রয়েছে) যোগ করা হবে এবং এই যোগফলকে দ্বিগুণ করা হলেই পরীক্ষার্থীর সেই নির্দিষ্ট বিষয়ে ১০০
পূর্ণমানের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর পাওয়া যাবে। যথা :
40 (presently conducted Internal Evaluation) + 10 (already preserved number of Internal Formative Evaluation) x 2
i.e., (40+10) x 2
i.e., 50 x 2 = 100 এই ভাবে সাতটি বিষয়ের নম্বর একত্রিত করে পর্ষদ ২০২১ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থীর সামগ্রিক ফলাফল প্রকাশ করবে।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে :

যে তথ্যগুলি স্মরণে রাখা প্রয়োজন :
১। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে কেবল দ্বাদশ শ্রেণির সমগ্র পাঠক্রমের উপর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে।
২। একাদশ শ্রেণির জন্য পৃথক একটি বার্ষিক পরীক্ষা পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রস্তুতিকৃত প্রশ্নের মাধ্যমে করা হয়। সেই পরীক্ষায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে হোম সেন্টার আয়োজন করা হয় এবং পরীক্ষার্থীর খাতা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ মূল্যায়ন করেন।
৩। বিগত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা (লিখিত) অসম্পূর্ণ ছিল, এবং এই সমস্ত বিষয়গুলির লিখিত পরীক্ষা হয়নি :
Physics, Chemistry, Statistics,
Accountancy, Costing and Taxation,
Nutrition, Education, Economics, Geography, Sanskrit, Journalism & Mass Communication, Home Management and Family Resource Management.
৪। এর পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশ অনুসারে একাদশ শ্রেণির ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।
৫। বিগত শিক্ষাবর্ষে (২০২০-২০২১) বর্তমান দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা কোনো ধরনের পরীক্ষা তথা মূল্যায়নের সম্মুখীন হয়নি।এমনকি সংসদের

ঘোষণা অনুযায়ী তাদের নির্বাচনী পরীক্ষা তথা টেস্ট পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি বর্তমান পরিস্থিতি :

১।বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ কমিটি, মূল্যায়নের পদ্ধতি কি হবে সেই অনুসন্ধানের কাজে অগ্রসর হয়ে একাদশ শ্রেণির ফলাফলের একটি অংশকে মান্যতা দেওয়ার পক্ষে তাঁদের মতামত প্রকাশ করতে চলেছেন।
২।একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সমগ্র পাঠক্রম (with respect to Subject-Content, Difficulty level of content, Question type/pattern etc.) সম্পূর্ণ আলাদা। তাই বলপূর্বক একাদশের অসম্পূর্ণ লিখিত পরীক্ষার ফলাফলকে দ্বাদশ শ্রেণির/ উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রস্তুতির জন্য মান্যতা দেওয়া শিষ্টাচার বিরোধী শুধু নয়, শিক্ষাবিজ্ঞান এবং সামাজিক মান্যতার চোখেও তা গ্রহণযোগ্য নয়।
৩। আবার একাদশের যে সমস্ত পরীক্ষা গুলি কোভিড অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের জন্য বাতিল করা হয়েছিল, যদি সেই দিকে দৃষ্টিপাত করা হয় তাহলে একাদশের ফলাফলের আংশিক মান্যতা দ্বাদশে দেওয়া হলে এমন একটি পরিস্থিতির উদ্ভব হবে যে একজন পরীক্ষার্থী বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন (Physics, Chemistry, Statistics, Nutrition, Education, Economics, Geography, Accountancy, Costing and Taxation etc.) একাদশ এবং দ্বাদশ উভয় শ্রেণিতেই অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একটিও পরীক্ষার সম্মুখীন না হয়েই নির্দিষ্ট একটি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হবে।
৪।ফলে পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবনে চরম উপহাস, ব্যঙ্গক্তি এবং হীনমন্যতার স্বীকার হবে।বয়সন্ধিকালীন এই অভিঘাতে পরীক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়ের ফলে যদি তাদের আরও মারাত্মক কোনো ক্ষতি হয় তার দায় শিক্ষক সমাজ এবং বৃহত্তর সমাজ এড়িয়ে যেতে পারবে না।

এই অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সংক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাব :

১। ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির লিখিত পরীক্ষার পূর্ণমানের অর্ধেক অর্থাৎ ৭০/২ = ৩৫ এবং নন ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির লিখিত পরীক্ষার পূর্ণমানের অর্ধেক অর্থাৎ ৮০/২ = ৪০ নম্বর পূর্ণমানের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য ব্যবস্থা করা হোক।পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে থেকেই এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের উত্তরপত্র প্রস্তুত করবে। (বিশেষ দ্রষ্টব্য : বিগত বছরে সিবিএসসি বা আইএসসির মতো যদি এক বা একাধিক অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের করা হতো তাহলে আজকে এই সঙ্কট দেখা দিতো না।)

২।ল্যাব ভিত্তিক এবং নন ল্যাব ভিত্তিক উভয় ক্ষেত্রেই এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের মধ্যে ২০ নম্বর, এক নম্বর পূর্ণমানের এমসিকিউ এবং ভিএসএকিউর মাধ্যমে করা হোক [Total 20 MCQ & VSAQ of 1 mark, 1×20 = 20] এবং বাকি নম্বরের মূল্যায়নের জন্য এলএকিউর মাধ্যমে কয়েকটি প্রশ্ন প্রস্তুত করা হোক [Example : (For Lab Subjects : Total 3 LAQ of 5 marks, 5×3 = 15), (For Non Lab Subjects : Total 4 LAQ of 5 marks, 5×4 = 20)]।

অর্থাৎ ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন নিম্নরূপ হবে :

For Internal Evaluation (Lab Subjects) : Total Marks = 70/2 = 35 [(MCQ & VSAQ 20) + (LAQ 15)].
MCQ & VSAQ [20 questions of 1 mark each, i.e., 1×20=20]& LAQ [3 questions of 5 marks each, i.e., 5×3 = 15]নন ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন নিম্নরূপ হবে :
For Internal Evaluation (Non Lab Subjects) : Total Marks = 80/2 = 40 [(MCQ & VSAQ 20) + (LAQ 20)].
MCQ & VSAQ [20 questions of 1 mark each, i.e., 1×20=20]& LAQ [4 questions of 5 marks each, i.e., 5×4 = 20]

৩। এরপর প্রতি বিষয়ের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ফলে প্রাপ্ত নম্বরকে দ্বিগুণ করা হোক।
৪। এই দ্বিগুণ মানের সঙ্গে বিষয় অনুসারে (ল্যাব বা নন ল্যাব) প্র্যাকটিক্যালের ৩০ নম্বর অথবা প্রোজেক্টের ২০ নম্বর যোগ করলেই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর পাওয়া যাবে।
৫। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য পরীক্ষার্থীদের এই প্র্যাকটিক্যাল এবং প্রোজেক্টের নম্বরগুলি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছেই সংরক্ষিত রয়েছে।
অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাব অনুযায়ী ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির সামগ্রিক মূল্যায়ন নিম্নরূপ হবে :
[{(Internal Evaluation 35) x 2 = 70} + {Practical (30)}]i.e., Total Marks = 100
আবার নন ল্যাব ভিত্তিক বিষয়গুলির সামগ্রিক মূল্যায়ন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাব অনুযায়ী নিম্নরূপ হবে :
[{(Internal Evaluation 40) x 2 = 80} + {Project (20)}]i.e., Total Marks = 100

এই ভাবে প্রতিটি বিষয়ের নম্বর একত্রিত করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ২০২১ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফল প্রকাশ করবে।

৬। অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের প্রশ্নাবলী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রস্তাব :

ক) পূর্বে ঘোষিত সূচি অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, শিক্ষা দপ্তর, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল, স্কুলের ওয়েবসাইট ইত্যাদি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন পাঠানো হোক। যদি কোনো পরীক্ষার্থীর কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারের সুযোগ না থাকে তাহলে সে তার নিজের বিদ্যালয় থেকেও অভিভাবকের মাধ্যমে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন সংগ্রহের সুযোগ পাবে।এরপর নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে ঐ নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রস্তুত পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন পত্র অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসে জমা দেবেন।
এর বিকল্প আরো সহজ ব্যবস্থায় পূর্বে ঘোষিত একটি নির্দিষ্ট দিনে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিকৃত সকল বিষয়ের প্রশ্ন দেওয়া হোক। অভিভাবকরা নির্দিষ্ট দিনে সমস্ত বিষয়ের প্রশ্ন একইসঙ্গে সংগ্রহ করবেন এবং নির্দিষ্ট সময়/দিন পর (এক্ষেত্রে সময় সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন) বিষয় অনুযায়ী সমস্ত মূল্যায়ন পত্র গুলি (ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রস্তুত) বিদ্যালয়ে জমা দেবেন।
খ) বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বিষয় শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ এই মূল্যায়ন পত্র গুলি মূল্যায়ন করবেন এবং প্রতিটি পরীক্ষার্থীর ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ফলে প্রাপ্ত নম্বর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রেরিত একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে প্রেরণ করবেন।
গ) এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন-পত্র গুলি অন্তত আগামী ছয় মাস বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করা হবে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক কিমিটির দেওয়া প্রস্তাবে রাজ্য শিক্ষা দফতর কি বলবে তার অপেক্ষায় শিক্ষা মহল। তবে এই প্রস্তাবের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কিন্তু শিক্ষক সমিতি গুলিকে এক সাথে নিয়ে সিদ্ধান্তের পথে এগালে মান-কুল দুই- ই রক্ষা হবে।

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button
%d bloggers like this: